ভারত-চীনের কপালে চিন্তার ভাঁজ

এইচ-১বি ভিসার ফি বছরে ১ লাখ ডলার করলেন ট্রাম্প

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২৩ , অনলাইন ভার্সন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন এক প্রোক্লেমেশন জারি করে এইচ-১বি কর্মী ভিসার ফি বছরে ১ লাখ ডলারে উন্নীত করেছেন। ১৯ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) সই করা এই নির্দেশনার ফলে বিদেশি দক্ষ কর্মী নিয়োগে সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি খাত বড় ধাক্কা খেতে পারে। বিশেষ করে ভারত ও চীনের নাগরিকরা এ ভিসার সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ার আইটি পেশাজীবীদের ওপরও এর সরাসরি প্রভাব পড়বে।

এইচ-১বি ভিসা যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন কর্মী আনার জন্য দেওয়া হয়। এখন থেকে এই ভিসায় বিদেশি কর্মী আনতে চাইলে কোম্পানিগুলোকে প্রতি বছর প্রতিটি ভিসার জন্য ১ লাখ ডলার দিতে হবে। মার্কিন বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক বলেছেন, ‘সব বড় কোম্পানি এই পরিকল্পনায় রাজি আছে। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি।’ তার ভাষায়, আগে প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশি কর্মী এনে প্রশিক্ষণ দিত, এখন থেকে বাধ্য হয়ে দেশীয় তরুণদের প্রশিক্ষণ ও নিয়োগ দিতে হবে।

হোয়াইট হাউস স্টাফ সেক্রেটারি উইল শার্ফ বলেন, এই প্রোক্লেমেশন নিশ্চিত করবে যে কোম্পানিগুলো কেবলমাত্র খুবই দক্ষ এবং মার্কিন কর্মীদের দ্বারা প্রতিস্থাপনযোগ্য নয়—এমন বিদেশি কর্মীকেই আনতে পারবে। তিনি অভিযোগ করেন, সবচেয়ে বেশি অপব্যবহৃত ভিসা ব্যবস্থার একটি হলো এইচ-১বি।

ট্রাম্প প্রশাসন জানায়, কিছু কোম্পানি এ ভিসাকে ব্যবহার করে মার্কিন কর্মীদের মজুরি কমিয়ে দিচ্ছিল। শুক্রবার সই করা নির্বাহী আদেশে বলা হয়, ২০০০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (স্টেম) খাতের কর্মীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে ২৫ লাখে দাঁড়িয়েছে, অথচ ওই সময়ে সামগ্রিক স্টেম কর্মসংস্থান বেড়েছে মাত্র ৪৪ শতাংশ।

সমালোচকরা বলছেন, এত বিপুল ফি চাপিয়ে দিলে যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বের সেরা মেধা আকর্ষণে বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম মেনলো ভেঞ্চার্সের পার্টনার ডিডি দাস সতর্ক করে বলেন, ‘এটি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্ভাবন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।’ বিশ্লেষকরা বলছেন, বড় বড় কোম্পানির পক্ষে খরচ সামলানো সম্ভব হলেও ছোট প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ও স্টার্টআপগুলো ভয়াবহ সমস্যায় পড়বে, এমনকি তারা কিছু উচ্চমূল্যের কাজ বিদেশে সরিয়ে নিতে বাধ্য হতে পারে।

ইমার্কেটার বিশ্লেষক জেরেমি গোল্ডম্যানের মতে, স্বল্পমেয়াদে ওয়াশিংটন বিপুল রাজস্ব আদায় করতে পারলেও দীর্ঘমেয়াদে এই নীতি যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা থেকে পিছিয়ে দিতে পারে এবং চীনের সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দৌড়ে অবস্থান দুর্বল করতে পারে।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর অনুমোদিত এইচ-১বি ভিসাধারীদের মধ্যে ভারতের অংশ ছিল ৭১ শতাংশ, আর চীনের ১১ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে শুধু অ্যামাজন ও এর ক্লাউড ইউনিট এডব্লিউএস পেয়েছে ১২ হাজারের বেশি এইচ-১বি ভিসা অনুমোদন, মাইক্রোসফট ও মেটা পেয়েছে ৫ হাজারের বেশি করে।

এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপে বাজারেও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আইটি সেবা নির্ভর প্রতিষ্ঠান কগনিজ্যান্টের শেয়ার ৫ শতাংশ পর্যন্ত পড়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রে তালিকাভুক্ত ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ইনফোসিস ও উইপ্রোর শেয়ারের দামও ২ থেকে ৫ শতাংশ কমে গেছে।

এই সিদ্ধান্তের আইনগত বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আমেরিকান ইমিগ্রেশন কাউন্সিলের নীতিনির্দেশক অ্যারন রাইকলিন-মেলনিক বলেন, ‘কংগ্রেস সরকারকে কেবলমাত্র আবেদন প্রক্রিয়ার খরচ উদ্ধার করতে ফি নির্ধারণের অনুমতি দিয়েছে, এর বাইরে ফি চাপানো আইনসঙ্গত নয়।’

বর্তমানে প্রতি বছর ৬৫ হাজার এইচ-১বি ভিসা দেওয়া হয়, সঙ্গে উচ্চতর ডিগ্রিধারীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ হাজার ভিসা। লটারি পদ্ধতিতে অংশ নিতে এখন সামান্য ফি দিতে হয় এবং অনুমোদনের পর কোম্পানিগুলোকে কয়েক হাজার ডলার পরিশোধ করতে হয়। সাধারণত তিন থেকে ছয় বছরের জন্য ভিসা কার্যকর থাকে এবং সব ফি কোম্পানিকেই বহন করতে হয়।

একই দিনে ট্রাম্প আরও একটি নির্বাহী আদেশে ‘গোল্ড কার্ড’ চালু করেছেন। এর আওতায় যে কেউ ১০ লাখ ডলার পরিশোধ করে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী নাগরিকত্ব পেতে পারবেন।

ঠিকানা/এএস 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041