ছাত্ররাজনীতির সেকাল-একাল

প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩:৩৫ , অনলাইন ভার্সন
বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান উপমহাদেশে ছাত্র আন্দোলনের রয়েছে এক গৌরবময় ইতিহাস। ব্রিটিশ ভারতের শাসনকাল থেকেই সকল আন্দোলন-সংগ্রামে উজ্জ্বল ভূমিকা দেখতে পাওয়া যায় ছাত্রদের। ব্রিটিশবিরোধী যেকোনো লড়াই-সংগ্রামে ছাত্ররা বিপুলভাবে অংশ নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রামে শক্তি জুগিয়েছে। অকাতরে প্রাণও দিয়েছে তারা। অনেক লড়াই-সংগ্রাম, জীবনদানের পর ১৯৪৭ সালের আগস্টে ব্রিটিশরা পাক-ভারত থেকে লোটাকম্বল নিয়ে চলে যায় নিজ দেশে। দিয়ে যায় পাকিস্তান ও ভারত নামে দুটি দেশ। পূর্ব ও পশ্চিম নামে দুটি ডানা নিয়ে স্বাধীন হয় পাকিস্তান ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট। এক দিন পর ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা লাভ করে ভারত। প্রায় ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসন থেকে পাকিস্তান জন্মলাভের পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানের শাসককুল ও বৃহৎ পুঁজির ২১ মালিক পরিবারের নতুন শোষণের চারণক্ষেত্রে পরিণত হয় পূর্ব পাকিস্তান। পশ্চিম পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যেতে পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ বাধ্য হয় এবং পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম যে সংগ্রাম হয়, সেটা বাংলা ভাষার অধিকার রক্ষা আন্দোলন। সে আন্দোলনের প্রধান শক্তি ছিল ছাত্রসমাজ। ভাষা রক্ষার সেই আন্দোলনের সূচনা হয় পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার এক বছরের মধ্যেই।

১৯৪৮-এর মার্চ থেকে শুরু। চরম পরিণতি পায় ১৯৫২-তে। পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার ৫ বছরের মধ্যেই পাক পুলিশের হাতে বাঙালি ছাত্রদের রক্তে ঢাকার রাজপথ রঞ্জিত হয়। সে আন্দোলনের নায়ক ছাত্ররাই। শেখ মুজিবুর রহমান, আব্দুল মতিন, গাজীউল হক, মোহাম্মদ তোয়াহা, রণেশ মৈত্র আরও কত উজ্জ্বল সব নাম। আমরা জানতাম ছাত্ররাই দেশের ভবিষ্যৎ। বাংলাদেশে এরপর যত আন্দোলন, গণ-অভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধ সব আন্দোলনের অগ্রভাগে ছাত্ররা। তোফায়েল আহমদ, নূরে আলম সিদ্দিকী, আ স ম আব্দুর রব, শাজাহান সিরাজ, সাইফুদ্দিন মানিক, ডা. সারোয়ার আলীÑবাঘা বাঘা সব নাম। জাতির ভবিষ্যৎ। আশার আলো। ঢাকায় সব আন্দোলনের সূতিকাগার বিশ্ববিদ্যালয়।
আজ সেই ‘রামও নেই, অযোধ্যাও নেই’। এখন ছাত্রদের সেই সুনাম, সেই জ্যোতি, সেই ধার দেখা যায় না। এখন ছাত্ররাজনীতি, ছাত্র নেতৃত্ব প্রশ্নের মুখে। এ শুধু মানুষের ধারণাগত বিশ্বাস নয়, নিরেট বাস্তবতা। মানুষের সরব আলোচনা, সংবাদ মিডিয়ার শিরোনামে ছাত্ররাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন। সমাজে সমস্যা, সংকট আগের চেয়ে ভয়ংকর। কিন্তু অতীতের সেই ছাত্ররাজনীতি নেই। ছাত্র নেতৃত্ব নিম্নমুখী। সবকিছু ‘পদ-পদবি আর অর্থের বৃত্তে আবদ্ধ’। এ অভিযোগ নয়, এ এক হতাশা আর অন্ধকারের নাম।

জাতির জন্য তাদের সেই তেজ এবং ত্যাগ অনুপস্থিত। নিজেরাই নিজেদের দ্বন্দ্ব-সংঘাতে জড়িয়ে শক্তি ও সুনাম ক্ষয় করছে। দেশ ও জাতির প্রচণ্ড আশাবাদ, ছাত্ররাজনীতি সেই অতীত, সেই সুনাম, সেই তেজ নিয়ে ফিরে আসুক। জাতির এই ক্রান্তিকালে ছাত্রসমাজ আবার ‘জাতির ভবিষ্যৎ’ হয়ে আবির্ভূত হোক। সংক্ষুব্ধ সাগরে দিশাহীন তরীর হাল ধরুক।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041