অস্থিরতার আবর্তে রাজনীতি

পিছিয়ে যাচ্ছে নির্বাচন!

প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:৩৫ , অনলাইন ভার্সন
প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুসারে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর পাঁচ মাস বাকি। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে জনমনে এখনো        অনিশ্চয়তা কাটেনি। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে- ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের কোনো বিকল্প আমাদের হাতে নেই।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজও বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন না হলে বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতা তৈরি হওয়ার পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হবে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘দর্শক নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত, কিন্তু মঞ্চ তো প্রস্তুত না। মঞ্চের নায়ক-নায়িকারাও তাদের ভূমিকা সম্পর্কে প্রস্তুত না। দর্শকদের আর ধৈর্যচ্যুতি ঘটাবেন না।
এদিকে এরই মধ্যে দেশের রাজনীতিতে রাষ্ট্রের সংস্কার নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতানৈক্য জটিল আকার ধারণ করেছে বলে জনপরিসরে আলোচনা হচ্ছে। এই বিষয়সহ নির্বাচনকেন্দ্রিক চার দফা দাবিতে যুগপৎ কর্মসূচিতে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামীসহ সাতটি দল। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এ আন্দোলনে যুক্ত থাকবে বলে প্রচার পেলেও দলটি তা অস্বীকার করেছে।
সম্প্রতি ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের ভূমিধস বিজয়ের পর জাতীয় রাজনীতিতে জামায়াতে ইসলামীর প্রভাব নিয়ে এখন নানা বিশ্লেষণ চলমান। দেশের বাইরে থেকেও দুই রকম প্রতিক্রিয়া মিলেছে। ছাত্রশিবিরের সাফল্যকে অভিনন্দন জানিয়ে পাকিস্তান জামায়াতের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই সাফল্য বাংলাদেশে নির্মাণ ও উন্নয়নের এক নতুন যুগের সূচনা প্রমাণ করবে, জাতীয় জীবন ও গণতন্ত্রে ছাত্র ও যুবকদের ভূমিকার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরবে এবং ভারতীয় ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তির পথে অগ্রসর হবে। ইনশাআল্লাহ।’ অন্যদিকে ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা দিল্লিতে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এক আলোচনা সভায় বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীর হাতে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়ের রক্ত লেগে আছে। এই চিতাবাঘ (জামায়াত) তার দাগ বদলাবে না। ক্ষমতায় এসে কেউ ভারতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করলে এ নিয়ে ভারতকে চিন্তিত হতে হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশের রাজনীতি এখন অস্থির আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। কোনো একটি দেশের সংকট মোকাবিলায় রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা রাখতে হয়। কিন্তু দেশে এখন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্যই প্রবল।
এ অবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পরস্পরবিরোধী মতের কারণে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে ভোটার সাধারণের মধ্যে সংশয় দানা বেঁধে উঠেছে। নির্বাচন পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও তীব্রতর হচ্ছে। ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ডিসেম্বরেও না হতে পারে, এমনকি আগামী বছরের মাঝামাঝি কি শেষ নাগাদও গড়াতে পারে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা না হলেও নির্দিষ্ট সময় ঘোষণা করা হয়েছে। তার পরও নির্বাচনের সময় নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যেই নির্বাচন সম্পর্কে পরস্পর বিপরীত মত এবং আপত্তিও প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনে আন্দোলনে যাবে বলে ঘোষণা করেছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ঘোষিত নির্বাচন অনুষ্ঠানে আশাবাদ প্রকাশ করে বলেছেন, যেকোনো মূল্যে নির্বাচন আদায়ের ঘোষণা বাস্তবায়ন করা হবে। অপর অন্যতম দল জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনের গ্রহণযোগ্য পরিবেশ দাবি করেছে। শেখ হাসিনা ও তার সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের বিচার এবং সংস্কারের পর নির্বাচনের দাবি করেছে এনসিপি।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, ‘দেশে যখন একটা সংকট হয়, তখন সব রাজনৈতিক শক্তি একত্র হয়ে সেই সংকট থেকে উত্তরণের চেষ্টা করে। নেপালে যে ঘটনা ঘটল, আমরা জানলাম, সেখানে দ্রুত একজনকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী এবং তিন-চারজনের একটি মন্ত্রিসভা গঠন করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে-ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন হবে। সে দেশের জনগণ এতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। কিন্তু আমাদের এখানে তেমনটা হয়নি। আমাদের রাজনৈতিক শক্তিগুলো কোনো বিষয়েই তো একমত হতে পারছে না। তারা যদি একমত না হয়, তাহলে নির্বাচন ঝুলে যাবে এবং দেশে ভয়ানক অনিশ্চয়তা দেখা দেবে।’
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041