
জান্নাতুল ফেরদৌসী
অফিসের জন্য প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার একটা অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। তাই ছুটির দিনেও তার ব্যতিক্রম হয় না। কিন্তু ছুটির দিনে সকালে ওঠার তাড়া থাকে না বলে ঘুম ভেঙে যাওয়ার পরও ইচ্ছামতো ঘণ্টা দুয়েক অলসভাবে গড়াগড়ি দেওয়া যায়। ফোন হাতে নিয়ে হয়তো কিছুক্ষণ ঘাঁটাঘাঁটি করে তারপর আবার চোখ বুজে রিলাক্স করি। সেটা আমার কাছে একটা লাক্সারি মনে হয়। আর এই ছোট ছোট ভালো লাগাগুলোই আমার ভালোবাসা। এগুলোতেই আমি আটকে যাই। হ্যাঁ, পথ দিয়ে হেঁটে যেতে যদি সুন্দর একটি ফুল দেখি, তখন আমি আটকে যাই, কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ফুলটার সৌন্দর্য উপভোগ করি। কয়েকটা ছবি তুলি, হয়তো একটা ভিডিও করে ফেলি। নতুন কোনো জায়গায় বেড়াতে গেলে সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে আমি আটকাই।
অনেক সময় কোথাও ড্রাইভ করে যেতে আশপাশের সিনারি এত ব্রেথ-টেকিং থাকে, মন চায় গাড়ি থামিয়ে কাছে গিয়ে সেই সৌন্দর্য উপভোগ করি। কিন্তু অনেক সময় হাইওয়েতে থাকি বিধায় সেটা সম্ভব হয় না। ঠিক তেমনি আমাদের সব ইচ্ছা, আশা, আকাক্সক্ষা সব সময় পূরণ হয় না এবং অনেক সময় চাইলেও আমরা অনেক কিছুর সঙ্গে আটকাতে পারি না।
কিছুদিন যাবৎ মানুষ কিসে আটকায়, এটা নিয়ে ফেসবুকে বেশ বড় ধরনের একটা ঝড়-তুফান বয়ে গেল। আমি আমার অফিসের কাজের ব্যস্ততা এবং অন্যান্য ঝামেলার কারণে কোনো কিছু লিখে পোস্ট করার সময় পাইনি। যা-ই হোক আজ ছুটির দিনে ভাবলাম দুই লাইন লিখি। আমার মতে, জীবনটাকে সিম্পলভাবে দেখা এবং ভাবা উচিত। যে যত বেশি সিমপ্লিসিটি নিয়ে থাকবে, সে তত বেশি ভালো এবং সুখে থাকতে পারবে। কারণ আমরা যখন জটিলভাবে চিন্তা করব, তখন নিজেকে অনেক বেশি জটিলতার মধ্যে জড়াতে হবে এবং তাতে ঝামেলা শুধু বাড়তেই থাকবে। সে জন্যই বলে, অনেক চালাক মানুষ জীবনে অনেক বড় ধরনের ধরা খায়।
আর রিলেশনশিপের কথা যদি আসে, তাহলে জীবনে বেটার অপশনের কিন্তু শেষ নেই। কিন্তু কোন অপশনটাতে আপনি ভালো থাকবেন, সেটাই হচ্ছে বড় কথা। কারণ দিন শেষে আপনি কতটুকু ভালো আছেন, সেটা জানাটা খুব বেশি জরুরি।
আসলে এই সময়টাতে আমরা যে দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে থাকি, সেটা হচ্ছে আমরা নিজেরাই জানি না যে আমরা কী চাই।
মানুষ কিসে আটকায়-এর কোনো সহজ সমীকরণ নেই। আমরা প্রতিদিন অনেক অভিযোগ শুনে অভ্যস্ত। কিন্তু চিন্তা করে দেখুন, আপনি নিজে কি ষোলআনা পারফেক্ট? তাহলে আরেকজনের কাছে কেন বা কীভাবে তা আশা করেন। যদি সাফল্যের ব্যাখ্যা দিতে যাই, তাহলে শিক্ষাগত যোগ্যতা, ভালো চাকরি, অর্থ-সম্পদ, বাড়ি-গাড়ি, মান-সম্মান, সুন্দর একটি জীবন। কিন্তু ভেবে দেখুন, সবকিছু যদি পারফেক্টভাবে চলতে থাকে, তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই বোরিং লাগবে, হাঁপিয়ে উঠবেন। আপনার যা কিছু ভালো লাগে, আপনার সঙ্গীর না-ও লাগতে পারে। তার মানে সে যে খারাপ এমনটা কিন্তু নয়, তাই বলে তাকে ছেড়ে দিতে হবে?
ট্রাস্ট মি, বেশ কয়েক বছর অনেক গভীর প্রেম করে লিভ টুগেদার করার পরে বিয়ে করার পর অনেকের ডিভোর্স হতে দেখেছি। ডিভোর্সের পর একে অপরের বেস্ট ফ্রেন্ড হতে দেখেছি। মানুষ বড়ই বিচিত্র প্রজাতি, আর তাদের মন আরও অনেক বেশি বিচিত্র।
সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, মানুষ জানে না যে সে কী চায়। যে কাপল সোশ্যাল মিডিয়ায় পারফেক্ট দেখায়, তাদের সমস্যা সবচেয়ে বেশি। স্ত্রী প্রতিনিয়ত স্বামীকে নজরদারিতে রাখার জন্য চেক করছে। আর স্বামী তার স্ত্রীর এসব অত্যাচার অ্যাভয়েড করার জন্য দিনরাত কাজের অজুহাত দিয়ে অফিসে সময় কাটাচ্ছে।
সেলিব্রিটিদের কথা আর না-ইবা ঘাঁটাই। নব্বইয়ের দশকে প্রেসিডেন্ট ক্লিনটনের সঙ্গে মনিকা লিউনেস্কির ঘটনা বেশ আলোড়ন ছড়িয়েছিল। কিন্তু হিলারি তাকে ছেড়ে যাননি। হিলারির কি কোনো কিছুর অভাব ছিল? তিনি ইচ্ছা করলেই চলে যেতে পারতেন কিন্তু যাননি। এটা তার চয়েস ছিল।
প্রিন্সেস ডায়ানার সঙ্গে চার্লসের ডিভোর্সের মূল কারণ ছিল চার্লসের পরকীয়া। কিন্তু মিডিয়া হাইলাইট করেছে ডায়ানাকে। যা-ই হোক, সেগুলো রাজা-রানিদের ব্যাপার-স্যাপার।
প্রতিনিয়ত পৃথিবীর বুকে অনেক ঘটনাই ঘটে, যা আমার আপনার অজানা। সেলিব্রিটিদের ঘটনাগুলো অনেক রসালো। সেগুলো নিয়ে আমরা অনেক মাতামাতি করি, আনন্দ পাই।
নিজেকে বোঝার চেষ্টা করুন, নিজেকে নিজের মতো করে গড়ে তুলুন। আপনার কীভাবে ভালো লাগবে, আপনি কীভাবে ভালো থাকবেন, শান্তিতে থাকবেন, সেটাকেই প্রায়োরিটি দিন। জীবনে উন্নতি করার জন্য শর্টকাট কোনো উপায় নেই। সে জন্য সহজ কোনো পন্থা অবলম্বন না করাই ভালো। আর মিথ্যাচার তো মোটেই নয়। যদিও সাময়িকের জন্য হয়তো এগুলো আনন্দ দেবে, কিন্তু অচিরেই ভেঙে যায়।
জীবনে আপনার আটকে থাকার কারণ কী। আশপাশের কারও সঙ্গে নিজেকে কমপেয়ার না করে নিজেকে আবিষ্কার করুন, নিজেকে ভালোবাসুন। দেখবেন, অনেক অনেক ভালো আছেন, ভালো থাকবেন। আশপাশের মানুষজনকে আপনজনকে ভালোবাসবেন, প্রকৃতিকে ভালোবাসবেন, দেখবেন ভালো আছেন।
ঠিক এই মুহূর্তে, এই আগস্টের সকালবেলা মেরিল্যান্ডের ক্রেপ মার্টল গাছে থোকায় থোকায় ফুটে থাকা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করায়, ভালোবাসায় আমি আটকে আছি।
আমি অফিস থেকে এলে আমার ছেলে দৌড়ে এসে যখন জড়িয়ে ধরে বলে, তোমার আজকের অফিসের দিনটা কেমন ছিল, আমি তোমাকে ভালোবাসি এবং তোমাকে মিস করেছি; ঠিক এই মুহূর্তে এগুলোই আমার ভালো লাগা এবং ভালোবেসে আমার আটকে থাকার কারণ।
অফিসের জন্য প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার একটা অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। তাই ছুটির দিনেও তার ব্যতিক্রম হয় না। কিন্তু ছুটির দিনে সকালে ওঠার তাড়া থাকে না বলে ঘুম ভেঙে যাওয়ার পরও ইচ্ছামতো ঘণ্টা দুয়েক অলসভাবে গড়াগড়ি দেওয়া যায়। ফোন হাতে নিয়ে হয়তো কিছুক্ষণ ঘাঁটাঘাঁটি করে তারপর আবার চোখ বুজে রিলাক্স করি। সেটা আমার কাছে একটা লাক্সারি মনে হয়। আর এই ছোট ছোট ভালো লাগাগুলোই আমার ভালোবাসা। এগুলোতেই আমি আটকে যাই। হ্যাঁ, পথ দিয়ে হেঁটে যেতে যদি সুন্দর একটি ফুল দেখি, তখন আমি আটকে যাই, কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ফুলটার সৌন্দর্য উপভোগ করি। কয়েকটা ছবি তুলি, হয়তো একটা ভিডিও করে ফেলি। নতুন কোনো জায়গায় বেড়াতে গেলে সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে আমি আটকাই।
অনেক সময় কোথাও ড্রাইভ করে যেতে আশপাশের সিনারি এত ব্রেথ-টেকিং থাকে, মন চায় গাড়ি থামিয়ে কাছে গিয়ে সেই সৌন্দর্য উপভোগ করি। কিন্তু অনেক সময় হাইওয়েতে থাকি বিধায় সেটা সম্ভব হয় না। ঠিক তেমনি আমাদের সব ইচ্ছা, আশা, আকাক্সক্ষা সব সময় পূরণ হয় না এবং অনেক সময় চাইলেও আমরা অনেক কিছুর সঙ্গে আটকাতে পারি না।
কিছুদিন যাবৎ মানুষ কিসে আটকায়, এটা নিয়ে ফেসবুকে বেশ বড় ধরনের একটা ঝড়-তুফান বয়ে গেল। আমি আমার অফিসের কাজের ব্যস্ততা এবং অন্যান্য ঝামেলার কারণে কোনো কিছু লিখে পোস্ট করার সময় পাইনি। যা-ই হোক আজ ছুটির দিনে ভাবলাম দুই লাইন লিখি। আমার মতে, জীবনটাকে সিম্পলভাবে দেখা এবং ভাবা উচিত। যে যত বেশি সিমপ্লিসিটি নিয়ে থাকবে, সে তত বেশি ভালো এবং সুখে থাকতে পারবে। কারণ আমরা যখন জটিলভাবে চিন্তা করব, তখন নিজেকে অনেক বেশি জটিলতার মধ্যে জড়াতে হবে এবং তাতে ঝামেলা শুধু বাড়তেই থাকবে। সে জন্যই বলে, অনেক চালাক মানুষ জীবনে অনেক বড় ধরনের ধরা খায়।
আর রিলেশনশিপের কথা যদি আসে, তাহলে জীবনে বেটার অপশনের কিন্তু শেষ নেই। কিন্তু কোন অপশনটাতে আপনি ভালো থাকবেন, সেটাই হচ্ছে বড় কথা। কারণ দিন শেষে আপনি কতটুকু ভালো আছেন, সেটা জানাটা খুব বেশি জরুরি।
আসলে এই সময়টাতে আমরা যে দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে থাকি, সেটা হচ্ছে আমরা নিজেরাই জানি না যে আমরা কী চাই।
মানুষ কিসে আটকায়-এর কোনো সহজ সমীকরণ নেই। আমরা প্রতিদিন অনেক অভিযোগ শুনে অভ্যস্ত। কিন্তু চিন্তা করে দেখুন, আপনি নিজে কি ষোলআনা পারফেক্ট? তাহলে আরেকজনের কাছে কেন বা কীভাবে তা আশা করেন। যদি সাফল্যের ব্যাখ্যা দিতে যাই, তাহলে শিক্ষাগত যোগ্যতা, ভালো চাকরি, অর্থ-সম্পদ, বাড়ি-গাড়ি, মান-সম্মান, সুন্দর একটি জীবন। কিন্তু ভেবে দেখুন, সবকিছু যদি পারফেক্টভাবে চলতে থাকে, তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই বোরিং লাগবে, হাঁপিয়ে উঠবেন। আপনার যা কিছু ভালো লাগে, আপনার সঙ্গীর না-ও লাগতে পারে। তার মানে সে যে খারাপ এমনটা কিন্তু নয়, তাই বলে তাকে ছেড়ে দিতে হবে?
ট্রাস্ট মি, বেশ কয়েক বছর অনেক গভীর প্রেম করে লিভ টুগেদার করার পরে বিয়ে করার পর অনেকের ডিভোর্স হতে দেখেছি। ডিভোর্সের পর একে অপরের বেস্ট ফ্রেন্ড হতে দেখেছি। মানুষ বড়ই বিচিত্র প্রজাতি, আর তাদের মন আরও অনেক বেশি বিচিত্র।
সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, মানুষ জানে না যে সে কী চায়। যে কাপল সোশ্যাল মিডিয়ায় পারফেক্ট দেখায়, তাদের সমস্যা সবচেয়ে বেশি। স্ত্রী প্রতিনিয়ত স্বামীকে নজরদারিতে রাখার জন্য চেক করছে। আর স্বামী তার স্ত্রীর এসব অত্যাচার অ্যাভয়েড করার জন্য দিনরাত কাজের অজুহাত দিয়ে অফিসে সময় কাটাচ্ছে।
সেলিব্রিটিদের কথা আর না-ইবা ঘাঁটাই। নব্বইয়ের দশকে প্রেসিডেন্ট ক্লিনটনের সঙ্গে মনিকা লিউনেস্কির ঘটনা বেশ আলোড়ন ছড়িয়েছিল। কিন্তু হিলারি তাকে ছেড়ে যাননি। হিলারির কি কোনো কিছুর অভাব ছিল? তিনি ইচ্ছা করলেই চলে যেতে পারতেন কিন্তু যাননি। এটা তার চয়েস ছিল।
প্রিন্সেস ডায়ানার সঙ্গে চার্লসের ডিভোর্সের মূল কারণ ছিল চার্লসের পরকীয়া। কিন্তু মিডিয়া হাইলাইট করেছে ডায়ানাকে। যা-ই হোক, সেগুলো রাজা-রানিদের ব্যাপার-স্যাপার।
প্রতিনিয়ত পৃথিবীর বুকে অনেক ঘটনাই ঘটে, যা আমার আপনার অজানা। সেলিব্রিটিদের ঘটনাগুলো অনেক রসালো। সেগুলো নিয়ে আমরা অনেক মাতামাতি করি, আনন্দ পাই।
নিজেকে বোঝার চেষ্টা করুন, নিজেকে নিজের মতো করে গড়ে তুলুন। আপনার কীভাবে ভালো লাগবে, আপনি কীভাবে ভালো থাকবেন, শান্তিতে থাকবেন, সেটাকেই প্রায়োরিটি দিন। জীবনে উন্নতি করার জন্য শর্টকাট কোনো উপায় নেই। সে জন্য সহজ কোনো পন্থা অবলম্বন না করাই ভালো। আর মিথ্যাচার তো মোটেই নয়। যদিও সাময়িকের জন্য হয়তো এগুলো আনন্দ দেবে, কিন্তু অচিরেই ভেঙে যায়।
জীবনে আপনার আটকে থাকার কারণ কী। আশপাশের কারও সঙ্গে নিজেকে কমপেয়ার না করে নিজেকে আবিষ্কার করুন, নিজেকে ভালোবাসুন। দেখবেন, অনেক অনেক ভালো আছেন, ভালো থাকবেন। আশপাশের মানুষজনকে আপনজনকে ভালোবাসবেন, প্রকৃতিকে ভালোবাসবেন, দেখবেন ভালো আছেন।
ঠিক এই মুহূর্তে, এই আগস্টের সকালবেলা মেরিল্যান্ডের ক্রেপ মার্টল গাছে থোকায় থোকায় ফুটে থাকা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করায়, ভালোবাসায় আমি আটকে আছি।
আমি অফিস থেকে এলে আমার ছেলে দৌড়ে এসে যখন জড়িয়ে ধরে বলে, তোমার আজকের অফিসের দিনটা কেমন ছিল, আমি তোমাকে ভালোবাসি এবং তোমাকে মিস করেছি; ঠিক এই মুহূর্তে এগুলোই আমার ভালো লাগা এবং ভালোবেসে আমার আটকে থাকার কারণ।