দেবীদুর্গার বিদায়বেলায় ‘সিঁদুর খেলা’

প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:৫৭ , অনলাইন ভার্সন
শঙ্খনাদ-উলুধ্বনি, খোল-করতাল-ঢাকের বাদ্য, আর আরাধনা এবং সধবাদের সিঁদুর খেলার আচারে দেবীদুর্গাকে অশ্রুভেজা ভালোবাসায় বিদায় জানাচ্ছেন মর্ত্যের বাসিন্দারা। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে সকাল ৯টার পর থেকে দশমীর বিহিত পূজার মধ্য দিয়ে দশমীর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
পরে দর্পণ বিসর্জন ও ঘট বিসর্জন হয়। দুপুরে শুরু হয় সধবাদের সিঁদুর খেলা। এ সময় আনন্দ-উল্লাসে মাতেন দেবীর ভক্তরা। গানে গানে ‘বলো দুগ্গা মাই কি জয়’ স্লোগানে প্রকম্পিত হয় মন্দির প্রাঙ্গণ। দলবেঁধে নাচতে দেখা যায় মেয়েদের।
আনন্দ উৎসবের এই মুহূর্ত শেষ হবে বিকালে—প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। ফের দেবীকে মর্ত্যের পৃথিবীতে আমন্ত্রণ জানাতে অপেক্ষা করতে হবে এক বছর।
বিসর্জনের আগে মণ্ডপে মণ্ডপে সনাতন ধর্মের হিন্দুর নারীরা মেতে ওঠেন সিঁদুর খেলায়। সে সময় নাচে গানে আনন্দময়ীর বন্দনায় মাতিয়ে তোলেন তারা।
সদ্য বিয়ে করা জয়শ্রী পাল বলেন, “দুই মাস আগেই আমার বিয়ে হয়েছে। স্বামীর সঙ্গে এবারই প্রথম পূজা করছি।

“দেবীর কাছে স্বামীর জন্য মঙ্গল কামনা করেছি। আমার পরিবারসহ সবার জন্য মঙ্গল কামনা করেছি।”

সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ‘পিতৃগৃহ’ থেকে পুত্র-কন্যা নিয়ে দুর্গা ফিরে যাবেন কৈলাসে তার ‘স্বামীর’ ঘরে। একবছর পর নতুন শরতে আবার তিনি আসবেন এ ধরণীতে। তাই টানা পাঁচদিনের আনন্দ উৎসবের শেষ দিনে দেবীর এই বিদায়বেলায় ভক্তরা আপ্লুত হন বিষাদে।
ঢাকেশ্বরী মন্দিরের প্রধান পুরোহিত ধর্মদাশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পূজার রীতি অনুযায়ী বিজয়া দশমীর দিনে নারীরা সিঁদুর খেলার মধ্য দিয়ে আনন্দ করেন এবং মায়ের কাছ থেকে স্বামীর জন্য দীর্ঘায়ু কামনা করেন। সংসারের জন্য মঙ্গল কামনা করে থাকেন।”

দশমীতে দেবী প্রতিমার হাতে জরা, পান, শাপলা ডালা দিয়ে আরাধনা করা হয়। সকাল ১১টার দিকে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষে অঞ্জলী দেন পূজারী ও ভক্তরা।

এরপর থেকেই সিঁদুর খেলায় মাতেন ভক্তরা। সধবা নারীর সিঁদুর খেলার আচারে মুখরিত হয়ে ওঠে মণ্ডপ। স্বামীরা তাদের স্ত্রীর কপালে সিঁদুর মেখে দেন। নারীরা স্বামী এবং সংসারের কল্যাণের জন্য দুর্গা মায়ের কাছে প্রার্থনা করেন।

মন্দিরের প্রবেশ গেইটে দুপুরে দেখা যায় নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা। বেলা ১২টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিক আলম স্ত্রীকে নিয়ে এসেছিলেন ঢাকেশ্বরী মন্দিরে।

এ সময় তিনি পূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, “এবার দেশজুড়ে পূজা নির্বিঘ্নে করার জন্য সরকার তৎপর ছিল। সনাতন ধর্মের লোকজন পূজার আনন্দে মেতেছেন।”

কলাবাগান থেকে স্ত্রীকে নিয়ে মণ্ডপে এসেছেন অমলেন্দু বিশ্বাস।
তিনি বলেন, “দশমীতে মা আমাদের ছেড়ে কৈলাশে ফিরে যান, ফলে দিনটি আমাদের জন্য বেদনার। আবার দেবী দুর্গা মহিষাসুরকে পরাজিত করে বিজয়ী হয়েছেন।

“এজন্য আজ শুভ বিজয়া। দিনটিতে ভক্তরা আনন্দ করি। এবার পূজায় অনেক আনন্দ করেছি।"
সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, মহালয়ার দিন ‘কন্যারূপে’ ধরায় আসেন দশভূজা দেবী দুর্গা; বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তাকে এক বছরের জন্য বিদায় জানানো হয়। তার এই ‘আগমন ও প্রস্থানের’ মাঝে আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী থেকে দশমী তিথি পর্যন্ত পাঁচ দিন চলে দুর্গোৎসব।

ঢাকেশ্বরী মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিজয়া দশমীতে বিকাল ৩টায় শোভাযাত্রা বের হবে। পরে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি হবে এবারের শারদীয় দুর্গোৎসবের।
এবারের পূজায় কেবল ঢাকাতে গতবারের তুলনায় ৭টি বেড়ে মোট ২৫৯টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর সারাদেশে মোট মণ্ডপের সংখ্যা ৩৩ হাজার ৩৫৫টি, যা গতবারের তুলনায় প্রায় হাজারখানেক বেশি।

নিরাপত্তার খাতিরে সন্ধ্যার আগেই প্রতিমা বিসর্জনের নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041