রাজনীতি পেশার কোনো জাত আছে কি?

প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩:০৬ , অনলাইন ভার্সন
রাজনীতি নিয়ে মানুষ সব সময় আলোচনায় মেতে থাকে। বলা হয়, রাজনীতির বাইরে কিছু নেই। অর্থনীতি, সংস্কৃতি, সমাজনীতি, পারিবারিক বন্ধনÑসবকিছুই নাকি রাজনীতির অন্তর্গত। রাজনীতি নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ, রাজনীতি নিয়ে যুদ্ধবিগ্রহ। প্রাণহানি, রক্তপাত, হানাহানি সব রাজনীতি। সভ্যতার গোড়াপত্তন, সভ্যতার এগিয়ে চলা, এমনকি পারিবারিক বন্ধনের মধ্যেও নাকি রাজনীতি ক্রিয়াশীল। আবার অন্যদিকে বলা যায়, সবই অর্থনীতির অঙ্গ। অর্থনীতি ছাড়া নাকি সবকিছুই অর্থহীন। যার অর্থশক্তি বেশি, তার সবকিছুই শক্ত। বলীয়ান। সমাজের মাতব্বর।

তবে কি রাজনীতি পেশা? পেশা হলে কোন জাতের পেশা। রাজনীতি যারা করেন, আমরা সাধারণভাবে তাদের বলি রাজনীতিক। তাহলে রাজনীতির অর্থনীতি কী? রাজনীতিকেরা কোন পেশায় নিয়োজিত। তাদের আয়-রোজগারের উৎস কী? একেকজন রাজনীতিক ভিন্ন ভিন্ন দল করেন, সেই সব দলের অনেক নেতাকর্মী। কেউ সার্বক্ষণিক। কেউ পার্টটাইম। সেসব দল চলে কীভাবে? তাদের নিয়ে হাজার রকম প্রশ্ন। হাজার রকম কৌতূহল এবং রাজনীতির পেশা, আয়ের উৎস কী? খুব ছোট দলের নেতাদেরও শান-শওকত দেখলে কৌতূহল হয়। রাজনীতি যদি পেশা হয়, তবে সেই পেশার নাম কী? আমলা-কামলা, কৃষিজীবী, শ্রমজীবী, মিন্তি, কামার-কুমার? নাকি পরজীবী, পরগাছা?

যারা জনগণের ভোট নিয়ে মন্ত্রী-এমপি হন, তাদের যেমন বেতন আছে, ভাতা আছে। সরকারি নানা রকম সুযোগ-সুবিধা আছে। অন্যদের? মন্ত্রী-এমপি ছাড়া একেক দলের হাজার হাজার কর্মী আছেন। তাদের আয়-রোজগার কী? তৃণমূল থেকে শীর্ষ পর্যায়ের কত নেতাকর্মী? যারা গভীর রাত পর্যন্ত জাগে, অনেক বেলা করে যাদের ঘুম ভাঙে, তাদের দৃশ্যমান কোনো পেশা গোচরীভূত হয় না। এমনকি বাস-ট্রাক বোঝাই করে যাদের শহরতলি থেকে হাজার হাজার মানুষ নিয়ে আসা হয়, তাদেরকে মজুরি দিতে দেখা যায়। তাদেরও পেশা আছে, ‘খ্যাপ খাটা’। কিন্তু ওদের যারা পারিশ্রমিক দিয়ে থাকে, সেই রাজনীতিকদের পেশা খুঁজে পাওয়া যায় না।

রাজনীতিবিদদের পেশা যদি রাজনীতি হয়, তবে সে পেশার পারিশ্রমিক কত, অর্থের উৎস কী? এ নিয়ে প্রশ্ন আজকের নয়। রাজনীতি যেমন পুরোনো, তাদের পেশা নিয়ে মানুষের প্রশ্নও পুরোনো। তবে তাদের প্রশ্নের উত্তর না পেলেও মানুষ তার নিজের মতো করে প্রশ্নের উত্তর খুঁজে নেয়। সে উত্তর খুব একটা পজিটিভ হয় না। এ জন্যই অনেক রাজনীতিবিদকে নিয়ে মানুষ নানা কথা বলেন। যাদের আয় এবং কর্মের কোনো স্বচ্ছতা থাকে না, তাদের নিয়ে মানুষের অনেক প্রশ্ন থাকে, তা নেগেটিভ। রাজনীতিবিদেরা যে শান শওকত নিয়ে সমাজে চলাফেরা করেন, সেই ধারণা খুব সম্মানের চোখে দেখে বলে মনে হয় না। কেয়ার করেন, তা-ও নয়।

জনগণের এই পারসেপশনকে কেয়ার করতে হয় পশ্চিমের রাজনীতিবিদদের। সে কারণেই মানুষের যেকোনো প্রশ্নের সামনেই, প্রমাণিত হওয়ার আগেই তাদের অহরহ পদত্যাগ করতে দেখা যায়। যার সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ ব্রিটেনে মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক এবং রুশনারা আলীÑদুই এমপির পদত্যাগ। এ ছাড়া অনেক তুচ্ছ কারণেই অনেক দেশের প্রধানমন্ত্রী, চ্যান্সেলর, প্রেসিডেন্টদের অহরহ পদত্যাগ করতে দেখা যায় এটা তাদের ‘কালচার’। এবং রাজনীতির এই উচ্চ মানবিক সংস্কৃতি সব দেশের রাজনীতিকদেরই রপ্ত করা এবং মেনে চলা উচিত। আমাদের দেশের বেলায় তার উল্টো। তারা মনেই করে না সাধারণ মানুষের ধারণাকে সম্মান জানাতে হয়। যদি তাদের জন-আক্রোশে পদত্যাগ করতে না হয়, তবে তারা সারা জীবন পদে বহাল থাকতে চান। তাদের কাছে মান-মর্যাদা বড় নয়, বড় হচ্ছে পদ। তাই তো তাদের নামে অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি, ঘুষ খাওয়ার অভিযোগ উঠলেও পদ আঁকড়ে থাকতে দেখা যায়। মানুষেরও ধারণা হয় হয়তো, ও সবই আমাদের দেশের রাজনীতিকদের পেশা।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041