পুতিন-কিমকে পাশে নিয়ে ট্রাম্পকে উসকে দিচ্ছে শি

প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪:৫৮ , অনলাইন ভার্সন


চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বেইজিংয়ে সামরিক কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনকে পাশে নিয়ে বিশ্বকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। তাদের পেছনে ইরান, পাকিস্তান, বেলারুশ এবং মিয়ানমারসহ প্রায় দুই ডজন দেশের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এই দৃশ্য স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেয় যে, চীন ইচ্ছাকৃতভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে উসকে দিচ্ছে এবং নিজেদের সামরিক শক্তি ও ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবের ক্ষেত্রে একটি বিকল্প শক্তি হিসেবে তুলে ধরছে।

তিয়েনআনমেন স্কয়ারে ৫০ হাজার মানুষ এবং বিশ্বজুড়ে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এই কুচকাওয়াজ দেখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ পশ্চিমা দেশগুলো এটিকে একটি সুস্পষ্ট বার্তা হিসেবে নিয়েছে। কুচকাওয়াজ চলাকালীন ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শি'কে উদ্দেশ্য করে লেখেন, 'আপনি যখন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন, দয়া করে ভ্লাদিমির পুতিন ও কিম জং-উনকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে দেবেন।'

কিম ও পুতিনকে পাশে বসিয়ে শি বিশ্বকে বোঝাতে চেয়েছেন যে, বিশ্বজুড়ে বর্তমান সংঘাত ও দ্বন্দ্বের জন্য তার পাশে বসা ব্যক্তিরা দায়ী নন, বরং এর দায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বর্তমান আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার। এই কুচকাওয়াজে হাজার হাজার প্রশিক্ষিত সেনা, পারমাণবিক অস্ত্র বহনকারী ক্ষেপণাস্ত্র এবং পানির নিচে চলা ড্রোনের প্রদর্শন করা হয়। এই আয়োজন থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট হয় যে, শি সামরিক শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে চীন যে দ্রুতগতিতে অন্যতম সামরিক শক্তিধর দেশ হয়ে উঠছে, সেই বার্তা দিতে চেয়েছেন।

চীন দীর্ঘদিন ধরে তাদের উত্থানকে শান্তিপূর্ণ বলে প্রচার করলেও, এই কুচকাওয়াজ দেখিয়ে দিয়েছে যে দেশটি দ্রুতগতিতে অন্যতম সামরিক শক্তিধর দেশ হতে চলেছে। শি তার বক্তৃতায় বলেন যে, যখন সব দেশ একে অন্যকে সমান হিসেবে দেখবে, সহযোগিতা করবে এবং শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করবে, তখনই গোড়া থেকে যুদ্ধ নির্মূল করা যাবে। তিনি বারবার বলেছেন যে, এর মূল কারণ হলো 'শীতল যুদ্ধের মানসিকতা'।

সপ্তাহের শুরুতে, চীনের বন্দর শহর তিয়ানজিনে শি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে একটি সম্মেলন করেন, যেখানে 'বৈশ্বিক শাসনব্যবস্থা উদ্যোগ' উন্মোচন করা হয়। এই উদ্যোগের আওতায় সি বিশ্বব্যবস্থাকে আরও গণতান্ত্রিক করতে চান। বেইজিংয়ের রেনমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক ইনস্টিটিউটের পরিচালক ওয়াং ইওয়ে বলেন, এই উদ্যোগের আওতায় সুইফট সিস্টেম, নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্য, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থাপনা, সমুদ্র ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু পরিবর্তনসহ আরও কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। তিনি আরও বলেন যে, জাতিসংঘের 'গ্লোবাল সাউথ' দেশগুলোর আরও বেশি মতামত দেওয়ার অধিকার এবং ক্ষমতা নিশ্চিত করতে হবে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, শি-এর এই উদ্যোগের দুটি উদ্দেশ্য রয়েছে। প্রথমত, পশ্চিমা শক্তির চাপে থাকা দেশগুলোর জন্য একটি মিলনকেন্দ্র হিসেবে কাজ করা। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন ক্ষেত্রে মার্কিন ক্ষমতা কমিয়ে এনে তা চীনা মিত্র দেশগুলোর মধ্যে ভাগ করে দেওয়া। এটি বেইজিংকে এমন একটি বিশ্বব্যবস্থা গঠনে সহায়তা করবে, যেখানে জাতীয় উন্নয়ন ব্যক্তিগত মানবাধিকারের ধারণার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হবে এবং কোনো মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট চীনের আকাঙ্ক্ষাকে সীমিত করতে পারবে না।

এই সামরিক শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে শি তিয়েনআনমেন স্কয়ারে সমবেত জনতার সামনে বিশ্ববাসীকে একটি সহজ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সেটি হচ্ছে, শান্তি অথবা যুদ্ধের মধ্যে একটিকে বেছে নেওয়া। 

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041