জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৫৫ , অনলাইন ভার্সন
জাতিসংঘের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতা হিসেবে অত্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। প্রধানত গত ২২ সেপ্টেম্বর দিনটি ছিল তার জন্য সবচেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ততম। সেদিন জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে তিনি ভাষণ দিয়েছেন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া নাগরিক সংবর্ধনায়ও বক্তব্য রেখেছেন। একই দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। এর বাইরেও তিনি অনেকগুলো সাইডলাইন ইভেন্টে যোগ দিয়েছেন, সভাপতিত্ব করেছেন। অনেক রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গেও একান্ত বৈঠক করেছেন।

জাতিসংঘে ভাষণ, নাগরিক সংবর্ধনা এবং সংবাদ সম্মেলনÑএ তিনটি কর্মসূচিই ছিল ট্র্যাডিশনাল। জাতিসংঘে যোগ দিলেই ভাষণ দিতে হয়। প্রবাসীদের হয়ে তার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্র শাখার পক্ষ থেকে নাগরিক সংবর্ধনা সভা এবং সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেন। তবে এগুলোতে প্রতিবছর যোগ দেওয়া, কথা বলা আর এ বছর যোগ দেওয়া, কথা বলার মধ্যে গুরুত্ব এবং তাৎপর্যের দিক থেকে অনেক পার্থক্য দর্শক-শ্রোতারা নির্ণয় করতে পেরেছেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত।

জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের সফর ছিল নির্বাচনমুখী। বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্ভবত আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। আগামী নভেম্বর মাসেই সেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন হয়তো শেষ পর্যন্ত হবে। তবে নির্বাচন নিয়ে অনেক টানাপোড়েন আছে। সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত সবচেয়ে বড় দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলÑবিএনপিসহ অন্যান্য দল নির্বাচনে যাবে কি না, তা নিয়ে অনেক বড় প্রশ্ন রয়েছে। তবে নির্বাচন হবেÑএ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন, সরকার, সরকারি দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং তার মিত্ররা অনঢ়। তাদের এক কথাÑসংবিধানমতে নির্বাচন হবে। সে নির্বাচন হবে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের যারা বিরোধী, তাদের বিরুদ্ধে এবং উন্নয়ন রক্ষা ও উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখাই হবে তাদের স্লোগান। বিরুদ্ধ পক্ষের স্লোগান ‘হাসিনা সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে’। এবং সেই নির্বাচন হবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নির্বাচন।

সুতরাং এ রকম এক ক্রান্তিকালে জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগদান অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। সরকার নিজেও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, কিন্তু বিরোধীরা বিশ্বাস করে না সরকারের সে কথা। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিদেশি নানা শক্তিও অত্যন্ত সক্রিয়। আগে যা কখনো দেখা যায়নি। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, রাশিয়ার তৎপরতা দৃশ্যমান। দেশের সাধারণ নাগরিকেরাও তা অনুভব করতে পারছেন। বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের তৎপরতায় কোনো রাখঢাক নেই। তাদের কথা, তারা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবেন না। তবে বাংলাদেশে তারা একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও সব দলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ নির্বাচন চান।

অন্যদিকে বিশ্ববাসী সবাই জানে, বাংলাদেশে শরণার্থী হয়ে মিয়ানমারের প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক অবস্থান করছে। মিয়ানমার সরকারের অগ্নিসন্ত্রাস, রক্তপাত, প্রাণহানি ও নির্মম অত্যাচারের শিকার হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে তারা। বাংলাদেশ তাদের মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু অর্ধযুগ পার হয়ে গেলেও তাদের একজনও এখন পর্যন্ত নিজ দেশে ফিরে যায়নি বলে প্রধানমন্ত্রী হতাশা ব্যক্ত করেছেন।

এ ছাড়া বৈশ্বিক স্বাস্থ্য রক্ষা, পরিবেশ ও জলবায়ুর বিপর্যয় এবং যুদ্ধবিগ্রহ, হানাহানি থেকে বিশ্বসভ্যতা, বিশ্বশান্তি রক্ষার জন্য জাতিসংঘের সব সদস্যরাষ্ট্রকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি বিশ্ব গড়ে তোলা এবং অন্যান্য বৈশ্বিক সংকট, যা সব দেশের উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে, সেসব থেকে বিশ্বকে রক্ষায় সম্মিলিত দায়িত্ব পালনের আহ্বানও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ আয়তনে ছোট কিন্তু জনসংখ্যায় অনেক বড়। তার চেয়েও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার কথার গুরুত্ব অনেক বেশি বলে অনেকেই মনে করেন। বিশ্ববাসীও যুদ্ধ-দারিদ্র্য-ক্ষুধামুক্ত একটি বিশ্ব দেখতে চান। এসব দিকে নজর দিয়ে জাতিসংঘ একটি কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হোকÑ৭৮তম অধিবেশনের এটাই যেন হয় ফলাফল।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041