ভালোবাসায় বন্ধুত্ব

প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৫, ১১:৩২ , অনলাইন ভার্সন
জীবনের অন্যতম বড় পরিবর্তনের নাম হলো বিয়ে। এর মাধ্যমে সম্পূর্ণ নতুন একটি পর্বের সূচনা হয়। বিয়ের পরের জীবন কখনোই বিয়ের আগের মতো হবে না। অনেক পরিবর্তন, অনেক নতুনত্ব যোগ হয় বিয়ের পরে। এই পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে না পারলে মুশকিল। তখন একটুতেই বেধে যেতে পারে ঝগড়া। দাম্পত্য জীবনে সুখী ও স্বস্তিতে থাকা সবচেয়ে জরুরি। স্ত্রীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখাই বুদ্ধিমান পুরুষের কাজ। কারণ ঘরে স্বস্তি থাকলে বিশ্ব জয় করাও সহজ হয়ে যায়! তাই হাসিখুশি থাকা এবং পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। বিবাহিত পুরুষকে কিছু বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। কোনো প্রকার মনোমালিন্য হলে তা দ্রুত মিটিয়ে ফেলতে হবে।
একটি পরিবার সুন্দর ও সুখময় করে গড়ে তোলার জন্য স্বামীর কর্তব্য সবচেয়ে বেশি। সুতরাং সে যেন তার স্ত্রীর খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ না করে এবং স্ত্রীকে সব কথা মেনে নেওয়ার জন্য বাধ্য না করে। কেননা নারীদেরকে সৃষ্টিই করা হয়েছে নাজুক তবিয়ত দিয়ে। অতএব, স্ত্রীর ওপর অধিক চাপ প্রয়োগ করতে থাকলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।

হাদিস শরিফে বর্ণিত রয়েছে, ‘নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে পাঁজরের হাড় দ্বারা। তুমি যদি তাকে সোজা করতে যাও, তাহলে ভেঙে ফেলবে। তাই তার মন রক্ষা করে চলো। তাহলেই একসঙ্গে জীবনযাপন করতে পারবে।’ -সহিহ ইবনে হিববান, হাদিস ৪১৭৮।
আরেকটি হাদিসে আছেÑরাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা স্ত্রীদের সঙ্গে উত্তম আচরণ করো। কেননা তাদেরকে পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর পাঁজরের হাড়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বাঁকা হলো উপরেরটি। সুতরাং তুমি যদি তা সোজা করতে যাও, তাহলে ভেঙে ফেলবে। আর যদি একেবারে ছেড়ে দাও তাহলে বাঁকাই থেকে যাবে। তাই স্ত্রীদের সঙ্গে উত্তম আচরণ করো।’ -সহিহ বুখারি ও মুসলিম।
অন্য হাদিসে এসেছে, ‘তুমি যদি স্ত্রীকে সোজা করতে যাও, তাহলে ভেঙে ফেলবে। আর ভাঙার অর্থ তাকে তালাক প্রদান করা। -সহিহ মুসলিম।
অতএব স্বামী নিজেকে সর্বদা সংযত রাখবে। সবকিছু ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবে। ছাড় দেওয়া ও মায়া-মমতার মাধ্যমে যতদূর সম্ভব দাম্পত্য জীবন স্থায়ী করার আপ্রাণ চেষ্টা করবে। উত্তেজিত হয়ে দীর্ঘ দাম্পত্য জীবন শেষ করে দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
দাম্পত্য জীবন হোক বন্ধুত্বপূর্ণ : প্রেমিকও নাকি বিয়ের পর আর প্রেমিক থাকে না, স্বামী হয়ে যায়! আসলে প্রেমিক থাকাকালীন তো খুব বেশি দায়িত্ব পালন করতে হয় না, যেটা বিয়ের পরে চলে আসে। ফলস্বরূপ, বিয়ের পরে কিছু পরিবর্তন আসে এবং এটিই স্বাভাবিক। তবে স্বামী কিন্তু চাইলেই প্রেমিক হতে পারেন। নিজ স্ত্রীর ভালো বন্ধু হয়ে উঠলে সমস্যা অনেকটাই কমে যায়। তখন স্বামীর সমস্যাগুলো তার স্ত্রীও সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন।

স্ত্রীর যত্ন নিতে হবে : স্ত্রী তার স্বামীর জীবনেরই অংশ। তাকে অযত্নে ফেলে রাখা যাবে না। তার শারীরিক, মানসিক যত্ন নিতে হবে। কারণ, অযত্নে ফেলে রাখা কিছু সুফল বয়ে আনতে পারে না। স্ত্রীর যত্ন নিলে সেও তার স্বামী, সন্তান এবং পরিবারকে একইভাবে ভালোবাসবে। তাকে বিশ্বাস ও অনুভব করতে দেওয়া উচিত-তিনি তার স্বামীর জীবন, সন্তান ও সংসারে কতটা প্রিয়, কতটা ভালোবাসার কতটুকু মূল্যবান। এতে পারস্পরিক ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়বে। ব্যস্ততায় হয়তো সময় হয় না, তবে ছুটির দিন দেখে দুজনে মিলে সংসারের বিভিন্ন কাজ ভাগ করে সহযোগিতা করা উচিত। একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে দুজনের বোঝাপড়াও ভালো হবে। বাড়বে ভালোবাসাও।

রান্নাঘরে সময় কাটাতে হবে : রান্নাটাকে একতরফা স্ত্রীর কাজ হিসেবে ধরে নেওয়া উচিত নয়। হতে পারে কারও স্ত্রী রান্না তেমন পারেন না বা রান্নায় তার আগ্রহ কম অথবা রান্নায় নিয়োজিত ব্যক্তি আছেন। তবে মাঝেমধ্যে রান্নাঘরে চা বানানোর অজুহাতে তার সঙ্গে কিছুটা সময় কাটানোর অভ্যাস করতে হবে। স্বামীকে রান্নায় তার পাশে পেয়ে স্ত্রীর ভালো লাগা বৃদ্ধি পাবে।

আগ্রহী হয়ে কথা শুনতে হবে : স্ত্রীর কথা মনোযোগ দিয়ে শুনে এবং তার সমস্যা সমাধানে পাশে থাকতে হবে। কথা শোনার মাঝে উত্তেজিত হয়ে উল্টো তাকে সমস্যার জন্য দোষারোপ করলে কথা বলার আগ্রহ হারিয়ে যাবে।
প্রশংসা করতে হবে : মাঝে মাঝে স্ত্রীর কাজের প্রশংসা করতে হবে। এতে সে আরও উৎসাহিত হবে।

উপহার দিতে হবে : ছোট ছোট উপহার দিয়ে বা সারপ্রাইজ দিয়ে স্ত্রীকে খুশি করার চেষ্টা করতে হবে। সামান্য ফুলও একজন স্ত্রীর কাছে ভালোবাসা প্রকাশে গুরুত্ব বহন করে।
যোগাযোগ রাখতে হবে : কাজের ফাঁকে বা দূরে থাকলেও স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, স্ত্রী পরিবারের কাজে ব্যস্ত থাকলেও সে তার স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগের অপেক্ষায় থাকে এবং একটু সুন্দর কথা তার সারা দিনের ক্লান্তি দূর করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট!

মানসিক সমর্থন : যেকোনো পরিস্থিতিতে স্ত্রীর পাশে থেকে তাকে সাহস জোগাতে হবে।
সম্মান ও নিরাপত্তা দিতে হবে : স্ত্রীকে সব সময় নিরাপদ বোধ করাতে চেষ্টা করতে হবে এবং তার সম্মান পরিবারে, সমাজে রক্ষা করাতে হবে।
অযথা সন্দেহ করা যাবে না : স্ত্রীর প্রতি অযথা সন্দেহ করা উচিত নয়। এতে সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। পরিবার, আত্মীয়, বন্ধুমহলের সামনে স্ত্রীর প্রশংসা করতে হবে। এতে একজন স্ত্রী আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী হবে। তার শখ পূরণে চেষ্টা করতে হবে। তার পছন্দের কাজগুলো করতে তাকে উৎসাহিত করতে হবে এবং সহযোগিতা করা উচিত। একজন স্ত্রী-ও একজন মানুষ। দুঃখ-কষ্ট, বেদনা, আশা-আকাক্সক্ষা তার মাঝেও অনুভূত হয়। তার মানসিক অবস্থার প্রতি খেয়াল রেখে তার অনুভূতি বোঝার চেষ্টা করতে হবে।
পারিবারিক কাজে স্ত্রীর পরামর্শ নেওয়া : পরিবারের সব ছোট-বড় সিদ্ধান্তে স্ত্রীর মতামত গ্রহণ গুরুত্বের সঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে। স্ত্রীকে সম্মান ও গুরুত্ব দিলে সেও তার স্বামীকে সম্মান করবে ও গুরুত্ব দেবে। কেননা নবী (সা.) উম্মতের নানা সমস্যা তার স্ত্রীদের কাছে জানাতেন। তারা রাসুল (সা.)-কে পরামর্শ দিতেন। যেমন হুদাইবিয়ার সন্ধির সময় রাসুল (সা.) কাফেরদের সঙ্গে চুক্তি শেষ করে সাহাবিদেরকে হাদির পশু জবাই করতে নির্দেশ দেন। কিন্তু তারা রাসুলের হিকমত বুঝতে না পেরে জবাই করতে বিলম্ব করেন, এতে রাসুল (সা.) কষ্ট পেয়ে উম্মে সালামাহর (রা.) নিকট ঘটনা জানান। তিনি এ সমস্যা সমাধানে সুন্দর মতামত দেন।

স্ত্রীর সঙ্গে বদান্যতা ও সুন্দর আচরণ : রাসুল (সা.) একজন সুন্দর আচরণকারী ছিলেন, সব সময় তার স্ত্রীদের সঙ্গে কোমল ভাষায় কথা বলতেন, মাঝে মাঝে হাসি-ঠাট্টা করতেন, তাদের সঙ্গে ভালোবাসা ও বদান্যতার সঙ্গে আচরণ করতেন।
আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ইমানদার সেই ব্যক্তি, যে উত্তম চরিত্রের ও তার পরিবারের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করে।’ (তিরমিজি)
ইবনে সা’দ (রহ.) আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, তাকে নবী (সা.) ঘরে একান্তে অবস্থানকালীন সময়ের স্বভাব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো, তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) ছিলেন সবচেয়ে কোমল ব্যক্তি, সদা সর্বদা হাস্যোজ্জ্বল, তিনি কখনো তাঁর সঙ্গীদের সামনে (তাঁর শিষ্টাচারিতা ও পরিপূর্ণ সম্মানবোধের কারণে) পা প্রসারিত করে বসতেন না।’
স্ত্রীর ওপর অযথা রাগ না করা এবং রেগে গেলে ধৈর্য ধারণ করা : আয়েশা (রা.) আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বললেন, ‘আমি জানি কখন তুমি আমার প্রতি খুশি থাকো এবং কখন রাগান্বিত হও।’ আমি বললাম, কী করে আপনি তা বুঝতে সক্ষম হন? তিনি বললেন, তুমি প্রসন্ন থাকলে বলো, মোহাম্মদ (সা.) এর রবের কসম! কিন্তু তুমি আমার প্রতি নারাজ থাকলে বলো, ইবরাহিম (আ.) এর রবের কসম! শুনে আমি বললাম, আপনি ঠিকই বলেছেন। আল্লাহর কসম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! সে ক্ষেত্রে শুধু আপনার নাম মোবারক উচ্চারণ করা থেকেই বিরত থাকি। Ñবুখারি, হাদিস নং ৫২২৮, মুসলিম, হাদিস নং ২৪৩৯।

প্রেম ও রোমান্টিকতা : একজন স্বামী তার স্ত্রীর সঙ্গে সব সময় ভালোবাসার কথা বলবে, তাকে প্রেম দিয়ে পূর্ণ করে রাখবে। স্ত্রী হয়তো ঘুরতে পছন্দ করেন, তাকে মাঝে মাঝে দূরে কোথাও বেড়াতে নিয়ে যাবে। হারিয়ে যাবে কোনো অজানা প্রান্তে। রাসুল (সা.) তাঁর স্ত্রীদেরকে অনেক ঘুরতে নিয়ে যেতেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি হায়েজ অবস্থায় পানি পান করে সে পাত্র রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে দিতাম। আমার মুখ লাগানো স্থানে তিনি তাঁর মুখ লাগিয়ে পান করতেন। আমি হায়েজ অবস্থায় হাড়ের টুকরা চুষে তা রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে দিতাম। তিনি আমার মুখ লাগানো স্থানে তার মুখ লাগাতেন।’
আয়েশা (রা.) বলেন, ‘একবার আমি রাসুল (সা.) এর সঙ্গে এক অভিযানে বের হলাম, তখন আমি অল্পবয়সী ছিলাম, শরীর তেমন মোটা ছিল না। তিনি তার সাথিদেরকে বললেন, তোমরা আগে চলো, ফলে তারা এগিয়ে গেলেন। অতঃপর তিনি আমাকে বললেন, এসো আমরা দৌড় প্রতিযোগিতা দিই, প্রতিযোগিতায় আমি এগিয়ে গেলাম।’

সন্তানের প্রতি যত্ন নেওয়া : একজন পুরুষ তখনই একজন প্রিয় স্বামী হবেন, যখন তিনি তার স্ত্রীকে সন্তানদের লালন-পালনের কাজে সহযোগিতা করবেন। স্বামী সারা রাত ঘুমাবেন আর তার স্ত্রী একটু পরপর বাচ্চার ভেজা কাপড় পাল্টাবে, এভাবে হলে স্ত্রী তার স্বামীকে স্বার্থপর ভাববেন। আনাস ইবন মালিক (রা.) বলেন, ‘পরিবার-পরিজনের প্রতি রাসুল (সা.) এর মতো এত দয়াবান কাউকে দেখিনি।’

বুখারি ও মুসলিমে আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমি নামাজ শুরু করে লম্বা করতে চাই, তবে শিশুর কান্না শুনে হালকা করে শেষ করি, কারণ আমি মায়ের কষ্টের তীব্রতা জানি।’

উত্তম আচরণ : স্ত্রীর সঙ্গে স্বামীর আচরণ হবে উত্তম। স্ত্রীর সঙ্গে উত্তম আচরণ করা স্বয়ং নবীজি (সা.) এর সুন্নাত। নবীজির আচরণ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উম্মতের জন্য একান্ত আবশ্যক। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় তা প্রমাণিত।

হাদিসে এসেছে-আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানি বলেন, উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজ হাতে তাঁর কাপড় সেলাই করতেন; নিজের জুতা মেরামত করতেন এবং সাংসারিক যাবতীয় কাজে অংশগ্রহণ করতেন।’ (ফাতহুল বারি)

আল্লাহ তায়ালা কোরআন শরিফে স্বামী-স্ত্রীকে পরস্পর এক বলে সম্বোধন করে বলেন, ‘এরপর তাদের প্রভু তাদের দোয়া (এই বলে) কবুল করে নিলেন, ‘আমি তোমাদের কোনো পরিশ্রমকারীর পরিশ্রমই বিনষ্ট করি না, তা সে পুরুষ হোক কিংবা স্ত্রীলোক। তোমরা পরস্পর এক।’ (সুরা ইমরান : আয়াত ১৯৫)

কোরআনের ঘোষণা নারীর প্রতি পুরুষের আচরণ এবং পুরুষের প্রতি নারীর আচরণ হবে সুন্দর ও সহযোগিতাপূর্ণ। কেউ কারও প্রতি বিরূপ আচরণ করবে না। তবেই স্বামী-স্ত্রীর মাঝে তৈরি হবে সুসম্পর্ক ও মধুর বন্ধন। এ লক্ষ্যে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের প্রতি যথাযথ মর্যাদা দেবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, স্বামীর কাছ থেকে স্ত্রী যথাযথ মর্যাদা পায় না। যার ফলে পারিবারিক জীবনে শুরু হয় অশান্তি। এমনটি কাম্য নয়।

এ ছাড়া সামান্য অজুহাতে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ না করা। সুযোগ পেলেই কথায় কথায় ধমক না দেওয়া এবং রাগ না করা। আত্মমর্যাদায় আঘাত আসে এমন বিষয় নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে কথা না বলা। এ ধরনের কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সংযত থাকা বুদ্ধিমান ব্যক্তিত্বের পরিচয় বহন করে। সুখী পরিবার গঠনে স্ত্রীর প্রতি সার্বিক সমর্থন, সদাচরণ ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার বিকল্প আর কিছুই নেই।

স্ত্রীকে কষ্ট দেওয়া নিষেধ : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কোনো মুমিন পুরুষ তার স্ত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করবে না। তার স্ত্রীর দু-একটি অভ্যাস ভালো না লাগলেও তার অনেক ভালো গুণ আছে, যা পুরুষের জীবনে কল্যাণ বয়ে আনে।’ (মুসলিম, হাদিস নম্বর ১৪৬৯)
অন্য হাদিসে এসেছে, ‘তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে ভালো মানুষ তারাই, যারা তাদের স্ত্রীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে।’ তিরমিজি, হাদিস নম্বর ১১৬২)

স্ত্রীকে শাসন : স্ত্রীকে কখনো তার বা স্বামীর মা-বাবা, সন্তানদের সামনে কিছু বলা উচিত নয়। কোনো ভুল-ত্রুটি হলে শাসন নয়। স্ত্রী অর্থ জীবনসঙ্গী। তিনি তার স্বামীর অনুগত কিন্তু অধীনস্থ নন। মানুষ হিসেবে তার আত্মসম্মান রয়েছে... এ কথাটি সব সময় মনে রাখতে হবে। মানুষ ভুলের ঊর্ধ্বে নয়, তাই স্ত্রীর কোনো কথা বা কাজে ভুল হলে একান্তে, আন্তরিকতার সঙ্গে তার সমস্ত কাজের সম্মানজনক স্বীকৃতি দিয়ে অতঃপর সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে হবে এবং স্বামী কী চান তা বুঝিয়ে বলতে হবে। প্রত্যাশা পূরণে স্ত্রীর জন্য যেন সহজ হয়, সেভাবে সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রার্থনা করতে হবে। বিনীত কণ্ঠে অনুরোধÑএর থেকে বড় আর কোনো শাসন বা আদেশ হয় না। কিন্তু স্বামী যদি তার পরিবারের নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তিকে খুশি করতে গিয়ে সেই ব্যক্তির সামনে স্ত্রীর সঙ্গে রূঢ় ব্যবহার করেন, এতে তার ব্যক্তিত্বে আঘাত পাবে এবং বিরূপ প্রতিক্রিয়া পাওয়ার শঙ্কা থাকে। স্ত্রী ভাববেন, যে সংসারে তিনি তার সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন, আজ সে সংসার থেকে তিনি এমন অপমানিত হচ্ছেন! তার মাঝে খারাপ মানবিক প্রতিক্রিয়া হবে। তাই এমন পরিবেশ সৃষ্টি যেন না হয়, সেদিকে স্বামীকে যত্নবান হতে হবে।

একজন স্ত্রী তার স্বামীর জীবনের অংশ, শরীরের হাড়ের অংশ। তাই প্রিয় মানুষটিকে সম্মান দিতে হবে। ভালোবাসতে হবে জীবনসঙ্গী হিসেবে, শ্রদ্ধা করতে হবে নিজ সন্তানের মাকে। মায়ের জাতি হিসেবে সম্মান করতে হবে। তবেই পৃথিবীর বুকে ঘর হবে এক টুকরো জান্নাত।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078