বিএনপির ভারতপ্রীতি, আস্থা প্রতিষ্ঠার দৌড়ে জামায়াত!

প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩:৫৩ , অনলাইন ভার্সন
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান জন্মাষ্টমী সাড়ম্বরে উদযাপন উৎসাহিত করছে দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি। জন্মাষ্টমী উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিএনপি এক মনোজ্ঞ আলোচনা ও সংবর্ধনা, প্রীতি সম্মিলন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল গত ২০ আগস্ট। দলে, অঙ্গসংগঠনগুলোর বিভিন্ন পদে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের অধিষ্ঠিত করছে। অপরদিকে জামায়াতে ইসলামীও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের সম্মানজনক সাংগঠনিক ও সামাজিক অবস্থান দিচ্ছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুরক্ষা এবং অধিকতর শক্তিশালী করতে জামায়াত, বিএনপি উভয়েই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলেছে।
দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে সব রকম বিভাজন, বিদ্বেষের ঊর্ধ্বে রেখে সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় করার উদ্দেশ্যে চরমোনাই পীরের বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনসহ অন্যান্য ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোও ভূমিকা রাখছে। সমাজজীবনে তার ইতিবাচক শুভ প্রভাব পড়ছে।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোরারাজি দেশাইয়ের বাংলাদেশে আগমন উপলক্ষে রাজধানীর মৎস্য ভবনের পাশের সরকারি অফিসের দেয়ালে আরবি হরফে লেখা সুরা সাদা কাপড় দিয়ে ডেকে দিয়েছিলেন। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, অন্যতম সেক্টর কমান্ডার, দলীয় ও রাষ্ট্রপ্রধানকে কোনোভাবেই অসম্মান বা হেয় করার উদ্দেশ্যে নয়; ইতিহাসের এক নির্মম, দুর্ভাগ্যজনক সত্য ঘটনা বলেই উল্লেখ করা হলো। ভারতের সঙ্গে বৈরিতা করে নয়, সৎ প্রতিবেশী হিসেবে সুন্দর সম্পর্ক রক্ষা করে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান নিরাপদ ও দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির স্বার্থেই জিয়া নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এটাও অনস্বীকার্য, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে দেশের হিন্দু সম্প্রদায় অত্যন্ত নিরাপদ, নির্ভয়ে স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবনযাপন করেছে। সে সময় হিন্দুদের বিষয়-সম্পত্তি দখলের ঘটনাও ঘটেনি। স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন সময়ের হিন্দুদের বিষয়-সম্পত্তি, ঘরবাড়ি দখল, লুটপাট, মন্দিরে ভাঙচুর, মহিলাদের ওপর পাশবিক নির্যাতনের ঘটনা আওয়ামী লীগের শাসনামলেই সর্বাধিক সংখ্যায় ঘটেছে। এটাও ইতিহাসের অত্যন্ত নির্দয় অধ্যায়।
বিএনপি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও ইসলামি মূল্যবোধ, আদর্শে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল হলেও ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা, সহমর্মিতা প্রশ্নাতীত। দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে তাদের সম্মানজনক স্থান দেওয়া হয়েছে। গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে স্থায়ী কমিটির সদস্য করা হয়েছে। তার কন্যাকে বিএনপির ঢাকা উত্তরের সভাপতি করা হয়েছে। ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরীর কন্যা নমিতা রায় চৌধুরীও অঙ্গসংগঠনের সম্পাদক। হিন্দু ধর্মাবলম্বী আরও কয়েকজনকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে ও অঙ্গসংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে নেওয়া হয়েছে। জেলা, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন ওয়ার্ড কমিটিতে হিন্দু সম্প্রদায় ও অন্য ধর্মাবলম্বীদের সম্মানজনক অবস্থানে পদাধিকারী করতে বলা হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যোগ্যতা, দক্ষতা, জনপ্রিয়তাকে ভিত্তি করে প্রাপ্য অবস্থান নিশ্চিত করতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সদিচ্ছা ও নির্দেশনার কথা সকল পর্যায়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
দেশের কোথাও হিন্দু সম্প্রদায়ের কারও বিষয়-সম্পত্তি, জমিজমা অবৈধভাবে দখল, মন্দিরে-বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট, হিন্দু মহিলাদের ওপর কোনোভাবে নিপীড়ন-নির্যাতন করার কোনো ঘটনা ঘটনো হলে দ্রুত সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া এবং দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের উদ্যোগে স্থানীয় থানায় মামলা দায়ের ও অপরাধী দলীয়দের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছিল। বিএনপির হাইকমান্ড থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, মন্দির পাহারা দেওয়া, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক পাহারাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে সব রকম ভয়ভীতি দূর করে তাদের মধ্যে আস্থা, বিশ্বাস প্রতিষ্ঠার জন্য যাবতীয় কর্মপন্থা, কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে বিএনপি। গত বছর দুর্গাপূজা ও লক্ষ্মীপূজার সময় বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা পাড়ায় পাড়ায় মন্দিরে মন্দিরে সার্বক্ষণিক পাহারা বসান। কর্মীরা দল বেঁধে রাতভর পূজামণ্ডপ পাহারা দেন। আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসবেও তারা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে নিরাপত্তা, স্বস্তি, শান্তি প্রতিষ্ঠায় সব রকম পদক্ষেপ নেবেন। এ ব্যাপারে তারেক রহমান স্পষ্ট নির্দেশনা দেবেন। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিউিটে অনুষ্ঠিত জন্মাষ্টমীর অভাবনীয় চমৎকার অনুষ্ঠানে তারেক রহমানের উপস্থিতি, বক্তব্য হিন্দু সম্প্রদায়কে দারুণভাবে উজ্জীবিত, উৎসাহিত করেছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হিন্দু সম্প্রদায় থেকে কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ জনকে বিএনপি মনোনয়ন দেবে। ভবিষ্যৎ মন্ত্রিসভায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যককে স্থান দেওয়া হবে।
অপরদিকে জামায়াতে ইসলামীও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে পূর্ণ আস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায় যে, তারাই এ দেশের হিন্দু ও অন্য ধর্মাবলম্বীদের পরম বিশ্বস্ত বন্ধু। তারা তাদের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সম্মানজনক সাংগঠনিক অবস্থান দিচ্ছে। আগামী নির্বাচনে তারা তাদের বেশ কিছুসংখ্যক আসনে মনোনয়ন দেওয়ার কথা ভাবছে। স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর নির্বাচনেও যোগ্যতা, জনপ্রিয়তা বিবেচনায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মূল্যায়ন করা হবে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর, বিষয়-সম্পদ, মন্দির রক্ষায় দলের কর্মী-সমর্থকদের প্রতি কঠোর নির্দেশ রয়েছে। কোনোভাবেই তাদের কেউ যাতে কোনো রকম বৈষম্য, অবহেলার শিকার না হন, বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটিকে তা সুনিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দেশের কোথায় হিন্দু সম্প্রদায়ের জমিজমা, বাড়িঘর লুট, হামলা, ভাঙচুর, হুমকি প্রভৃতি ঘটনা সংঘটিত হয়েছে এবং কারা এসবের সঙ্গে জড়িত, তার তালিকা করতে উপজেলা, ইউনিয়ন নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দুষ্কৃতকারীদের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করতেও বলা হয়েছে। আসন্ন দুর্গাপূজায় জামায়াতের পক্ষ থেকে মণ্ডপ স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করতে আগাম নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও জনগণের মনে আস্থা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যেই বিএনপি-জামায়াত এসব কার্যক্রম চালাচ্ছে। বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা, শান্তি, সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে তাদের তৎপরতা সম্পর্কে বাংলাদেশস্থ ভারতীয় হাইকমিশন, উপ-হাইকমিশনগুলোকেও সময় সময় অবহিত রাখা হয় বলে জানা গেছে।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041