অনেক ভার ওসিদের। থানার মা-বাপ। বাংলায় তাদের পদবি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এ ভার নিতে গিয়ে সম্প্রতি তাদের কারো কারো কাণ্ডকীর্তি গণমাধ্যমে গরম খবর হয়ে এসিতে ওসি কেন ছি-ছি?
আসছে। বদলির আদেশের পর টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম থানায় লাগানো এসি, টেলিভিশন, আইপিএস ও সোফা নিয়ে গেছেন ভ্যানে তুলে। অন্যান্য ওসিরা কী এমন করেন? নাকি এগুলো তার ভূঞাপুর থানায় যোগদানের পর আনা হয়েছিল বলেই?
গণমাধ্যমে খবর না হলে হয় তো এসব প্রশ্ন আসতো না। এই এসি, টেলিভিশন, আইপিএস থানায় দিয়েছিলেন সেখানকার যমুনা নদীর বালুমহাল পরিচালনাকারী ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীরা। তবে, ওসি ফরিদের দাবি, এগুলো তার ব্যক্তিগত টাকায় কেনা। স্বাভাবিকভাবে ওসির রুমে এসি থাকারই কথা না। ব্যাক্তিগত টাকা দিয়েও সরকারি অফিসে লাগাতে পারেন না। কিন্তু বাস্তবে লাগান। আরো কতো কিছুই করেন। মাঝেমধ্যে ঘটনাচক্রে দু’য়েকজনের এফডি, ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, বউ, মেয়ে, মা, শাশুড়ি, শ্যালিকা এমন কি কাজের মেয়ের নামেও টাকা লুকানোর বিচ্ছিন্ন তথ্য আসে। সেগুলোও নিজের টাকায়?
কুমিল্লার নাঙলকোর্ট, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ থানার ওসি গণমাধ্যমে এসেছেন আরেকভাবে। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানো জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ থানার ওসি শ্যামলচন্দ্র ধরকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। কুমিল্লা নাঙলকোর্টের ওসি ফারুক আহমেদকেও তাই করা হয়েছে। কী অপরাধ তাদের?
সেদিন দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার এক আলোচনায় ওসি শ্যামলচন্দ্র ধরের বক্তব্য ছিল আওয়ামী লীগ নেতাদের চেয়েও ধারে-ভারে কড়া। ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে রক্ষা নাই’ উল্লেখ করে যে কোনো মূল্যে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখার কড়া আহ্বান জানান ওসি শ্যামল। তার ভাইরাল হওয়া ২ মিনিট ১০ সেকেন্ডের ভিডিও ক্লিপটি স্যোশাল মিডিয়ায় বেশ আলোড়ন তৈরি করে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জামালপুর-১ (দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ। ওসি সংসদ সদস্যকে ‘নয়নের মণি’ বিশেষণ দিয়ে এক পর্যায়ে বলেন, ‘সামনে আমাদের নির্বাচন। আওয়ামী লীগকে ‘নিজের দল’ উল্লেখ করে বলেন, আপনারা সবাই সতর্ক দৃষ্টি রেখে আমাদের দলের জন্য কাজ করবেন, যাতে আমরা পুনরায় আওয়ামী লীগ সরকারকে বিপুল ভোটে জয়ী করতে পারি।’ বেশি বা বাড়তি কী বলেছেন এই ওসি?
কুমিল্লার নাঙলকোর্টের ওসি ফারুক আহমেদের বক্তব্যও ছিল এমনই। ভাইরাল হওয়া ক্লিপে শোনা যায় আওয়ামী লীগের ক্ষমতা ধরে রাখার আহ্বানের পাশাপাশি তার বিশেষ দরদ অর্থমন্ত্রীর জন্য। বলেন, নাঙ্গলকোটের মানুষ গণহারে ও গণমানুষের মতো করে উনাকে (আহম মুস্তফা কামাল) আবার নির্বাচিত করবেন, এটা আমার দিক থেকে আপনাদের কাছে মিনতি। দেওয়ানগঞ্জের ওসির মতো তারও কথা, ‘আওয়ামী লীগ আমাদের দল’ আগামীতেও আমাদের দলকে জেতাতে হবে’। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের প্রজা সেবক না হয়ে এভাবে প্রকাশ্যে ক্ষমতাসীন দলের সেবক হয়ে ওঠা নিয়েই মূলত এতো কথা। ওসিরা মাঠ প্রশাসনের বড় কর্তা। নির্বাচনের ফলাফলে ম্যাটার করেন। তাদের কী সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে মন চায় না?
লেখক : সাংবাদিক-কলামিস্ট; ডেপুটি হেড অব নিউজ, বাংলাভিশন, ঢাকা।
আসছে। বদলির আদেশের পর টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম থানায় লাগানো এসি, টেলিভিশন, আইপিএস ও সোফা নিয়ে গেছেন ভ্যানে তুলে। অন্যান্য ওসিরা কী এমন করেন? নাকি এগুলো তার ভূঞাপুর থানায় যোগদানের পর আনা হয়েছিল বলেই?
গণমাধ্যমে খবর না হলে হয় তো এসব প্রশ্ন আসতো না। এই এসি, টেলিভিশন, আইপিএস থানায় দিয়েছিলেন সেখানকার যমুনা নদীর বালুমহাল পরিচালনাকারী ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীরা। তবে, ওসি ফরিদের দাবি, এগুলো তার ব্যক্তিগত টাকায় কেনা। স্বাভাবিকভাবে ওসির রুমে এসি থাকারই কথা না। ব্যাক্তিগত টাকা দিয়েও সরকারি অফিসে লাগাতে পারেন না। কিন্তু বাস্তবে লাগান। আরো কতো কিছুই করেন। মাঝেমধ্যে ঘটনাচক্রে দু’য়েকজনের এফডি, ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, বউ, মেয়ে, মা, শাশুড়ি, শ্যালিকা এমন কি কাজের মেয়ের নামেও টাকা লুকানোর বিচ্ছিন্ন তথ্য আসে। সেগুলোও নিজের টাকায়?
কুমিল্লার নাঙলকোর্ট, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ থানার ওসি গণমাধ্যমে এসেছেন আরেকভাবে। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানো জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ থানার ওসি শ্যামলচন্দ্র ধরকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। কুমিল্লা নাঙলকোর্টের ওসি ফারুক আহমেদকেও তাই করা হয়েছে। কী অপরাধ তাদের?
সেদিন দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার এক আলোচনায় ওসি শ্যামলচন্দ্র ধরের বক্তব্য ছিল আওয়ামী লীগ নেতাদের চেয়েও ধারে-ভারে কড়া। ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে রক্ষা নাই’ উল্লেখ করে যে কোনো মূল্যে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখার কড়া আহ্বান জানান ওসি শ্যামল। তার ভাইরাল হওয়া ২ মিনিট ১০ সেকেন্ডের ভিডিও ক্লিপটি স্যোশাল মিডিয়ায় বেশ আলোড়ন তৈরি করে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জামালপুর-১ (দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ। ওসি সংসদ সদস্যকে ‘নয়নের মণি’ বিশেষণ দিয়ে এক পর্যায়ে বলেন, ‘সামনে আমাদের নির্বাচন। আওয়ামী লীগকে ‘নিজের দল’ উল্লেখ করে বলেন, আপনারা সবাই সতর্ক দৃষ্টি রেখে আমাদের দলের জন্য কাজ করবেন, যাতে আমরা পুনরায় আওয়ামী লীগ সরকারকে বিপুল ভোটে জয়ী করতে পারি।’ বেশি বা বাড়তি কী বলেছেন এই ওসি?
কুমিল্লার নাঙলকোর্টের ওসি ফারুক আহমেদের বক্তব্যও ছিল এমনই। ভাইরাল হওয়া ক্লিপে শোনা যায় আওয়ামী লীগের ক্ষমতা ধরে রাখার আহ্বানের পাশাপাশি তার বিশেষ দরদ অর্থমন্ত্রীর জন্য। বলেন, নাঙ্গলকোটের মানুষ গণহারে ও গণমানুষের মতো করে উনাকে (আহম মুস্তফা কামাল) আবার নির্বাচিত করবেন, এটা আমার দিক থেকে আপনাদের কাছে মিনতি। দেওয়ানগঞ্জের ওসির মতো তারও কথা, ‘আওয়ামী লীগ আমাদের দল’ আগামীতেও আমাদের দলকে জেতাতে হবে’। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের প্রজা সেবক না হয়ে এভাবে প্রকাশ্যে ক্ষমতাসীন দলের সেবক হয়ে ওঠা নিয়েই মূলত এতো কথা। ওসিরা মাঠ প্রশাসনের বড় কর্তা। নির্বাচনের ফলাফলে ম্যাটার করেন। তাদের কী সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে মন চায় না?
লেখক : সাংবাদিক-কলামিস্ট; ডেপুটি হেড অব নিউজ, বাংলাভিশন, ঢাকা।