ভোট আটকাতে নাশকতা ও মামলার প্রস্তুতি, গুম-খুনের বিচার বনাম নৌকার ভোটাধিকার

কারফিউ জারিতে ‘আওয়ামী উস্কানি’

প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:২০ , অনলাইন ভার্সন
‘১৮ মাসেই নির্বাচন নয়তো সেনাশাসন’-এই শিরোনামে সংবাদ ছেপেছিলো ‘ঠিকানা’।  নিউইয়র্কে ২০২৪-এর ২৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদকের সেই শীর্ষ সংবাদটি ফের আলোচনায়। পরিস্থিতি সেদিকেই গড়াচ্ছে বলে সচেতন মহলের ধারণা। তখন তথ্যসূত্র ছিলো সেনাপ্রধান জে. ওয়াকারের উক্তি। তিনি পরবর্তী ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন দাবি করেন। সেমতে ২০২৫-এর এপ্রিলের মধ্যে সময়কাল প্রস্তাবিত। কিন্তু ১৫ মাসের মধ্যেই নির্বাচনের ঘোষণা সরকারের। প্রস্তুতি মতে ফেব্রুয়ারিতেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ বসছে। কিন্তু উপর্যুপরি নাশকতার ঘটনায় তৈরি হয়েছে নতুন আশংকা।
ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো অঞ্চল পুড়ে ছাই। প্রাথমিকভাবে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি। এর আগে নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম ইপিজেডে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড। অনেকের ধারণা দিল্লি থেকে শেখ হাসিনা এগুলো করাচ্ছেন। কেউ কেউ ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর কথাও বলছেন। সরকার পক্ষ বলছে ‘জোর তদন্ত চলছে’। তবে নাশকতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। পুলিশের সব ইউনিটকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে। উল্লেখ্য, গতবছর ভারত বাংলাদেশের রপ্তানিখাতকে মহাবিপদে ফেলে। আকস্মিকভাবে ‘এয়ার কার্গো’ সুবিধা বাতিল করে। ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধাও পূর্বঘোষণা ছাড়াই বাতিল করে। এতে রপ্তানিনির্ভর বাংলাদেশের অর্থনীতি হুমকির মধ্যে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিকল্প ব্যবস্থা নেয় সরকার। তিনটি বিমানবন্দরে সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করে। ঢাকার শাহজালাল, চট্টগ্রামের আমানত শাহ, সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দর। রাতারাতি স্বয়ংসম্পূর্ণ এয়ার কার্গো সিস্টেম প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু শাহজালাল কার্গো পুড়ে যাওয়ায় সৃষ্টি হলো অচলাবস্থা। আমদানি-রপ্তানি খাতের সমূহ সম্ভাবনা হুমকির মুখে। ভারতের বেশ কিছু কোম্পানিও ক্ষতির মুখোমুখি। ৫০% মার্কিন শুল্কের হাত থেকে বাঁচতে তারা ঢাকামুখী হয়। অসংখ্য রপ্তানি অর্ডার বাংলাদেশে ট্রান্সফার করায়। ফলে ২০% শুল্কহারে আমেরিকায় পণ্য যাচ্ছিলো। গার্মেন্টস, ওষুধ, রাসায়নিক দ্রব্যের খাতসমূহ সর্বাধিক ক্ষতির মুখোমুখি। জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে তৈরি হয়েছে হতাশা, আশংকা। ছাত্রদের দল ‘এনসিপি’ বলছে- আমরা শতভাগ হতাশ। এতো নাশকতা, সহিংসতা, নির্বাচন হবে কি করে? ভালো নির্বাচন করার মতো সক্ষমতা সরকারের নেই। অক্টোবরেই ঐতিহাসিক ‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষরিত হয়েছে। সরকার পক্ষ বলছে নির্বাচন আয়োজনে আর অসুবিধা নেই। দেশের প্রধান ২৫টি দল স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু এ বিষয়ে সমালোচনাও বিস্তর। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল ৫২টি। কিন্তু অর্ধেকের বেশিই স্বাক্ষর করেনি। আবার ‘জুলাই আন্দোলনে’র সংগঠন ‘এনসিপি’ও নেই। আইনে পরিণত হয়নি- এমন অভিযোগে স্বাক্ষর করেনি। এবং স্বাক্ষরকারীদের তারা ‘মিরজাফর’ বলেছে। ফলে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা। সর্বশেষ তথ্যমতে, মামলার প্রস্তুতি চলছে। ওপরের কারণগুলো দেখিয়ে ‘জুলাই সনদ’ বাতিল করতে চায়। এবং তা হলে নির্বাচন এমনিতেই পিছিয়ে যাবে। যদিও ড. ইউনূস ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন সফলে বদ্ধপরিকর। 
নির্বাচন নিয়ে আরেকটি বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখে সরকার। বিশ্বখ্যাত ৬টি মানবাধিকার সংগঠন স্মারকলিপি দিয়েছে। ১২টি সুপারিশমালাও দিয়েছে ড. ইউনূস সমীপে। ৯নং প্রস্তাবে আ.লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যহার চেয়েছে। তাদের বক্তব্য গুম-খুনের বিচার হচ্ছে হোক। কিন্তু তাই বলে পুরো দলটি নিষিদ্ধ কেনো? নৌকা মার্কার ভেটারদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। 
দেশের পরিস্থিতিকে নাজুক বলছে আওয়ামী লীগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে কারফিউ-এর কথা বলছে। ‘ইন্ডিয়া টুডে’-তে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। তিনি বঙ্গবন্ধুর সহযোগী ব্যারিস্টার আমীরুলের কন্যা। সিনিয়র আইনজীবী মি. আমীরুল ইসলাম বঙ্গবন্ধু সরকারে প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। দ্বাদশ অর্থাৎ শেখ হাসিনার শেষ নির্বাচনে প্রার্থিতা চেয়েছিলেন। পিতা ও কন্যা- দু’জনই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কেনেন। কিন্তু দল তাদের হাতে ‘নৌকা’ প্রতীক দেয়নি। না দিলেও দুই ব্যারিস্টারই আওয়ামী রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। 
‘ইন্ডিয়া টুডে’-তে দেয়া সাক্ষাৎকার নিয়ে তুমুল আলোচনা চলমান। কারণ তাতে কারফিউ জারির আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন- রাষ্ট্রপতি চুপ্পু উদ্যোগ নিলেই হয়। সংবিধানের ১৪১ ধারা মোতাবেক জরুরি আইন জারি করা সম্ভব। উনি সেনাপ্রধান জে. ওয়াকারকে সঙ্গে নিলেই হবে। দেশের নাজুক পরিস্থিতিতে ওনারা পদক্ষেপ নিতেই পারেন। অতঃপর ধীরে ধীরে পরিস্থিতি শান্ত হলে নির্বাচন দেবেন।
ব্যারিস্টার তানিয়ার এমন প্রস্তাবনায় টনক নড়েছে সরকারের। এটিকে অসহায় আওয়ামী লীগের ‘রাজনৈতিক উস্কানি’ বলা হচ্ছে। 
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041