জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে জাতীয়তাবাদী সানায়ে তাকাইচি

প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:১৫ , অনলাইন ভার্সন
জীবনযাপনের বাড়তি খরচে দিশেহারা সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন ও ক্রমশ শক্তিশালী হতে থাকা বিরোধীদের মোকাবেলায় এলডিপি এবার ৬৪ বছর বয়সী, সাবেক এ অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রীকে তাদের নতুন কাণ্ডারি হিসেবে বেছে নিল।

জাপানের ক্ষমতাসীন দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) তাদের পরবর্তী প্রধান হিসেবে রক্ষণশীল জাতীয়তাবাদী সানায়ে তাকাইচিকে বেছে নিয়েছে।

শনিবার দলের নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার দৌড়ে জয়ী হওয়া তাকাইচি জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে থাকলেও তাকে নিয়ে বিনিয়োগকারী এবং চীনসহ অনেক প্রতিবেশীরই ব্যাপক অস্বস্তি রয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

জীবনযাপনের বাড়তি খরচে দিশেহারা সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন এবং আর্থিক প্রণোদনা ও কঠোর অভিবাসন নীতির প্রতিশ্রুতি দেওয়া বিরোধীদের মোকাবেলায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী প্রায় পুরো সময় জাপানের শাসনক্ষমতায় থাকা এলডিপি এবার ৬৪ বছর বয়সী তাকাইচির দ্বারস্থ হল।

 

এ নিয়ে এক বছরের মধ্যে দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা বেছে নিতে হল তাদের।

বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার উত্তরসূরী বেছে নিতে জাপানের পার্লামেন্টে আগামী ১৫ অক্টোবর ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি আসন ক্ষমতাসীন জোটের থাকায় তাকাইচিরই নতুন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।

দলের নেতা নির্বাচনের দৌড়ে থাকা ৫ প্রার্থীর মধ্যে তাকাইচিই ছিলেন একমাত্র নারী। তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় মূলত ৪৪ বছর বয়সী শিনজিরো কোইজুমির সঙ্গে।

 

কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাবেক অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রী তাকাইচিকেই দল তার নতুন কাণ্ডারি হিসেবে বেছে নিল। তাও এমন এক সময়ে, যখন তরুণ ভোটাররা এলডিপি থেকে মুখ ফিরিয়ে ডেমোক্রেটিক পার্টি ফর দ্য পিপল কিংবা অভিবাসনবিরোধী সেনসেইতোর দিকে ঝুঁকছে।

ইশিবা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালেই এলডিপি ও এর জোটসঙ্গীরা জাপানের পার্লামেন্টের উভয়কক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। সে ধাক্কাতেই এক বছর পার হওয়ার আগেই পদত্যাগ করতে হয় ইশিবাকে।

“সম্প্রতি আমি দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যাপক সমালোচনামুখর কণ্ঠ শুনছি, তারা বলছে, এলডিপি কী কী চায় আমরা জানি না। এই তাগাদা আমাকে তাড়িত করছে। আমি চাই মানুষের দৈনন্দিন জীবন নিয়ে উদ্বেগ ও ভবিষ্যৎকে আশায় পরিণত করতে,” দলের নেতৃত্ব নির্বাচনের দ্বিতীয় রাউন্ড ভোটের আগ বলেন তাকাইচি।

 

যুক্তরাজ্যের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারকে ‘হিরো’ হিসেবে দেখা তাকাইচি কোইজুমির তুলনায় অর্থনীতিতে আরও জোরাল পরিবর্তন আনারও ইঙ্গিত দেন।

আগ্রাসী ব্যয় ও সহজ মুদ্রানীতির মাধ্যমে অর্থনীতিকে চাঙা করার শিনজো আবের কৌশল ‘অবেনোমিক্সের’ দৃঢ় সমর্থক এ নারী অতীতে ব্যাংক অব জাপানের সুদের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন।

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ঋণগ্রস্ত দেশটি নতুন করে বিপুল পরিমাণ খরচ করার পথে হাঁটলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে পড়ে কিনা তা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এমনিতেই আশঙ্কা কাজ করছে।

তাকাইচি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হওয়া জাপানের হওয়া বিনিয়োগ চুক্তি পুনর্বিবেচনা করার সম্ভাবনার কথাও তুলেছেন। শুল্কের সাজার হাত থেকে বাঁচতে ওই চুক্তি করতে হয়েছিল টোকিওকে।

যুদ্ধে মৃতদের স্মরণে বানানো ইয়াসুকুনি মঠে তার নিয়মিত ভ্রমণ, শান্তিপূর্ণ সংবিধান বদলানোর প্রস্তাবনা জাপানের আগের সামরিক কর্তৃত্বপরায়ন সময়ের কথাও অনেককে মনে করিয়ে দিচ্ছে। তার এমন অবস্থান চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো প্রতিবেশীর সঙ্গে জাপানের সম্পর্ক আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে।

চলতি বছরই তাকাইচি বলেছিলেন, তিনি তাইওয়ানের সঙ্গে জাপানের ‘নিরাপত্তা জোটের মতো একটা কিছু’ দেখতে চান।

তাইওয়ান একসময় জাপানের দখলে ছিল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর চীন আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়। কিন্তু গৃহযুদ্ধের পর মূল ভূখণ্ডের কমিউনিস্ট শাসন থেকে তাইওয়ান বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

গত কয়েক দশক ধরে তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন বলে দাবি করে এলেও বেইজিং তাতে কান দিচ্ছে না। তারা দ্বীপটিকে মূল ‍ভূখণ্ডের সঙ্গে জুড়তে প্রয়োজনে বলপ্রয়োগেরও হুমকি দিয়ে রেখেছে।

এলডিপির নেতা হিসেবে তাকাইচির জয়কে স্বাগত জানিয়েছেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে।

“নতুন (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট তাকাইচির নেতৃত্বের অধীনে তাইওয়ান ও জাপান অর্থনৈতিক বাণিজ্য, নিরাপত্তা ও প্রযুক্তিগত সহায়তাসহ নানা খাতে অংশীদারিত্ব আরও গভীর করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে,” বলেছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে, ‘জাপান ফিরেছে’ এই মন্ত্র ছড়িয়ে দিতে পূর্বসূরীর তুলনায় বেশি বেশি বিদেশ সফরের অঙ্গীকার করেছেন তাকাইচি।

“কাজ ও জীবনের মধ্যে যে ভারসাম্য তা ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছি আমি, কেবল কাজ, কাজ আর কাজই করবো,” বিজয়ী হওয়ার পর ভাষণে বলেছেন এ নারী।

 

ঠিকানা/এসআর

M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041