ত্রয়োদশ নির্বাচনে বড় ফ্যাক্টর হতে পারে প্রবাসী ভোট

প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:০৪ , অনলাইন ভার্সন
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৫০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশিকে ভোটার বানাতে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি সূত্রে জানা গেছে, সংসদ নির্বাচনে প্রবাসীরা এবারই প্রথম ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন। প্রবাসীদের ভোট নিশ্চিত করতে বিভিন্ন দেশে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন ইসির কর্মকর্তারা। এ লক্ষ্যে ৪০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে প্রবাসীরা দেশের ভোটারদের চেয়ে অন্তত দুই সপ্তাহ আগে ভোট দেবেন। তবে সেই ভোট কাকে দিলেন, তা প্রকাশ করতে পারবেন না মর্মে অঙ্গীকার করতে হবে।
নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিপুল সংখ্যক প্রবাসী ভোটার পছন্দের সংসদ সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে কাজ করতে পারেন। দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনে প্রবাসী ভোটাররা পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দেবেন। সেই প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করতে প্রবাস থেকেই তাদের পরিবারের সদস্যদের ভোট দিতে বলবেন। এ ক্ষেত্রে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে বড় ফ্যাক্ট হতে পারে প্রবাসী ভোট।
নির্বাচন কমিশন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনশক্তি ব্যুরো, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি-বায়রাসহ বিভিন্ন সংস্থার তথ্য বলছে, ৪০টি দেশে বাংলাদেশি প্রবাসীদের আধিক্য রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমান, কাতার, বাহরাইন, লেবানন, জর্ডান, লিবিয়া, সুদান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য, ইতালি, হংকং, মিসর, ব্রুনাই, মরিশাস, ইরাক, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, গ্রিস, স্পেন, জার্মানি, দক্ষিণ আফ্রিকা, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, ব্রাজিল, চীন, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, নিউজিল্যান্ড, রাশিয়া, তুরস্ক ও সাইপ্রাস। এসব দেশে ১ কোটি ৪০ লাখ ৪৬ হাজার ৫৩৪ জন প্রবাসী রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশের মতো ভোটারের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) আছে বলে ধারণা করছে ইসি। যাদের মধ্যে ৫০ শতাংশ প্রবাসী ভোটারের সাড়া পাবে বলে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রবাসীদের নিয়ে কাজ করে এমন সংস্থাগুলোর সূত্রে জানা গেছে, সারা বিশ্বে ১ কোটি ৪০ লাখের মতো প্রবাসী বাংলাদেশি আছেন। তাদের মধ্যে অন্তত ৭০ শতাংশ বাংলাদেশির এনআইডি আছে। সেই হিসাবে ৫০ লাখের মতো ভোটার এবার ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন। যদিও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নির্বাচনে প্রবাসী ভোটের হার ২০ থেকে ২২ শতাংশের মতো হয়।
প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নিয়ে জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রথম ভাষণেই প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ সৃষ্টির কথা বলেছিলেন। নির্বাচন কমিশনও সেই মোতাবেক প্রস্তুতি নেয়। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে কমিশন। বৈঠকে তিনটি পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হলেও রাজনৈতিক দলগুলো পোস্টাল ব্যালটে আগ্রহ দেখায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আইটি বেইজড পোস্টাল ব্যালটে ভোট-ব্যবস্থার দিকে এগোচ্ছে সংস্থাটি। এ অবস্থায় এরই মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা প্রবাসী ভোটারদের গুরুত্ব দেওয়া শুরু করেছেন।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, আগামী নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার অ্যাপ (পোস্টাল ভোট বিডি) উদ্বোধন হবে। এতে প্রবাসীরা নিবন্ধন করতে সময় পাবেন ১০ দিন। তিনি বলেন, দেশের বাইরে থেকে ভোট দেওয়ার জন্য আউট অব কান্ট্রি ভোটিং রেজিস্ট্রেশনের জন্য আমরা একটি অ্যাপ ডেভেলপ করছি। সবশেষে আমরা চেষ্টা করব আরও তিন থেকে সাত দিন সময় রাখার, যাতে যারা বাদ পড়া ভোটার আছেন, তারা সুনির্দিষ্ট সময়ে যেন রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারেন।
প্রবাসীরা যেভাবে ভোট দেবেন : অনলাইনে নিবন্ধনের মাধ্যমে প্রবাসীরা কীভাবে ভোট দেবেন, সে পদ্ধতি জানিয়েছে ইসি। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে এমন দুটি নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে। নিবন্ধনের জন্য প্রবাসীকে গুগল প্লে স্টোর অথবা আইফোনের অ্যাপ স্টোর থেকে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে। এরপর লগইন করে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। মোবাইল নম্বর প্রবেশ করালে ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) আসবে, তা দিয়ে মোবাইল নম্বর নিশ্চিত করবেন। এরপর নিজের ছবি তোলে দিতে হবে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি হাতে নিয়ে সেলফি তুলতে হবে)। পরবর্তীতে দিতে হবে এনআইডির ছবিও। এরপর পাসপোর্ট থাকলে তার ছবি দিতে হবে। সবশেষে বিদেশে অবস্থানরত বর্তমান ঠিকানার তথ্য দিলেই কাজ শেষ। 
সিস্টেম থেকে সব তথ্য যাচাই করে সত্যতা মিললে ‘আপনি এখন নিবন্ধিত’ এমন লেখা প্রদর্শিত হবে অ্যাপে। এরপর অপেক্ষা কেবল ব্যালট পেপারের জন্য। নিবন্ধন সম্পন্ন হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ভোটারের তথ্য চলে যাবে। সে অনুযায়ী হবে পৃথক ভোটার তালিকা। এরপর ইসি কর্তৃক নির্ধারিত সময়ে সংশ্লিষ্ট ভোটারের বর্তমান ঠিকানায় মার্কা বা প্রতীক সংবলিত ব্যালট তিনটি খামে পাঠিয়ে দেবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। একটি খামের ভেতর আরও দুটি খাম থাকবে। যার একটিতে থাকবে ব্যালট পেপার। আসন নম্বর ও রিটার্নিং কর্মকর্তার ঠিকানা উল্লেখ করে থাকবে আরেকটি খাম। ভোটার ব্যালট পেপার বের করে ভোট দিয়ে দ্বিতীয় খামটিতে ভরে নিকটস্থ পোস্ট বক্সে জমা দিলেই কাজ শেষ।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041