আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা, খোঁজ মিলছে না ডন-সামিরার

প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৪০ , অনলাইন ভার্সন
ঢালিউডের প্রয়াত নায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ২৯ বছর পর তার সাবেক স্ত্রী সামিরা হকসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন। ঢাকা শহরের ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দিয়েছেন। মামলাটিকে রমনা থানায় তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

এআসামিদের দেশত্যাগ ঠেকাতে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে তথ্য পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছেন রমনা থানার ওসি গোলাম ফারুক।

তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশে সালমান শাহ হত্যা মামলা নেওয়া হয়েছে।

এতে ১১ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি এবং অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা রুজুর পর তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, মামলার ১১ আসামির বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ দেশের বাইরে থাকতে পারেন।

দেশে থাকা আসামিদের শনাক্তে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মোবাইল ট্র্যাকিংসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আসামিরা যেন দেশত্যাগ করতে না পারেন, সেজন্য তাদের নামসহ তথ্য ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।

রমনা থানার ওসি গোলাম ফারুক বলেন, মামলার তদন্তে কোনো ধরনের চাপ নেই। শিগগিরই আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

এদিকে সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনাকে হত্যা মামলা হিসেবে নির্দেশ দেওয়ার পর গত চার দিন থেকে সামিরার কোনো খোঁজ মিলছে না। সামিরা যে ফোন নম্বর ব্যবহার করতেন, তা বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। সরাসরি এবং হোয়াটসঅ্যাপ—কোথাও তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে মামলায় অভিযুক্ত ডন হককে টানা কয়েক দিন ফোনকল ও খুদে বার্তা দেওয়ার পরও তিনি কোনো সাড়া দেননি।

গত ২১ অক্টোবর মধ্যরাতে রাজধানীর রমনা থানায় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা করা হয়। মামলার বাদী হলেন তার মামা আলমগীর কুমকুম।

এজাহারে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সালমান শাহর স্ত্রী সামিরা হককে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই, লতিফা হক লুসি, চলচ্চিত্রের খলনায়ক ডনসহ আরো কয়েকজনের নাম রয়েছে। মোট ১১ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে, পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকেও আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় সালমান শাহর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর শুরু হয় দীর্ঘ তদন্তযাত্রা, যা প্রায় তিন দশক ধরে অপমৃত্যু মামলা হিসেবেই চলতে থাকে। পরবর্তীসময় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন বলে মত দেয়।

তবে সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী শুরু থেকেই ওই প্রতিবেদন মানতে অস্বীকৃতি জানান এবং দাবি করে আসেন, তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে।

নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢালিউডে অভিষেক ঘটে সালমান শাহর। মাত্র চার বছরের চলচ্চিত্রজীবনে তিনি ২৭টি ছবিতে অভিনয় করে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি। দর্শক ও সমালোচকদের কাছে তিনি ছিলেন একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র। মৃত্যুর ২৯ বছর পরও তার নাম চিরস্মরণীয় থেকে গেছে। সম্প্রতি আদালতের নির্দেশ ও মামলার পুনরুজ্জীবনের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর তার ভক্তদের মধ্যে একধরনের উত্তেজনা ও আশার অনুভূতি দেখা দিয়েছে। সালমান শাহর সমর্থকেরা দীর্ঘদিন ধরে এ হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য রহস্যের সত্য উদ্‌ঘাটনের অপেক্ষায় ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে সালমানের মৃত্যুর দিনের ঘটনা সম্পর্কে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে। মৃত্যুর আগের দিন তিনি ‘প্রেম পিয়াসী’ ছবির ডাবিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। এফডিসিতে ছিল সেই ছবির ডাবিং। সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন নায়িকা শাবনূর। খুনসুটি ও আনন্দময় মুহূর্তে যেন অদৃশ্য কিছু অশান্তি অপেক্ষা করছিল।

ডাবিংয়ের দিনে সালমান শাহ তার বাবাকে ফোন করে বলেন তার স্ত্রী সামিরাকে সাউন্ড কমপ্লেক্সে আনার জন্য। ফোন পাওয়ার পরপরই বাবা সামিরাকে সঙ্গে নিয়ে এফডিসিতে পৌঁছান। শ্বশুরের সঙ্গে সাউন্ড কমপ্লেক্সে এসে সামিরা দেখতে পান, সালমান ও শাবনূর ডাবিং রুমে খুনসুটি করছেন। ওই সময়ের বেশ কিছু বিনোদন সাময়িকীতে শাবনূর ও সালমানকে নিয়ে একাধিক লেখালেখি হয়েছে, তাই শাবনূরের সঙ্গে সালমানকে খুনসুটি করতে দেখে রেগে যান সামিরা। সালমানের বাবা চলে যাওয়ার পর সামিরাও দ্রুত গাড়িতে ওঠেন। ‘অবস্থা জটিল’—বিষয়টি বুঝতে পেরে একই গাড়িতে ওঠেন সালমান শাহ ও চিত্রপরিচালক বাদল খন্দকার।

কিন্তু গাড়িতে বসে সালমানের সঙ্গে কথা বলেননি সামিরা। তাকে বোঝাতে থাকেন বাদল খন্দকার। গাড়ি এফডিসির গেট পর্যন্ত গেলে সালমান প্রধান ফটকের সামনে নেমে যান। তার সঙ্গে বাদল খন্দকারও নেমে পড়েন। এরপর সেখানে কিছুক্ষণ আড্ডা দেন। এরপর ডাবিং রুমে ফিরে গেলেও সেদিন আর ডাবিং হয়নি। রাত ১১টায় সালমানকে নিউ ইস্কাটন রোডের ফ্ল্যাটে পৌঁছে দেন বাদল খন্দকার। 

রাতের ঘটনাগুলো নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য প্রকাশ পেয়েছিল, তবে প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে তা ধরা পড়েনি। চলচ্চিত্র পরিচালক শাহ আলম জানান, শেষের দিকে সালমান মানসিক চাপে ছিলেন। পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কের জটিলতা এবং প্রযোজকদের সঙ্গে বোঝাপড়ার ঘাটতি তাঁকে চাপের মধ্যে রেখেছিল। কিছুদিন নিষিদ্ধ হয়েছিলেন সমিতিতে।

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041