নিয়ম ভেঙে ডাকসু নেতাদের জন্য এসি বসাচ্ছেন ভিসি 

প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৫৭ , অনলাইন ভার্সন
গবেষণা ও আবাসন সংকটে ভুগছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঘাটতি বাজেটে চলছে প্রশাসন—এর মধ্যেই কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভবনে ৯ লাখ টাকায় ৯টি এসি বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নিয়ম ভেঙে অনুমোদন দেওয়া এই উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ নিজেই।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে রাজস্ব বাজেট থেকে এসি বসানোর অনুমোদন দেওয়া হয়। তখন কোষাধ্যক্ষ বিদেশে থাকায় তার দায়িত্বে ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ। পরে ১ সেপ্টেম্বর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর দেশে ফেরেন।

বিশ্ববিদ্যালয়টি বর্তমানে আর্থিক সংকটে আছে—গবেষণা সেন্টারগুলোর বরাদ্দ কমে গেছে, আবাসন ও শ্রেণিকক্ষ সংকট প্রকট, এমনকি পার্টটাইম শিক্ষার্থীদের সম্মানিও সময়মতো দেওয়া যাচ্ছে না। প্রশাসন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রথমে অনুমতি না দিলেও ডাকসুর ভিপি আবু সাদিক কায়েম বারবার ফোন করে চাপ দেন, পরে উপাচার্য পুনরায় ফাইল এনে অনুমোদন দেন।

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি ছুটিতে থাকা অবস্থায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কোন নিয়মে দেওয়া হয়েছে জানি না। আমি থাকলে অবশ্যই প্রশ্ন তুলতাম—এটা হওয়ার কথা না। সবকিছু জবাবদিহির মধ্যে থাকা উচিত।’
উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ বলেন, ‘আমি শুধু রুটিন দায়িত্ব হিসেবে ফাইলটি ফরওয়ার্ড করেছি, অনুমোদন করিনি। উপাচার্য অনুমোদন দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক সংকটের মধ্যে শিক্ষার উন্নয়ন হলে আমি উদার, কিন্তু “ফ্যান্সি” কিছু দিতে পারি না। শিক্ষার্থীর মৌলিক চাহিদাই যখন পূরণ হচ্ছে না, তখন এসি বসানো ঠিক নয়।’

সরকারি ক্রয় বিধিমালা অনুযায়ী জরুরি বা দুর্লভ পণ্যের ক্ষেত্রেই সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি (ডিপিএম) অনুসরণ করা যায়। কিন্তু এসি কেনার ক্ষেত্রে সেই প্রক্রিয়াও লঙ্ঘন হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের কর্মকর্তা (বিদ্যুৎ) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ডাকসু থেকে চাওয়ার পর প্রশাসন অনুমোদন দিয়েছে। “গ্রি” কোম্পানির মোট ৯টি এসি বসানো হচ্ছে। সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করায় দ্রুতই কাজ সম্পন্ন হবে।’

হিসাব পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, চলতি বাজেটে ডাকসুর জন্য মোট ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ আছে। এর মধ্যে ভবনের সংস্কার ও সৌন্দর্য বর্ধনে এখন পর্যন্ত ২৩ লাখ ৮৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রকৌশল দপ্তরের তথ্যমতে, ৯টি এসির জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ লাখ ২৩ হাজার টাকা, সাউন্ড সিস্টেমে ৭১ হাজার ও পানির ফিল্টারে ৩৮ হাজার ৫০০ টাকা।

এছাড়া কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে ভবনের আসবাব ও পর্দায় চার লাখ, নারী-পুরুষের পৃথক শৌচাগারে সাড়ে তিন লাখ, নতুন ওয়ার্ক স্টেশনে দুই লাখ ৭০ হাজার, কক্ষ সংস্কার ও রংয়ে দুই লাখ ৫২ হাজার, সাইনবোর্ড, ক্রোকারিজ ও অন্যান্য আসবাবে আরও ৮৩ হাজার টাকার কাজ চলছে—সবই ডিপিএম পদ্ধতিতে। ডাকসু ভবনে নামাজঘর নির্মাণের প্রস্তাবও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ডাকসুর কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এইচ এম মোশারফ হোসেন বলেন, ‘ডাকসু নেতারাই সরাসরি প্রশাসনের কাছে এসি চেয়েছেন। বরাদ্দ প্রশাসন দিয়েছে, আমার মাধ্যমে কিছু হয়নি।’

উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘আমি এটা খোঁজ নেব, কীভাবে অনুমোদন হয়েছে। যদি এসি বসানোর বিষয়ে কোনো প্রাধিকারের বিষয় থাকে, তা যাচাই করব।’

তবে ডাকসুর ভিপি আবু সাদিক কায়েম চাপ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ডাকসু ভবনে বসার অবস্থা ছিল না। শুধু দ্রুত কাজের পরিবেশ তৈরি করার কথা বলেছি, এসির বিষয়ে আলাদা কিছু বলিনি।’

জিএস এস এম ফরহাদ বলেন, ‘আমরা সংস্কারকাজে তদারকি করেছি, চাপ দিয়েছি। যদি এসি বিলাসিতা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় না দিক। ঘাটতি বাজেটের কারণে আমরা নিজ উদ্যোগে সিসিটিভি বসিয়েছি। প্রকৌশলীরা নতুন জিনিস কিনতে চাইলেও আমরা পুরোনো সংস্কার করে ব্যবহার করছি।’

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041