ছোটবেলায় মাথায় বলের আঘাত, বড় হয়ে নিল ভুল প্রতিশোধ

প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৫, ১১:৩৪ , অনলাইন ভার্সন
ছোটবেলায় ন্যাশনাল ফুটবল লিগ (এনএফএল)-এর খেলা দেখার সময় ম্যনহাটনে বন্দুক হামলাকারী ২৭ বছরের শেন ট্যামুরার মাথায় বলের আঘাত লেগেছিল। এরপর থেকে মানসিক সমস্যা দেখা দেয় তার। মাঝেমধ্যে মাথায় অসহনীয় যন্ত্রণাও হতো। অনেকবার চিকিৎসা নিয়েও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেনি সে। 
যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ শেন ট্যামুরা ছোটকাল থেকে এনএলএফ খেলোয়াড়দের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে। সেই প্রতিশোধের ভয়ঙ্কর রূপ দিল সে বড় হয়ে, ২৭ বছর বয়সে। গত ২৮ জুলাই সোমবার ম্যানহাটনে হামলা করে ট্যামুরা কেড়ে নেয় বাংলাদেশি পুলিশ অফিসারসহ ৪ নিরীহ প্রাণ। আত্মাহুতি দিয়েছে নিজেও। ভুল করে ভবনের অন্য ফ্লোরে না গেলে এবং এনএফএল অফিসে ঢুকে পড়লে ঘটতে পারতো আরো বেশী প্রাণহানির ঘটনা। ভবনটিতে বেসরকারি ইকুইটি জায়ান্ট ব্ল্যাকস্টোন এবং ন্যাশনাল ফুটবল লীগ (এনএফএল) সহ দেশের শীর্ষস্থানীয় কিছু আর্থিক সংস্থা রয়েছে। একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 
হামলাকারী শেন ট্যামুরা যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা ছিল। পরবর্তীতে লাস ভেগাসে চলে যায়। নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্যামুরা লাস ভেগাসের একটি ক্যাসিনোতে নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করত।
ট্যামুরার ছবি সম্বলিত একটি পরিচয়পত্র সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী, তার কাছে একটি গোপন আগ্নেয়াস্ত্রের পারমিট ছিল। ২০২২ তারিখে ১৪ জুন ইস্যু করা এই পারমিট পাঁচ বছরের জন্য বৈধ ছিল।
২০১৫ সালের একটি ভিডিও থেকে জানা যায় শেন ট্যামুরা গ্রানাডা হিলসের হয়ে ফুটবল খেলতেন। ভাইরাল একটি পুরনো ভিডিওতে তাকে নিজের ফুটবল দলের জয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে কথা বলতে দেখা গেছে।
পুলিশের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, কর্মকর্তারা হামলায় ব্যবহার হওয়া ট্যামুরার রাইফেল উদ্ধার করেছেন। পালমেটো স্টেট আর্মোরি এআর-১৫ অ্যাসল্ট রাইফেলটি রক্তে মাখা ছিল।
ঘটনাস্থলে ট্যামুরার নামে নেভাদার নম্বর প্লেটযুক্ত একটি গাড়ি উদ্ধার করেছে পুলিশ। গাড়ির ভেতরে পুলিশ একটি রাইফেলের কেস, একটি লোডেড রিভলবার, গুলি এবং ম্যাগাজিন, একটি ব্যাকপ্যাক এবং ট্যামুরার ওষুধের প্রেসক্রিপশন খুঁজে পেয়েছে। বোম স্কোয়াড গাড়িটি তল্লাশি চালিয়েছে। গাড়িটিতে কোন বিস্ফোরক পাওয়া যায়নি।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে যে ট্যামুরার গাড়িটি ২৬ জুলাই কলোরাডো এবং সোমবার বিকেল ৪টা ২৪ মিনিটে কলম্বিয়া, নিউ জার্সি ভ্রমণ করে গাড়িটি নিউইয়র্ক সিটিতে প্রবেশ করে
নিউ ইয়র্ক পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ট্যামুরার মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার ইতিহাস রয়েছে। তবে ঠিক কি কারণে ট্যামুরা এই হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে তার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
‘আমার মস্তিষ্ক নিয়ে গবেষণা করো প্লিজ’: ম্যানহাটনের বহুতল ভবনে হামলাকারীর পকেট থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে সিএনএন। যেখানে বন্দুকধারী লিখেছে, সে ‘ক্রনিক ট্রম্যাটিক এনসেফালোপ্যাথি (সিটিই)’ রোগে ভুগছিল। 
সিটিই হলো আলঝেইমারের মতো মস্তিষ্কের রোগ। যা দীর্ঘদিনে মাথায় আঘাতের ফলে হতে পারে। সিএনএন জানিয়েছে, এটি সাধারণত আমেরিকার ফুটবল খেলোয়াড়দের মধ্যে বেশি দেখা যায়। 
তদন্ত কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, বন্দুকধারীর মানসিক অসুস্থতার পেছনে ফুটবল খেলার সম্পর্ক থাকতে পারে।
তদন্তকারীরা বলছেন, চিরকুটটি গুলির ঘটনার পরে খুঁজে পাওয়া গেছে। এতে লেখা ছিল, ‘টেরি লং ফুটবল আমাকে সিটিই দিয়েছে। আর এটা আমাকে এক গ্যালন অ্যান্টিফ্রিজ খেতে বাধ্য করেছে। তুমি এনএফএল (আমেরিকার ন্যাশনাল ফুটবল লিগ) এর বিরুদ্ধে যেতে পারো না, ওরা তোমাকে গুঁড়িয়ে দেবে।’
টেরি লং ছিলেন পিটসবার্গ স্টিলার্সের (ফুটবল দল) একজন সাবেক খেলোয়াড়। তিনিও সিটিইতে আক্রান্ত ছিলেন এবং ২০০৫ সালে আত্মহত্যা করেন।
চিরকুটে আরও লেখা ছিল, ‘আমার মস্তিষ্কটা গবেষণা করো প্লিজ, আমি দুঃখিত। রিককে বলে দিও আমি সবকিছুর জন্য দুঃখিত।’
সিএনএন জানিয়েছে, বহুতল ভবনটিতে ন্যাশনাল ফুটবল লিগের (এনএফএল) করপোরেট অফিস ছিল। পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ জানিয়েছেন, বন্দুকধারী একটি বিএমডব্লিউ গাড়িতে এসেছিল। গাড়ির ভেতর কয়েক রাউন্ড গুলিসহ একটি রাইফেলের কেস, লোডেড রিভলবার, ম্যাগজিন ও ওষুধ পাওয়া গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে জেসিকা টিশ আর বলেন, বন্দুকধারীর হামলার উদ্দেশ্য এখনো স্পষ্ট নয়। তদন্ত চলছে। তবে তিনি মানসিক অসুস্থতায় ভুগছিল বলে জানা গেছে।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078