মার্কিন ই-বর্জ্যের ‘গোপন সুনামি’ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়

প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:৪৫ , অনলাইন ভার্সন
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা ইলেকট্রনিক বর্জ্য বা ই-বর্জ্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় যে পরিমানে আসছে, সেটি এক ‘গোপন সুনামি’ বলে উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে।

পরিবেশ রক্ষা সংগঠন ‘বাসেল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক’ বা বিএএন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রে যেসব ইলেকট্রনিক ডিভাইস ফেলে দেওয়া হয় তা প্রতি মাসে লাখ লাখ টন করে এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানো হচ্ছে। ফলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক জায়গায় প্রচুর পরিমাণে ই-বর্জ্য জমা হচ্ছে, যা পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক ও এটি এক ‘গোপন সুনামি’ বলে উল্লেখ করেছে এবিসি নিউজ।

এ নিয়ে দুই-বছর ধরে অনুসন্ধান চালিয়েছে সিয়াটলভিত্তিক পরিবেশ রক্ষা সংগঠন বিএএন। তাদের খবর অনুসারে, কমপক্ষে দশটি মার্কিন কোম্পানির খোঁজ পেয়েছে তারা, যারা ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক পণ্য ভিয়েতনাম ও মলয়েশিয়ার মতো দেশে পাঠাচ্ছে।

এসব ই-বর্জ্যের মধ্যে রয়েছে ফেলে দেওয়া ফোন ও কম্পিউটার’সহ অনেক জিনিস। এসব ই-বর্জ্য পরিবেশের জন্য সমস্যা তৈরি করছে। কারণ এগুলোতে রয়েছে সীসা, ক্যাডমিয়াম ও পারদের মতো বিষাক্ত ধাতু।

সব মিলিয়ে, প্রতি মাসে ব্যবহৃত ই-বর্জ্যের প্রায় দুই হাজার কন্টেইনার যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাইরে পাঠানো হচ্ছে, যার মোট পরিমাণ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি সাইট এনগ্যাজেট।

এসব চালানের পেছনে থাকা বিভিন্ন কোম্পানিকে বলা হচ্ছে ‘ই-ওয়েস্ট ব্রোকার’। কারণ এসব কোম্পানি নিজে বর্জ্য রিসাইকেল করে না, তারা কেবল এটিকে অন্য কারও কাছে পাঠায়, যাতে তারা এসব ই-বর্জ্য উৎপাদন ঠেকাতে পারে।

প্রতিবেদনে থাকা কোম্পানির নামের মধ্যে রয়েছে ‘কর্পোরেট ই-ওয়েস্ট সলিউশনস’, ‘সেমসোটাই’, ‘ফার্স্ট আমেরিকা মেটাল কর্পোরেশন’ ও ‘পিপিএম রিসাইক্লিং’।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা দশটি কোম্পানি ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট একশ কোটি ডলারের বেশি ই-বর্জ্য পাঠিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে। পুরো ই-বর্জ্য শিল্পে এ বাণিজ্যের পরিমাণ মাসে মাসে ২০ কোটি ডলারের বেশি।

এ অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় ‘সেমসোটাই’ বলেছে, বর্জ্য রপ্তানি করে না তারা। কোম্পানিটি কেবল পুনরায় ব্যবহার করা যায় এমন উপযোগী অংশ নিয়ে কাজ করে। পরিবেশ রক্ষাকারী সংগঠনটিকে পক্ষপাতী হিসেবেও অভিযুক্ত করেছে কোম্পানিটি।

এদিকে, এ অভিযোগের বিষয়ে ‘পিপিএম রিসাইক্লিং’ বলেছে, ই-বর্জ্য চালানের পরিমাণ অতিরঞ্জিত করেছে পরিবেশ রক্ষাকারী সংগঠনটি। অন্যদিকে ওই প্রতিবেদনে নাম থাকা বেশিরভাগ কোম্পানি এ মুহূর্তে এনগ্যাজেটের মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ২০২৩ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে মালয়েশিয়ায় পাঠানো ই-বর্জ্য ছিল মার্কিন রপ্তানির মোটের প্রায় ৬ শতাংশ।

পরিবেশ সংগঠন বিএএনএর জিম পাকেট বলেছেন, “হঠাৎ করেই ই-বর্জ্যের জন্য এক ধরনের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে মালয়েশিয়া।” ই-বর্জ্যের এসব কনটেইনার ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতেও পাঠানো হয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, বিশ্বজুড়ে রিসাইক্লিং প্রোগ্রামের তুলনায় পাঁচ গুণ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে ই-বর্জ্য।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংস্থা বা আইটিইউ ও এর গবেষণা সংস্থা ‘ইউএনআইটএআর’-এর তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালে বিশ্বের মোট ৬ কোটি ২০ লাখ মেট্রিক টন ই-বর্জ্য তৈরি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই পরিমাণ ২০৩০ সালে ৮ কোটি ২০ লাখ মেট্রিক টনে পৌঁছাবে।

বাসেল কনভেনশনের আওতায় এ ধরনের ই-বর্জ্য আমদানি নিষিদ্ধ করেছে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ। এটি এমন এক আন্তর্জাতিক চুক্তি, যা বিষাক্ত বর্জ্যের বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে।

যুক্তরাষ্ট্র একমাত্র উন্নত দেশ, যারা এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি। যার মানে হচ্ছে, বাসেল কনভেনশনের নির্ধারিত কোনো নিয়ম মানতে বাধ্য নয় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ই-বর্জ্য উৎপাদক দেশ যুক্তরাষ্ট্র। প্রথম অবস্থানে রয়েছে চীন।

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041