
আলাউদ্দিন কবির, কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) থেকে : বাসা থেকে বের হওয়ার পূর্বে নিহত পুলিশ অফিসার দিদারুল ইসলাম রতনের অন্তঃসত্বা স্ত্রী ইমা বলেছিলেন, ‘আজ না গেলে হয় না; ফোন দিয়ে না করে দাও।’ কিন্তু দিদারুল বললেন না চলে যাই। - এই কথাগুলো কান্নাজড়িত কণ্ঠে বললেন দিদারুলের ফুফু তাহেরা বেগম দুলি।
২৯ জুলাই মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সকালে দিদারুলের মৃত্যু সংবাদ শুনে হতভম্ব হয়ে যান তাহেরা বেগম দুলি। ইমা (নিহত দিদারুলের স্ত্রী) ফোনে এই কথাগুলো বার বার বলছিলেন, আর মুর্ছা যাচ্ছিলেন।
তাহেরা বেগম দুলি আরো জানান, মৃত্যুর ঘণ্টা দুয়েক আগে দিদারুল তার দুই বোন নাদিমা ও নাঈমার সাথে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন। কিন্তু তিনি কি জানতো আপনজনদের সাথে এটাই তার শেষ কথা!
২৮ জুলাই সোমবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের মিডটাউনে একটি অফিস ভবনে বন্দুকধারী এলোপাতাড়ি গুলি চালায়, যাতে দিদারুল ইসলামসহ চারজন নিহত হন। পরে বন্দুকধারী নিজেও আত্মহত্যা করে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পারিবারিক সূত্র জানায়, ২০০৯ সালের অক্টোবরে বাবা-মা ও ২ বোন নাদিমা ও নাঈমাসহ যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান রতন। কিছুদিন সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে চাকুরি করেন। সাড়ে ৩ বছর আগে তিনি পুলিশে যোগ দেন। পুত্রের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পিতা আব্দুর রব অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে রয়েছেন। মা মিনারা বেগম শয্যাশায়ী। একমাত্র পুত্র সন্তানকে হারিয়ে আত্মীয় স্বজনদের সাথে ফোনে শুধু কাঁদছেন। নিহত রতনের সন্তান সম্ভবা স্ত্রী ইমার আহাজারির শেষ নেই। পুত্র আদিয়াত (৮) ও আজান (৬) নামক দুটি ফুটফুটে সন্তান এখনো জানে না বাবা ঘরে ফিরবে না। দিদারুলের ফুফাতো ভাই আব্দুল আজিজসহ দেশ ও প্রবাসের আত্মীয়-স্বজন সকলেই নির্বাক। নিউইয়র্ক থেকে কুলাউড়া শোকস্তব্ধ। বাকরুদ্ধ আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী, বাল্যবন্ধুরা। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত জানাজানি হলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কুলাউড়াসহ প্রবাস থেকে অনেকেই শোক জানিয়ে আবেগময় বার্তা দিচ্ছেন।
দিদারুলের ডাকনাম রতন। বাবা-মা আদর করে তাকে এই নামেই ডাকতেন। পাড়া প্রতিবেশী, বাল্যবন্ধু ও স্কুল-কলেজ জীবনের সহপাঠীরাও রতন নামেই চিনতেন। ভদ্র, নম্র, শান্ত ওই তরুণ কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় ২০০৯ সালের অক্টোবরে পরিবারের সাথে পাড়ি দেন নিউইয়র্কে। স্বপ্নের দেশ আমেরিকায় উন্নত জীবন গড়তে যাওয়ার সুযোগ পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত ছিলেন রতন। বন্ধুদের সাথে কথা বলার সময় এই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতেন। বন্ধুকধারীর হামলায় দিদারুল ইসলাম রতনের মৃত্যুতে নিউইয়র্কবাসীর পাশাপাশি শোকাভিভূত কুলাউড়াবাসী। প্রিয় রতনের মৃত্যু অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী আর বাল্যবন্ধুদের শত শত শোকাহত পোস্টে ছেয়ে গেছে।
রতনের ফুফু তাহেরা বেগম দুলি কান্না জড়িত কন্ঠে আরো বলেন, আমার ভাইপোটা গত বছর মার্চে দেশে এসেছিলো। কত জায়গায় ঘুরিয়েছে। কে জানতো এটাই তার দেশে শেষ আসা। দায়িত্বের প্রতি অবিচল থেকে জীবন উৎসর্গ করেছে। আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করুন।
স্থানীয় বাসিন্দা কুলাউড়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর তানভীর আহমদ শাওন বলেন, রতন খুবই আমায়িক ব্যবহারের অধিকারী ছিলো, পাড়ায় খেলাধুলা করতো, মসজিদে সাহায্য সহযোগিতা করতো। পেশাগত দায়িত্ব পালনে এমন মৃত্যু প্রমাণ করে দায়িত্বের প্রতি তার আন্তরিকতার। আমরা শোকাবহ।
সংগঠক সিরাজুল আলম জুবেল লিখেছেন, ‘ঘুম চোখে ফোনটা হাতে নিয়ে ফেসবুকে ঢুকতেই আঁতকে উঠি। প্রথমে খবরটি দেখে কিছুক্ষণ নিজেকে বিশ্বাস হচ্ছিলনা। এটাতো রতনের ছবি!’
কুলাউড়া দক্ষিণবাজারের বাসিন্দা পর্তুগাল প্রবাসী সৈয়দ তানভীর মোজাম্মেল শোভন বলেন, আমরা দিদারুলকে রতন নামে ডাকতাম। রতন আমার ছোট ভাই ওহির বাল্য বন্ধু। খুবই ভাল, নম্র-ভদ্র, অমায়িক একটা ছেলে ছিল রতন। আল্লাহ ছোট ভাই রতনকে শহীদ এবং জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন।
বাল্যবন্ধু ফ্রান্স প্রবাসী তালুকদার ফখরুল, মাহবুবুল আলম রাসেল ও তপন লিখেছেন, মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে, বন্ধু রতন আর আমাদের মাঝে নেই। রতনের মতো একজন ভালো এবং সৎ বন্ধু পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। মহান আল্লাহ তায়ালা রতনকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন এবং এই কঠিন সময়ে তার পরিবারকে ধৈর্য্য ধরার শক্তি দিন।
রবিউল সানি মামুন বলেন, নবীন চন্দ্র সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে একসাথে পড়েছি। যেমন মেধাবী ছিলো তেমনি অত্যন্ত ভদ্র ও নম্র ছিলো। নিউইয়র্ক প্রবাসী রতনের আরেক বন্ধু বিশ্বজিৎ দেবনাথ বলেন, ‘আমার স্কুল বন্ধু ছিলো। অনেক খারাপ লাগছে। পরপারে ভালো থেকো বন্ধু।’
রতনের প্রতিবেশী মাগুরার বাসিন্দা ইয়াকুব তাজুল মহিলা ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক আবু জাফর সাদেক ও আনন্দ বিদ্যাপীঠের অধ্যক্ষ সুজিত দেব বলেন, আমরা শোকস্তব্ধ। তার উৎসর্গকৃত জীবনটা দেশপ্রেম ও দায়িত্বের প্রতি এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
সিলেটের বাসিন্দা বিশিষ্ট সাংবাদিক ও শিক্ষক সালমান ফরিদ অনেকটা ক্ষোভের সাথে লিখেছেন, এটি আমেরিকা! যে দেশের লোকজন মাঝেমধ্যে শখ করে রাইফেল হাতে প্রকাশ্যে রাস্তায় নেমে পড়ে। হাতের নিশানা সোজা করতে তখন তারা ব্রাশফায়ার করে মানুষ হত্যার মহোৎসবে মেতে উঠে। দুদিন আগেও এরকম ঘটনা দেখেছে আমেরিকা। ছবি সেই ঘটনার স্বাক্ষী। সেই বীর পুরুষ! আজকাল এই ফ্যাশন আমেরিকার বাইরেও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে! সবশেষ থাইল্যান্ডে দেখা গেছে এই কালচার। এদের কাছে জীবনের মূল্য বড় তুচ্ছ!
২৯ জুলাই মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সকালে দিদারুলের মৃত্যু সংবাদ শুনে হতভম্ব হয়ে যান তাহেরা বেগম দুলি। ইমা (নিহত দিদারুলের স্ত্রী) ফোনে এই কথাগুলো বার বার বলছিলেন, আর মুর্ছা যাচ্ছিলেন।
তাহেরা বেগম দুলি আরো জানান, মৃত্যুর ঘণ্টা দুয়েক আগে দিদারুল তার দুই বোন নাদিমা ও নাঈমার সাথে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন। কিন্তু তিনি কি জানতো আপনজনদের সাথে এটাই তার শেষ কথা!
২৮ জুলাই সোমবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের মিডটাউনে একটি অফিস ভবনে বন্দুকধারী এলোপাতাড়ি গুলি চালায়, যাতে দিদারুল ইসলামসহ চারজন নিহত হন। পরে বন্দুকধারী নিজেও আত্মহত্যা করে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পারিবারিক সূত্র জানায়, ২০০৯ সালের অক্টোবরে বাবা-মা ও ২ বোন নাদিমা ও নাঈমাসহ যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান রতন। কিছুদিন সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে চাকুরি করেন। সাড়ে ৩ বছর আগে তিনি পুলিশে যোগ দেন। পুত্রের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পিতা আব্দুর রব অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে রয়েছেন। মা মিনারা বেগম শয্যাশায়ী। একমাত্র পুত্র সন্তানকে হারিয়ে আত্মীয় স্বজনদের সাথে ফোনে শুধু কাঁদছেন। নিহত রতনের সন্তান সম্ভবা স্ত্রী ইমার আহাজারির শেষ নেই। পুত্র আদিয়াত (৮) ও আজান (৬) নামক দুটি ফুটফুটে সন্তান এখনো জানে না বাবা ঘরে ফিরবে না। দিদারুলের ফুফাতো ভাই আব্দুল আজিজসহ দেশ ও প্রবাসের আত্মীয়-স্বজন সকলেই নির্বাক। নিউইয়র্ক থেকে কুলাউড়া শোকস্তব্ধ। বাকরুদ্ধ আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী, বাল্যবন্ধুরা। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত জানাজানি হলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কুলাউড়াসহ প্রবাস থেকে অনেকেই শোক জানিয়ে আবেগময় বার্তা দিচ্ছেন।
দিদারুলের ডাকনাম রতন। বাবা-মা আদর করে তাকে এই নামেই ডাকতেন। পাড়া প্রতিবেশী, বাল্যবন্ধু ও স্কুল-কলেজ জীবনের সহপাঠীরাও রতন নামেই চিনতেন। ভদ্র, নম্র, শান্ত ওই তরুণ কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় ২০০৯ সালের অক্টোবরে পরিবারের সাথে পাড়ি দেন নিউইয়র্কে। স্বপ্নের দেশ আমেরিকায় উন্নত জীবন গড়তে যাওয়ার সুযোগ পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত ছিলেন রতন। বন্ধুদের সাথে কথা বলার সময় এই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতেন। বন্ধুকধারীর হামলায় দিদারুল ইসলাম রতনের মৃত্যুতে নিউইয়র্কবাসীর পাশাপাশি শোকাভিভূত কুলাউড়াবাসী। প্রিয় রতনের মৃত্যু অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী আর বাল্যবন্ধুদের শত শত শোকাহত পোস্টে ছেয়ে গেছে।
রতনের ফুফু তাহেরা বেগম দুলি কান্না জড়িত কন্ঠে আরো বলেন, আমার ভাইপোটা গত বছর মার্চে দেশে এসেছিলো। কত জায়গায় ঘুরিয়েছে। কে জানতো এটাই তার দেশে শেষ আসা। দায়িত্বের প্রতি অবিচল থেকে জীবন উৎসর্গ করেছে। আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করুন।
স্থানীয় বাসিন্দা কুলাউড়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর তানভীর আহমদ শাওন বলেন, রতন খুবই আমায়িক ব্যবহারের অধিকারী ছিলো, পাড়ায় খেলাধুলা করতো, মসজিদে সাহায্য সহযোগিতা করতো। পেশাগত দায়িত্ব পালনে এমন মৃত্যু প্রমাণ করে দায়িত্বের প্রতি তার আন্তরিকতার। আমরা শোকাবহ।
সংগঠক সিরাজুল আলম জুবেল লিখেছেন, ‘ঘুম চোখে ফোনটা হাতে নিয়ে ফেসবুকে ঢুকতেই আঁতকে উঠি। প্রথমে খবরটি দেখে কিছুক্ষণ নিজেকে বিশ্বাস হচ্ছিলনা। এটাতো রতনের ছবি!’
কুলাউড়া দক্ষিণবাজারের বাসিন্দা পর্তুগাল প্রবাসী সৈয়দ তানভীর মোজাম্মেল শোভন বলেন, আমরা দিদারুলকে রতন নামে ডাকতাম। রতন আমার ছোট ভাই ওহির বাল্য বন্ধু। খুবই ভাল, নম্র-ভদ্র, অমায়িক একটা ছেলে ছিল রতন। আল্লাহ ছোট ভাই রতনকে শহীদ এবং জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন।
বাল্যবন্ধু ফ্রান্স প্রবাসী তালুকদার ফখরুল, মাহবুবুল আলম রাসেল ও তপন লিখেছেন, মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে, বন্ধু রতন আর আমাদের মাঝে নেই। রতনের মতো একজন ভালো এবং সৎ বন্ধু পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। মহান আল্লাহ তায়ালা রতনকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন এবং এই কঠিন সময়ে তার পরিবারকে ধৈর্য্য ধরার শক্তি দিন।
রবিউল সানি মামুন বলেন, নবীন চন্দ্র সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে একসাথে পড়েছি। যেমন মেধাবী ছিলো তেমনি অত্যন্ত ভদ্র ও নম্র ছিলো। নিউইয়র্ক প্রবাসী রতনের আরেক বন্ধু বিশ্বজিৎ দেবনাথ বলেন, ‘আমার স্কুল বন্ধু ছিলো। অনেক খারাপ লাগছে। পরপারে ভালো থেকো বন্ধু।’
রতনের প্রতিবেশী মাগুরার বাসিন্দা ইয়াকুব তাজুল মহিলা ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক আবু জাফর সাদেক ও আনন্দ বিদ্যাপীঠের অধ্যক্ষ সুজিত দেব বলেন, আমরা শোকস্তব্ধ। তার উৎসর্গকৃত জীবনটা দেশপ্রেম ও দায়িত্বের প্রতি এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
সিলেটের বাসিন্দা বিশিষ্ট সাংবাদিক ও শিক্ষক সালমান ফরিদ অনেকটা ক্ষোভের সাথে লিখেছেন, এটি আমেরিকা! যে দেশের লোকজন মাঝেমধ্যে শখ করে রাইফেল হাতে প্রকাশ্যে রাস্তায় নেমে পড়ে। হাতের নিশানা সোজা করতে তখন তারা ব্রাশফায়ার করে মানুষ হত্যার মহোৎসবে মেতে উঠে। দুদিন আগেও এরকম ঘটনা দেখেছে আমেরিকা। ছবি সেই ঘটনার স্বাক্ষী। সেই বীর পুরুষ! আজকাল এই ফ্যাশন আমেরিকার বাইরেও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে! সবশেষ থাইল্যান্ডে দেখা গেছে এই কালচার। এদের কাছে জীবনের মূল্য বড় তুচ্ছ!