আসলেই দেশে হচ্ছেটা কী!

প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:২৯ , অনলাইন ভার্সন
দেশ (বাংলাদেশ) নিয়ে আসলে সবাই উদ্বিগ্ন। দেশে এবং দেশের বাইরে যেখানে যত বাঙালির বাস আছে-সব বাঙালিই দেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন। প্রবাসীদের সামনে শত সমস্যা, সংকট, বাধা-বিপর্যয় যাই থাক-সেসব সংকট নিয়েও দেশ ভাবনায় তারা উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকেন। দেশপ্রেম থেকেই এই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। যাদের দেশপ্রেমের অভাব থাকে, তাদের দেশ নিয়ে উদ্বেগও কম থাকে। 

দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ সব বাঙালির সেই দেশপ্রেম থেকেই দেশের বর্তমান অবস্থায় প্রশ্ন জাগে-দেশে হচ্ছেটা কী? দৃশ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে মানুষের যত না উদ্বেগ, তার অধিক উদ্বেগ নিয়ে প্রশ্নÑপর্দার অন্তরালে দেশে হচ্ছেটা কী? দেশের বর্তমানে যে অবস্থা, তাতে সবারই এই প্রশ্নে মনে উদ্বেগ সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক।

গত ৩০ আগস্ট সংখ্যা ঠিকানা’র প্রথম পৃষ্ঠায় মানুষের সেই উদ্বেগই প্রকাশ পেয়েছে ‘পর্দার আড়ালে হচ্ছেটা কী?’ শিরোনামের সংবাদটিতে। মানুষের মনের মধ্যে যেসব কথা তোলপাড় তুলছে, তা-ই উঠে এসেছে সংবাদটিতে। সামনে নির্বাচন। আর দেশে নির্বাচন এলেই যেন স্বাভাবিক পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়ে যায়। শান্ত পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠতে থাকে। বাড়তে থাকে মানুষের আতঙ্ক। ঘরের বাইরে গিয়ে ঘরে ফিরে না আসার ভয়। আগুনের ভয়। 

ভাঙচুরের ভয়। বার্ন ইউনিটে দগ্ধদের আর্তচিৎকার। সন্তানের জন্য মায়ের দুর্ভাবনা। স্বামীর জন্য স্ত্রীর দুশ্চিন্তা। আর পরিস্থিতি যত ঘোলাটে হতে থাকে, সেই ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে একটি গোষ্ঠী মেতে ওঠে। এ সময় বিদেশি নানা শক্তিও বসে থাকে না। পর্দার আড়ালে তারা কলকাঠি নাড়াতে শুরু করে। দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়ে পরিস্থিতিকে আরও ভীতিকর করে তোলে।

সেই পরিস্থিতিটিই উঠে এসেছে ‘পর্দার আড়ালে হচ্ছেটা কী?’ খবরটিতে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, যেটা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম দিকেই অনুষ্ঠিত হবে, সেই নির্বাচনের বিশদ নিয়েই নিশ্চয় পর্দার আড়ালে দৌড়ঝাঁপ হচ্ছে। সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক করার একটা তাগিদ আছে বিদেশি এবং বিরোধী পক্ষে। ক্ষমতাসীন সরকারি দল আওয়ামী লীগ সংবিধান মেনে নির্বাচন অনুষ্ঠানে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এ নিয়ে প্রকাশ্যে রাজপথ উত্তপ্ত হয়ে চলেছে। পর্দার আড়ালে যা হচ্ছে, তাতে রাজপথের উত্তাপ জুড়িয়ে একটি সর্বগ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ সুগম করবে, না আরও জটিল করে তুলবে-কে জানে। কেননা আড়ালের কর্মকাণ্ড নিয়ে মানুষের সংশয় বাড়ে।

‘পর্দার আড়ালে হচ্ছেটা কী?’ খবরের প্রথমেই বলা হয়েছে আশঙ্কার কথা। অতীত স্টাইলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ হ্যাটট্রিক সময় পার করছে। আর ঠিক সে সময় ভিনদেশিদের দ্বাদশ সংসদ নিয়ে মাথা ঘামানো অতীতের সব রেকর্ড ভাঙতে বসেছে। এবার প্রভাবশালী দেড় শতাধিক বিদেশি ব্যক্তিত্ব, যার মধ্যে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বিষয়ে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী রয়েছেন, যারা বাংলাদেশের নোবেল বিজয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূসের পক্ষে সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বরাবর একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তাদের মধ্যে আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের স্ত্রী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনও আছেন।

তাদের এই চিঠি নিয়েই এখন বাংলাদেশে চলছে তোলপাড়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা সরকারি তরফে একটি জবাব : সরকার কোনো প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে কোনো মামলা দায়ের করেনি। যা কিছু মামলা-মোকদ্দমা ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে হচ্ছে, তা যথাযথ কর্তৃপক্ষ, তার গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মচারী বা দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলা। এসব তর্ক-বিতর্কে এখন মনে হচ্ছে, এর আগের সব পদক্ষেপ ম্লান হয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিদেশে যা কিছু হচ্ছে, মানুষ মনে করছে এর নেতৃত্বে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিদেশিরা কেবল যে নির্বাচন নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে, তা নয়। দেশে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, সামাজিক অস্থিরতা, মানবাধিকার-সবকিছু নিয়েই এমনভাবে নাক গলাচ্ছে, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকেই অবমাননা করছে।

বিষয়টি দেশের স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ মোটেও ভালোভাবে নিচ্ছে না বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। কিন্তু দেশের অভ্যন্তরে এমন কিছু শক্তি কাজ করে, যাদের প্রকৃত রং চেনা খুব মুশকিল। কখন যে তারা তাদের অস্ত্র ঘুরিয়ে ধরে, কেউ বলতে পারে না। দেশের পরিস্থিতি যেভাবে ঘোলাটে হয়ে উঠছে, তাতে রাজনীতির বাইরে কিছু ঘটে গেলেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না। সে আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। 

মনে রাখতে হবে, আওয়ামী লীগ-বিএনপি সাদা চোখে রাজনীতির মাঠে প্রধান দুই দল হলেও পর্দার আড়ালে যে আর কেউ ঘুটি চালছে না, কে বলতে পারে!
রাজনৈতিক শক্তি যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করে কেবল গদির লড়াইয়ে মত্ত থাকে, তবে বানরের হাতে রুটি ভাগের দায়িত্ব পড়লে তার খেসারত কিন্তু রাজনীতিবিদদেরই দিতে হবে।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041