ফ্রান্স থেকে আহমেদ জুনেদ ফারহান : ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরুর নেতৃত্বাধীন সরকার সংসদে আস্থা ভোটে পরাজিত হয়ে পতনের মুখে পড়েছে। তাঁকে পদচ্যুত করার পক্ষে ৮ সেপ্টেম্বর (সোমবার) অনুষ্ঠিত এই ভোটে ৩৬৪ জন সংসদ সদস্য সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দেন যেখানে পক্ষে ভোট দেন মাত্র ১৯৪ জন। আস্থা ভোটে পরাজিত হওয়ার ফলে এখন ফ্রান্সের সরকারকেও ক্ষমতা ছাড়তে হবে। এই ঘটনা ফ্রান্সের পঞ্চম প্রজাতন্ত্রের ইতিহাসে মাত্র তৃতীয়বার যখন কোনো সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে সংসদে আস্থা ভোটে পরাজিত হলো।
বাজেট নিয়ে সংঘাত রাজনৈতিক বিভাজনের প্রতিফলন
প্রধানমন্ত্রী বাইরু নিজেই এ আস্থা ভোট আহ্বান করেন। লক্ষ্য ছিল তার প্রস্তাবিত ৪৪ বিলিয়ন ব্যয়ের কড়াকড়িভিত্তিক বাজেট সংসদের সমর্থন আদায় করা। বাজেটে কর বৃদ্ধি, সরকারি ব্যয় কমানো এবং ছুটির দিন বাতিলের মতো বিতর্কিত পদক্ষেপ প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু বাজেটটি নিয়ে বাম ও ডান উভয় রাজনৈতিক শিবিরের তীব্র বিরোধিতা দেখা দেয়, যার ফলে বাইরু সরকারের পতন অবধারিত হয়ে পড়ে।
ঋণের চাপে অর্থনীতি আশঙ্কায় আন্তর্জাতিক বাজার
ফ্রান্সের জাতীয় ঋণ এখন GDP-র ১১৪ শতাংশ ছুঁয়েছে, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ। এ ঋণের ভার ও বাজেট সংকটের কারণে ক্রেডিট রেটিং হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, যা বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক আর্থিক আস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অন্যদিকে দেশজুড়ে ধর্মঘট ও সামাজিক অসন্তোষ বাড়তে শুরু করেছে।
রাষ্ট্রপতির চাপে নেতৃত্ব সংকট
এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি এমানুয়েল মাক্রোঁ আবারও চাপে পড়েছেন। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে চতুর্থবারের মতো তাকে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিতে হবে। সংসদে কোনো একক দল সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়, ফলে নতুন সরকারের স্থায়িত্ব নিয়েও গভীর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। বিরোধীরা ইতিমধ্যে সাধারণ নির্বাচনের দাবিতে সরব হয়েছে।
দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আস্থা ভোট শুধু একটি সরকারের পতন নয় বরং ফ্রান্সের কাঠামোগত দুর্বলতা, বিভক্ত সংসদ, এবং বাজেট প্রণয়নে ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ফলে বারবার সরকার পরিবর্তন হচ্ছে। রাষ্ট্রপতির রাজনৈতিক কর্তৃত্ব ক্ষয়িষ্ণু আন্তর্জাতিকভাবে ইউরোর মান ও বিনিয়োগ আস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব।
সম্ভাব্য পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে?
বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে হলে তার হতে হবে টেকনোক্র্যাট বা অরাজনৈতিক, কোয়ালিশন-সহনশীল ভিত্তিতে। তবে জনমনে গ্রহণযোগ্য সম্ভাব্য যাঁদের নাম আলোচনায়- Bruno Le Maire সাবেক অর্থমন্ত্রী, Christine Lagarde ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, Élisabeth Borne সাবেক প্রধানমন্ত্রী (পুনঃনিয়োগের সম্ভাবনা)।
বাজেটের ভবিষ্যৎ পুনর্বিন্যাস ও রাজস্ব খোঁজ
পরবর্তী সরকারকে একটি নতুন বাজেট প্রস্তাব নিয়ে আসতে হবে, যা হবে Austerity নীতির হালকাভাবে পুনর্বিন্যাস, সমঝোতাভিত্তিক কর্পোরেট কর, সম্পদ কর ও পরিবেশ শুল্কের মাধ্যমে নতুন রাজস্বের সন্ধান। তবে সতর্ক করা হয়েছে, বাজেট পাসে ব্যর্থতা ও ঋণ বাড়লে ক্রেডিট রেটিং কমে যাওয়া ও সুদের হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল। এ আস্থা ভোটের ফলাফল একটি গভীরতর সংকেত ফ্রান্সের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এখন চরম অনিশ্চয়তার মুখে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, বাস্তববাদী বাজেট প্রণয়ন এবং জনআস্থা পুনঃনির্মাণ এখন রাষ্ট্রপতির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ।
ঠিকানা/এসআর
বাজেট নিয়ে সংঘাত রাজনৈতিক বিভাজনের প্রতিফলন
প্রধানমন্ত্রী বাইরু নিজেই এ আস্থা ভোট আহ্বান করেন। লক্ষ্য ছিল তার প্রস্তাবিত ৪৪ বিলিয়ন ব্যয়ের কড়াকড়িভিত্তিক বাজেট সংসদের সমর্থন আদায় করা। বাজেটে কর বৃদ্ধি, সরকারি ব্যয় কমানো এবং ছুটির দিন বাতিলের মতো বিতর্কিত পদক্ষেপ প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু বাজেটটি নিয়ে বাম ও ডান উভয় রাজনৈতিক শিবিরের তীব্র বিরোধিতা দেখা দেয়, যার ফলে বাইরু সরকারের পতন অবধারিত হয়ে পড়ে।
ঋণের চাপে অর্থনীতি আশঙ্কায় আন্তর্জাতিক বাজার
ফ্রান্সের জাতীয় ঋণ এখন GDP-র ১১৪ শতাংশ ছুঁয়েছে, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ। এ ঋণের ভার ও বাজেট সংকটের কারণে ক্রেডিট রেটিং হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, যা বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক আর্থিক আস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অন্যদিকে দেশজুড়ে ধর্মঘট ও সামাজিক অসন্তোষ বাড়তে শুরু করেছে।
রাষ্ট্রপতির চাপে নেতৃত্ব সংকট
এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি এমানুয়েল মাক্রোঁ আবারও চাপে পড়েছেন। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে চতুর্থবারের মতো তাকে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিতে হবে। সংসদে কোনো একক দল সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়, ফলে নতুন সরকারের স্থায়িত্ব নিয়েও গভীর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। বিরোধীরা ইতিমধ্যে সাধারণ নির্বাচনের দাবিতে সরব হয়েছে।
দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আস্থা ভোট শুধু একটি সরকারের পতন নয় বরং ফ্রান্সের কাঠামোগত দুর্বলতা, বিভক্ত সংসদ, এবং বাজেট প্রণয়নে ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ফলে বারবার সরকার পরিবর্তন হচ্ছে। রাষ্ট্রপতির রাজনৈতিক কর্তৃত্ব ক্ষয়িষ্ণু আন্তর্জাতিকভাবে ইউরোর মান ও বিনিয়োগ আস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব।
সম্ভাব্য পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে?
বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে হলে তার হতে হবে টেকনোক্র্যাট বা অরাজনৈতিক, কোয়ালিশন-সহনশীল ভিত্তিতে। তবে জনমনে গ্রহণযোগ্য সম্ভাব্য যাঁদের নাম আলোচনায়- Bruno Le Maire সাবেক অর্থমন্ত্রী, Christine Lagarde ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, Élisabeth Borne সাবেক প্রধানমন্ত্রী (পুনঃনিয়োগের সম্ভাবনা)।
বাজেটের ভবিষ্যৎ পুনর্বিন্যাস ও রাজস্ব খোঁজ
পরবর্তী সরকারকে একটি নতুন বাজেট প্রস্তাব নিয়ে আসতে হবে, যা হবে Austerity নীতির হালকাভাবে পুনর্বিন্যাস, সমঝোতাভিত্তিক কর্পোরেট কর, সম্পদ কর ও পরিবেশ শুল্কের মাধ্যমে নতুন রাজস্বের সন্ধান। তবে সতর্ক করা হয়েছে, বাজেট পাসে ব্যর্থতা ও ঋণ বাড়লে ক্রেডিট রেটিং কমে যাওয়া ও সুদের হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল। এ আস্থা ভোটের ফলাফল একটি গভীরতর সংকেত ফ্রান্সের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এখন চরম অনিশ্চয়তার মুখে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, বাস্তববাদী বাজেট প্রণয়ন এবং জনআস্থা পুনঃনির্মাণ এখন রাষ্ট্রপতির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ।
ঠিকানা/এসআর