অধ্যাপক সিরাজুল হক স্মরণে ঢাবিতে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল

প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৯:২৪ , অনলাইন ভার্সন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অ্যালামনাই, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বহুভাষাবিদ, কবি, দেশবরেণ্য সাংবাদিক এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য অধ্যাপক সিরাজুল হক স্মরণে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ এবং আনজুমানে ফারসি বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে এক স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
গত ২৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার আর্টস অডিটোরিয়ামে এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. মুমিত আল রশিদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও আনজুমানে ফারসি বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান খান, ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের রাজনীতি বিষয়ক সেক্রেটারি জাভাদ আসগারি, অধ্যাপক সিরাজুল হকের সহপাঠী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনারারি অধ্যাপক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী নূরুল ইসলাম, দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ্ কাওসার মুস্তফা আবুলউলায়ী, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান, অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার, ড. মোহাম্মাদ আহসানুল হাদী, মেহদী হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউটের শিক্ষক ও আনজুমানে ফারসি বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক শামীম বানু, বিশিষ্ট ফারসি গবেষক ও সাংবাদিক আনিসুর রহমান স্বপন, আনজুমানে ফারসি বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি ড. মো. ঈসা শাহেদী ও অধ্যক্ষ ড. মো. মাহবুবুর রহমান, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও গবেষক ড. আব্দুল হাই ও সিরাজুল হকের বড় জামাতা নিউইয়র্ক প্রবাসী বিশিষ্ট কবি ও সাংবাদিক এবং নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা এবিএম সালেহ উদ্দীন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক ও বিশিষ্ট গল্পকার অধ্যাপক ড. আবদুস সবুর খান।
অনুষ্ঠানে আলোচকরা অধ্যাপক সিরাজুল হকের স্মৃতিচারণ করেন এবং তাঁর বর্ণাঢ্য ও কর্মময় জীবনের নানা দিক তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, অধ্যাপক সিরাজুল হক ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী ও বন্ধুবৎসল। ছোট-বড় সবাইকে আপন করে নেয়ার এক অসাধারণ গুণের অধিকারী ছিলেন তিনি। তাঁর সাহিত্যকর্মে, চিন্তাচেতনা ও আচার-ব্যবহারে সবাই মোহাবিষ্ট হতো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান খান তাঁর বক্তব্যে বলেন, অধ্যাপক সিরাজুল হককে জেনেছি শিক্ষার্থী থাকাকালীন ‘নিউজ লেটার’ পত্রিকার মাধ্যমে। এছাড়া সাবেক ডিন ও সিরাজুল হকের ইয়ারমেট অধ্যাপক সদরুল আমিন স্যারের অফিসে দুইবার তাঁর সাথে আমার দেখা হয়েছিলো। তখন থেকেই তাঁকে একজন পণ্ডিত ব্যক্তি হিসাবে চিনেছি।
তাঁর সহপাঠী বন্ধু অধ্যাপক ড. কাজী নূরুল ইসলাম সিরাজুল হকের স্মৃতিচারণ করে বলেন, সিরাজ এমন এক অসম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ ছিলেন; যিনি আমাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগ প্রতিষ্ঠার পরামর্শ দিয়েছিলেন। 
তিনি আরো বলেন, এ ধরনের গুণী ব্যক্তিদের যদি আমরা স্মরণ না করি, তবে সমাজে গুণী ব্যক্তি সৃষ্টি হবে না। 
কাজী নূরুল ইসলাম অধ্যাপক সিরাজুল হকের নামে একটি মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করে তার অপ্রকাশিত গ্রন্থসমূহ এবং অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করার পরামর্শ দেন। সেই সাথে একটি স্মারক গ্রন্থও প্রকাশ করার উদ্যোগ নেয়ার জন্য প্রস্তাব করেন- যাতে তিনি যেনো সমাজ থেকে হারিয়ে না যান।
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতের প্রতিনিধি ও রাজনীতি বিষয়ক সেক্রেটারি জাভাদ আসগারি তার বক্তব্যে বলেন, অধ্যাপক সিরাজুল হক ইরানের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে এবং ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ‘নিউজ লেটার’ পত্রিকার সম্পাদক হিসাবে ২০ বছর কর্মরত ছিলেন। বাংলাদেশ ও ইরানের সাংস্কৃতিক পুনর্গঠনে এবং ফারসি ভাষা বিস্তারে তাঁর অবদান ছিল গভীর ও বহুমাত্রিক। দুই দেশের সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধনে তিনি ছিলেন এক গুরুত্বপূর্ণ কণ্ঠস্বর। আমরা তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
সভাপতির ভাষণে ড. মো. মুমিত আল রশিদ বলেন, অধ্যাপক সিরাজুল হক আমাকে লেখালেখির জগতে অনুপ্রাণিত করেছেন। তাঁর হাত ধরে যুগান্তর, ইত্তেফাক, সমকালসহ বিভিন্ন পত্রিকায় অধিক সংখ্যক প্রবন্ধ প্রকাশ করেছি। এক্ষেত্রে তিনি আমাকে কেবল অনুপ্রাণিতই করেননি, বরং বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন। 
তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে আরো বলেন, আমরা যাদের কাছে ফারসি শিখেছি, তাঁদের প্রতি অনেক ঋণী, কিন্তু সেই মানুষগুলোকে আমরা হারিয়ে ফেলছি। তাঁদের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য আনজুমানে ফারসি কাজ করে যাবে ইনশা আল্লাহ।
অনুষ্ঠান শেষে ড. কে এম মাহবুবুর রহমান মরহুম অধ্যাপক সিরাজুল হকের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মুনাজাত পরিচালনা করেন।

উল্লেখ্য, অধ্যাপক সিরাজুল হক গত ২৬ জুন নিউইয়র্ক সময় সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে কুইন্স হাসপাতালে পরলোকগমন করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগ জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ২৯ জুন সকালে আমেরিকা থেকে মরহুমের মরদেহ ঢাকায় আনা হয় এবং পরে ঐ দিনই বাদ আছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর আজিমপুর কবরস্থানে তাঁর সহধর্মিণীর পাশে তাঁকে দাফন করা হয়।

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078