আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্ভবত বিশ্বে বিরল এবং একমাত্র রাজনীতিবিদ যাকে বিশ্বের দুইটি শক্তিশালী রাষ্ট্র ভারত এবং চীন উভয়ই পছন্দ করে। যদিও ভারত এবং চীন বিশ্ব রাজনীতিতে পরস্পর বিরোধী অবস্থানে রয়েছে। শুধু পরস্পর বিরোধী অবস্থানই নয়, এই অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারের লড়াই তাদের মধ্যে প্রকাশ্য। এছাড়া ভারত এবং চীনের বিরোধ এখন কোনো নতুন বিষয় নয়। বরং দুই দেশের কূটনীতি এবং বাণিজ্য নীতি একে অন্যকে পরাস্থ বা ঘায়েল করবার জন্যই ব্যবহৃত হয়। অথচ এই অঞ্চলের ভূ-রাজনীতিতে যখন পশ্চিমাদের কঠোর দৃষ্টি রয়েছে সেই সময়টিতে সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থানে এবং উপমহাদেশের কর্তৃত্বে লড়াইয়ে থাকা চির শত্রু চীন-ভারত মাত্র একটি বিষয়ে একমত। তা হল বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য বতমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাখা। এই একটি বিষয়ে চীন-ভারত অবিশ্বাস্যভাবে অভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করছে। এই অভিন্ন অবস্থান তারা কোনো ধরনের রাখঢাক ছাড়াই ঘোষণা করেছে।
ইতিহাস সূত্রে চীন ঐতিহাসিক ভাবে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের যুদ্ধকালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সবচেয়ে পরম বন্ধু রাষ্ট্র ছিল ভারত। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় চীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের সমর্থন করে এবং বাংলাদেশের মুক্তি এবং বিজয়কে বাধাগ্রস্ত করার জন্যও সব ধরনের তৎপরতাই চালিয়েছিল। তাই ঐতিহাসিকভাবেও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগের সঙ্গে চীনের একটি দূরত্ব। তবে বিভিন্ন সময় ক্ষমতার পালাবদল পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, পঁচাত্তরের পর থেকেই চীন বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছে। খন্দকার মোশতাক নতুন সরকার গঠনের পরপরই চীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। এছাড়া বিএনপি যখনই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকেছে তখনই চীনের সঙ্গে দু’দেশের সম্পর্ক গভীর হয়েছে। কিন্তু বতমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ-চীন মধ্যকার যে সম্পক গড়ে উঠেছে তা শুধু ব্যতিক্রমই নয়; বরং বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নিয়ে পশ্চিমাদের রক্তচক্ষুকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে চীন। তার একটিই কারণ- গত এক যুগে বাংলাদেশ এবং চীনের অর্থনৈতিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশে অনেকগুলো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। তাছাড়া বাণিজ্যিক সম্পর্ক উত্তরোত্তর বাড়ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ নিয়ে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো যখন নানামুখী চাপ দিচ্ছে তখন চীন বর্তমান সরকারের পক্ষে প্রকাশ্য অবস্থান নিয়েছেন। একাধিকবার চীন আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে মার্কিন হস্তক্ষেপকে অগ্রহণযোগ্য হিসেবে বর্ণনা করেছে এবং দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপে সামিল হিসেবেও উল্লেখ করেছে। চীন মনে করে, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন তা অব্যাহত রাখা দরকার। চীন বাংলাদেশের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে চীনা বিনিয়োগ গুলো সুরক্ষিত রাখতে চায় বাণিজ্য কৌশলী দেশটি। আর এই কারণেই তারা মনে করে বাংলাদেশ যে অর্থনৈতিক অবস্থা এবং বাংলাদেশের যে অগ্রগতি উন্নতি এই এক্ষেত্রে বতমান প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের কোনো বিকল্প নেই। ক্ষমতার পট পরিবর্তন হলে বা অন্য কেউ ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশে চীনের বিশাল বিনিয়োগ ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে তারা মনে করে। পাশাপাশি বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন পর্যন্ত যেভাবে অব্যাহত রেখেছে সেটাতেও ভাটার টান হতে পারে। চীন এটি চায় না। এ সব কারণেই চীন শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প দেখছে না। দেশটি প্রকাশ্য অবস্থান গ্রহণ করেছেন শেখ হাসিনার পক্ষে ।
অন্যদিকে ভারত বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। একাত্তরে এই বন্ধুত্ব রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে চীনের মতো ভারতও শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প দেখছে না এবং গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা রক্ষার ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলাপ আলোচনা এবং কথাবার্তাও বলছেন। ভারতের হিসেবে নিকেশ অবশ্য অন্য। ভারত মনে করে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলেই ভারত বিচ্ছিন্নতাবাদী মুক্ত এবং বাংলাদেশের ভূখণ্ড বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে না। ভারত এটাও মনে করে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কটা শুধুমাত্রই বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক। এটি কোনভাবেই রাজনৈতিক নয়। বিশ্লেষকরাও মনে করেন, রাজনৈতিকভাবে শেখ হাসিনা কখনোই চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হবেন না। আর এরকম চিন্তা-ভাবনা এবং বিবেচনা থেকেই একটি বিষয় পরিস্কার যে ভারত ও চীন নামের শক্তিশালী রাষ্ট্র দুটি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের ধারাবাহিকতার পক্ষে। তারা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চায়।
ঠিকানা/এসআর/
ইতিহাস সূত্রে চীন ঐতিহাসিক ভাবে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের যুদ্ধকালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সবচেয়ে পরম বন্ধু রাষ্ট্র ছিল ভারত। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় চীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের সমর্থন করে এবং বাংলাদেশের মুক্তি এবং বিজয়কে বাধাগ্রস্ত করার জন্যও সব ধরনের তৎপরতাই চালিয়েছিল। তাই ঐতিহাসিকভাবেও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগের সঙ্গে চীনের একটি দূরত্ব। তবে বিভিন্ন সময় ক্ষমতার পালাবদল পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, পঁচাত্তরের পর থেকেই চীন বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছে। খন্দকার মোশতাক নতুন সরকার গঠনের পরপরই চীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। এছাড়া বিএনপি যখনই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকেছে তখনই চীনের সঙ্গে দু’দেশের সম্পর্ক গভীর হয়েছে। কিন্তু বতমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ-চীন মধ্যকার যে সম্পক গড়ে উঠেছে তা শুধু ব্যতিক্রমই নয়; বরং বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নিয়ে পশ্চিমাদের রক্তচক্ষুকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে চীন। তার একটিই কারণ- গত এক যুগে বাংলাদেশ এবং চীনের অর্থনৈতিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশে অনেকগুলো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। তাছাড়া বাণিজ্যিক সম্পর্ক উত্তরোত্তর বাড়ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ নিয়ে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো যখন নানামুখী চাপ দিচ্ছে তখন চীন বর্তমান সরকারের পক্ষে প্রকাশ্য অবস্থান নিয়েছেন। একাধিকবার চীন আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে মার্কিন হস্তক্ষেপকে অগ্রহণযোগ্য হিসেবে বর্ণনা করেছে এবং দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপে সামিল হিসেবেও উল্লেখ করেছে। চীন মনে করে, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন তা অব্যাহত রাখা দরকার। চীন বাংলাদেশের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে চীনা বিনিয়োগ গুলো সুরক্ষিত রাখতে চায় বাণিজ্য কৌশলী দেশটি। আর এই কারণেই তারা মনে করে বাংলাদেশ যে অর্থনৈতিক অবস্থা এবং বাংলাদেশের যে অগ্রগতি উন্নতি এই এক্ষেত্রে বতমান প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের কোনো বিকল্প নেই। ক্ষমতার পট পরিবর্তন হলে বা অন্য কেউ ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশে চীনের বিশাল বিনিয়োগ ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে তারা মনে করে। পাশাপাশি বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন পর্যন্ত যেভাবে অব্যাহত রেখেছে সেটাতেও ভাটার টান হতে পারে। চীন এটি চায় না। এ সব কারণেই চীন শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প দেখছে না। দেশটি প্রকাশ্য অবস্থান গ্রহণ করেছেন শেখ হাসিনার পক্ষে ।
অন্যদিকে ভারত বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। একাত্তরে এই বন্ধুত্ব রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে চীনের মতো ভারতও শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প দেখছে না এবং গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা রক্ষার ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলাপ আলোচনা এবং কথাবার্তাও বলছেন। ভারতের হিসেবে নিকেশ অবশ্য অন্য। ভারত মনে করে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলেই ভারত বিচ্ছিন্নতাবাদী মুক্ত এবং বাংলাদেশের ভূখণ্ড বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে না। ভারত এটাও মনে করে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কটা শুধুমাত্রই বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক। এটি কোনভাবেই রাজনৈতিক নয়। বিশ্লেষকরাও মনে করেন, রাজনৈতিকভাবে শেখ হাসিনা কখনোই চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হবেন না। আর এরকম চিন্তা-ভাবনা এবং বিবেচনা থেকেই একটি বিষয় পরিস্কার যে ভারত ও চীন নামের শক্তিশালী রাষ্ট্র দুটি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের ধারাবাহিকতার পক্ষে। তারা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চায়।
ঠিকানা/এসআর/