ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ১১ অভিযোগ ছাত্রদল প্যানেলের

প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:১৭ , অনলাইন ভার্সন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে অনিয়ম এবং অসঙ্গতির বিষয়ে ১১টি অভিযোগ তুলে ধরেছেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান। তিনি বলেছেন, বিষয়গুলো নিয়ে প্রশাসন অবস্থান স্পষ্ট না করলে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়ার সুযোগ নেই। ২২ সেপ্টেস্বর (সোমবার) সকাল সাড়ে ১১টায় মধুর ক্যান্টিনে একটি সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগগুলো পড়ে শোনান আবিদুল ইসলাম। 

তিনি বলেন, অভিযোগ নিয়ে একাধিকভাবে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও প্রশাসন ব্যবস্থা না নিয়ে কালক্ষেপণ করছে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে ২৮টি পদের ২৫টিতেই ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে। নির্বাচনের দিন দুপুর থেকে অন্যান্য প্যানেলের প্রার্থীরা নির্বাচনে নানা অনিয়ম নিয়ে অভিযোগ করে আসছিলেন।

আবিদুল ইসলাম খান বলেন, নানান অনিয়ম ও অসঙ্গতির বিষয়ে বারবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করে সমাধানের অনুরোধ করলেও তারা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেননি। বরং ইচ্ছাকৃতভাবে কালক্ষেপণ করে চলেছে। যার ফলে ডাকসু নির্বাচন ইতিহাসের পাতায় একটি নেতিবাচক প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন হিসেবে ঠাঁই পাবার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে আমরা মনে করি।

তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ না পর্যন্ত প্রশাসন বিষয়গুলো নিয়ে তার অবস্থান ক্লিয়ার করতে না পারবে, এই নির্বাচনকে আমাদের জায়গা থেকে বৈধতা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আশা প্রকাশ করেন, তারা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার পথে ফিরে এসে ডাকসু নির্বাচনে অনিয়ম এবং অসঙ্গতিগুলোর বিষয়ে যথাযথ তদন্ত করে সকলের সামনে সত্য উন্মোচন করবে।

এ সময় প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী তানভীর বারী হামিম, সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদসহ অন্যান্য প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

তাদের অভিযোগের মধ্যে রয়েছে-

১. ভোটারকে নির্দিষ্ট প্যানেলের পক্ষে ভোট দেওয়া ব্যালট পেপার সরবরাহ করা এবং ভোটার কেন্দ্রে যাওয়ার পূর্বে ভোটার তালিকায় উপস্থিতির স্বাক্ষর দিয়ে দেওয়াসহ একাধিক জালিয়াতি নিয়ে ভোটকেন্দ্রের সিসিটিভি ফুটেজ চেয়ে আবেদন করা হলেও প্রশাসন কালক্ষেপণ করছে।

২. নির্বাচনে ব্যবহৃত ব্যালট পেপারে ক্রমিক নম্বর ছিল না। ছাপানো ব্যালট পেপারের সংখ্যা, ভোটকেন্দ্রে সরবরাহকৃত, ব্যবহৃত ও বাতিল হওয়া ব্যালট পেপারের সংখ্যা এবং ভোটগ্রহণ শেষে ফেরত দেওয়া ব্যালট পেপারের সংখ্যা কোথাও প্রকাশ করা হয়নি। এমনকি বারবার জানতে চাওয়ার পরেও এ সংক্রান্ত তথ্যাদি কেন্দ্রে দায়িত্বরত পোলিং এজেন্টদেরকেও জানানো হয়নি।

৩. নির্বাচনে ব্যবহৃত ব্যালট পেপার কোন প্রেস থেকে ছাপানো হয়েছে সে বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। গত ৭ সেপ্টেম্বর নীলক্ষেতের গাউসুল আজম মার্কেটের একটি ছাপাখানায় বিপুল সংখ্যক ব্যালট পেপার অরক্ষিত অবস্থায় পাওয়া গেছে।

৪. ভোট গণনার বিষয়ে ইতোমধ্যেই নানান অভিযোগ ও বিতর্ক সামনে এসেছে, কিন্তু একটি কার্যকর গণনা প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা গেলে এ ধরনের বিতর্ক তৈরি হতো না।

৫. ভোটের আগের মধ্যরাতে প্রার্থীদের প্রস্তাবিত বিভিন্ন কেন্দ্রের পোলিং এজেন্টদের বাদ দেওয়া হয়। কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পোলিং এজেন্টদের বাছাই করা হয়েছে তা প্রকাশ করা হয়নি।

৬. ভোটগ্রহণের আগে পোলিং এজেন্টদেরকে আইডি কার্ড সরবরাহ করার কথা থাকলেও তা যথাসময়ে সরবরাহ করা হয়নি। যে কারণে অনেক পোলিং এজেন্ট যথাসময়ে ভোটকেন্দ্রের সম্মুখে উপস্থিত হয়েও ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেননি। ফলে পোলিং এজেন্টের অনুপস্থিতিতে পক্ষপাতদুষ্ট অবস্থায়ই ভোটগ্রহণ শুরু হয়।

৭. একটি নির্দিষ্ট প্যানেল বাদে সকল প্রার্থী ও প্যানেলকে জানানো হয়েছে যে ৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। কিন্তু ভোটের দিন দেখা যায় যে, ৮টি ভোটিং এরিয়ায় মোট ১৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে। যে কারণে ওই নির্দিষ্ট প্যানেল ব্যতীত আর কোনো প্রার্থী বা প্যানেল ১৮টি কেন্দ্র অনুসারে পোলিং এজেন্ট নিয়োগ করতে পারেনি।

৮. পোলিং এজেন্ট চিফ রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক পোলিং এজেন্ট নিয়োগের কথা থাকলেও তাদেরকে ঢাবি প্রশাসন কর্তৃক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ পোলিং অফিসার সাংবাদিকদের ভুল তথ্য দিয়ে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ভুয়া অভিযোগ তুলে নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছেন।

৯. নির্বাচনের দিন ক্যাম্পাসের প্রবেশমুখে নিরাপত্তার দায়িত্বরত কতিপয় বিএনসিসি, রোভার স্কাউট ও গার্লস গাইড সদস্যের সহায়তায় একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে ক্যাম্পাসে অবাধে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একাধিক অভিযোগ এসেছে এবং একাধিক বহিরাগত শিবিরকর্মীকে শিক্ষার্থীরা হাতেনাতে ধরে প্রক্টর অফিসে সোপর্দ করেছে।

১০. ভোট গণনার সময়ে পোলিং এজেন্টদেরকে কার্যত নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করতে বাধ্য করা হয়েছে। ভোট গণনা প্রক্রিয়ার সঙ্গে পোলিং এজেন্টদেরকে যথাযথভাবে যুক্ত না করায় এবং গণনাপ্রক্রিয়ায় ত্রুটি থাকার প্রতিবাদে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সকল পোলিং এজেন্টসহ অধিকাংশ প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট রেজাল্ট শিটে স্বাক্ষর না করেই ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করেন।

১১. অধিকাংশ বুথে নির্বাচনের দিন বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে মার্কার পেন না থাকায় ভোটারদেরকে বলপেন দিয়েই ব্যালট পেপারে ক্রস চিহ্ন দিতে হয়েছে। বলপেনে ক্রস চিহ্ন দেওয়া ভোটগুলো ওএমআর মেশিন সঠিকভাবে রিড করতে পারেনি বলে অনেক ভোট গণনা করা হয়নি বলে পোলিং এজেন্টরা লক্ষ্য করেছেন। এ ছাড়া ভোটার চিহ্নিত করার জন্য আঙ্গুলে যে মার্কারের কালি ব্যবহার করা হয়েছে সেটি অস্থায়ী কালি হওয়ার কারণে একই ব্যক্তি একাধিক ভোট দিয়েছে কিনা সে বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মনে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

ঠিকানা/এএস 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041