বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক : নতজানু হলে মধুর, নইলে তিক্ত

প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৫ , অনলাইন ভার্সন
প্রকাশিত সংবাদ ‘সীমান্তে কঠোর সতর্কতা’। প্রকাশিত হয়েছে ঠিকানার ২৭ আগস্ট সংখ্যায় প্রথম পৃষ্ঠায়। খবরে প্রকাশ, ‘অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার এক বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক স্বাভাবিক হলো না।’ এ ব্যাপারে দুই সরকারের দিক থেকেই তেমন কার্যকর উদ্যোগও নেওয়া হয়নি। অদূর ভবিষ্যতে তেমন উদ্যোগ যে নেওয়া হবে, তারও কোনো আলামত পাওয়া যাচ্ছে না। বরং এর মধ্যে এমন কিছু ঘটনা ঘটে গেছে, যা নিয়ে দুই দেশের মধ্যেই উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে শেখ হাসিনার ১৬ বছর পর সরকার পতনের আগে এবং তারও আগে শেখ হাসিনার শাসনকালে ভারতকে অনেক কিছু ছাড় দেওয়ার ফলে সম্পর্ক মধুর ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক নামতে নামতে এখন তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।

বাংলাদেশের কাছ থেকে ভারতের প্রাপ্তির সম্ভাবনা যখনই হ্রাস পেয়েছে, তখনই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বৈরী হয়েছে। নীতি, আদর্শ, আচার-আচরণ পাল্টে ফেলা যায়, কিন্তু ইচ্ছা করলেই প্রতিবেশী পাল্টানো যায় না। সৎ প্রতিবেশীসুলভ আচরণে যদি দুই প্রতিবেশী দেশ তাদের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার সদিচ্ছা দেখায় এবং বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায়, দুই দেশের জন্যই তা মঙ্গলজনক। দুই দেশের জনগণও সেই সুসম্পর্কের সুফল ভোগ করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার বৃহৎ দুই প্রতিবেশী দেশ রয়েছেÑকানাডা ও মেক্সিকো। তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ভালো। কখনো কোনো কারণে তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটলেও তা বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ককালের চেয়েও ভালো।

আজকের আধুনিক বিশ্বায়নের যুগে সেটাই সব দেশের কাম্য হওয়া উচিত বলে মনে করেন এ সময়ের জ্ঞানী, গুণী লোকেরা। কিন্তু বাঙালি গুণীদের এ কথা বাংলাদেশ-ভারতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে দেখা যায় না। এ দুই দেশে যত সাধক, বাউল জন্মগ্রহণ করেছেন, অন্য কোনো দেশে এমনটা দেখা যায় না। সেসব সাধক, বাউল যত মিলনের গান গেয়েছেন, তাদের সেসব মিলনের আছড় দুই দেশের শাসকশ্রেণির ওপর পড়েছে বলে মনে হয় না। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান-ভারত ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই বৈরী ভাব শুরু, তা আজও চলমান।

বাংলাদেশের কাছ থেকে যখন তাদের আবদার পূরণ হয়, তখন অনেকটা শান্ত থাকলেও যখন তাদের পাওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস পায়, তখন আবার ভারত বৈরিতা শুরু করে দেয়। বিশেষ করে, সীমান্তে তাদের বৈরিতা বেশ কদর্যভাবেই দৃশ্যমান। যখন তখন সীমান্তে ফেলানীর মতো লাশ কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলন্ত পাওয়া যায়। লিখিত চুক্তি সত্ত্বেও তারা সেই চুক্তি ভঙ্গ করতে দ্বিধা করে না। ভারতের ‘বড়ভাইসুলভ’ কর্তৃত্ববাদী চেহারা প্রকাশ পায়। বাংলাদেশ তাদের মিত্রতার হাত বাড়িয়ে দিলেও ভারত তাদের কর্তৃত্ববাদী আচরণ ত্যাগ করে না। এ কথা দিবালোকের মতো সত্য, আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসীন হয়, ভারতের দিক থেকে তখন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক মধুর, বুঝতে পারা যায়। এর বাইরে অভ্যন্তরীণ, আঞ্চলিক যেকোনো সমস্যা-সংকটে বাংলাদেশের পাশ থেকে সরে দাঁড়ানোর দৃষ্টান্ত সীমাহীন।

বর্তমান সময়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর দিল্লির দিক থেকে ঢাকার সঙ্গে সব সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, বলা যায়। চুক্তির অধীন যেসব পণ্য, খাদ্যশস্য বাংলাদেশে তা বন্ধই করে দিয়েছে। চেক পয়েন্টগুলোকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রেখেছে ভারত। ভারত মনেই করতে চায় না, বাংলাদেশও ভারতের মতো একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র। তাদের আচরণে মনে হয়, বাংলাদেশ যেন ভারতের অধীন একটা দেশ। দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে এ রকম সম্পর্ক মোটেও কাম্য নয়। দুই দেশের মধ্যে শান্তি, সুসম্পর্ক, সম্প্রীতি, যোগাযোগ যত বৃদ্ধি পাবে, দুই দেশের জনগণ তত আনন্দে থাকবে। জনগণের সম্পর্ক, সম্প্রীতি তলানিতে পৌঁছালে কারও কল্যাণ হয় না।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041