গাজায় অনাহারে আরও ১০ জনের মৃত্যু

প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২৫, ০৯:৪৭ , অনলাইন ভার্সন
গাজায় অনাহারে মৃত্যু আরও গভীর সংকটে রূপ নিয়েছে। ২৪ জুলাই (বুধবার) খাদ্যাভাবে আরও অন্তত ১০ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। এ নিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের পর অপুষ্টিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১১১ জনে  যার বেশিরভাগই সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ঘটেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ২৪ জুলাই (বুধবার) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। 
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় আরও অন্তত ১০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহতদের মধ্যে ৩৪ জন সাহায্যপ্রার্থীরাও ছিলেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, চলতি বছর অপুষ্টির কারণে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৫ বছরের নিচের অন্তত ২১টি শিশু রয়েছে। সংস্থাটি আরও জানায়, মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে প্রায় ৮০ দিন তারা কোনো খাদ্য সহায়তা পৌঁছাতে পারেনি এবং বর্তমানে কিছু খাদ্য প্রবেশ করলেও তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম।
এক বিবৃতিতে মার্সি কর্পস, নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল ও রিফিউজিস ইন্টারন্যাশনালের মতো ১১১টি সংগঠন জানায়, ‘বিধ্বংসী দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ছে’ অথচ গাজার ঠিক বাইরে টনকে টন খাদ্য, পানি ও ওষুধ অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে, যেগুলোর প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে।

“ক্ষুধা এখন বোমার মতোই মরণঘাতী”
আল জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজ্জুম গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকা থেকে জানান, “ক্ষুধা এখন বোমার মতোই মরণঘাতী হয়ে উঠেছে। মানুষ এখন আর পর্যাপ্ত খাবারের জন্য নয়, কেবল কিছু একটা পাওয়ার জন্য আকুতি জানাচ্ছে।”

তিনি আরও জানান, স্থানীয়রা এই ক্ষুধাকে “একটি ধীর ও যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু” বলে অভিহিত করছেন  যা ইসরায়েলি বাহিনীর পরিকল্পিত অপচেষ্টার ফল বলে তারা মনে করছেন।
ইসরায়েল মার্চে গাজার দিকে সব ধরনের পণ্যের প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। মে মাস থেকে সামান্য পরিমাণে সহায়তা প্রবেশ করতে শুরু করে, তবে সেটিও বিতরণ করছে বিতর্কিত মার্কিন-সমর্থিত জিএইচএফ।

জাতিসংঘ ও অন্যান্য সহায়তা সংস্থা অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল যেহেতু গাজার প্রবেশ ও প্রস্থান সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করে, তাই তারাই এই খাদ্য প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করছে। মে মাস থেকে সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়ে শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির জরুরি বিভাগের পরিচালক রস স্মিথ বলেন, “আমাদের একটি ন্যূনতম নিরাপত্তা প্রয়োজন, বিশেষ করে আমাদের কনভয়ের আশেপাশে যেন কোনো সশস্ত্র বাহিনী না থাকে।”

হাসপাতালগুলো রূপ নিয়েছে ট্রমা ওয়ার্ডে
ডব্লিউএইচও-এর গাজার প্রতিনিধি রিক পেপারকোর্ন বলেন, সহায়তা পেতে গিয়ে আহত মানুষের সংখ্যা এতটাই বেশি যে, গাজায় বাকি থাকা অল্প কয়েকটি হাসপাতাল এখন বিশাল ট্রমা ওয়ার্ডে পরিণত হয়েছে।

তিনি জানান, খাদ্য সংকট এতটাই তীব্র যে, সাংবাদিক, শিক্ষক এমনকি তাদের নিজস্ব কর্মীরাও কাজে আসতে পারছেন না।
গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালের মার্কিন চিকিৎসক নুর শরাফ বলেন, “মানুষ কয়েক দিন ধরে কিছুই খায়নি, তারা ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে। চিকিৎসকরা নিজেরাও খাবার পাচ্ছেন না, তবুও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।”

আরও দুই সাংবাদিক নিহত
এদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর টানা বিমান হামলায় গাজা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতা বেড়েছে। গাজার সরকার পরিচালিত মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় আরও দুই ফিলিস্তিনি সাংবাদিক — তামার আল-জানিন ও ওয়ালাহ আল-জাবারি  নিহত হয়েছেন।
তাদের মৃত্যুতে অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে নিহত গণমাধ্যমকর্মীর সংখ্যা দাঁড়াল ২৩১ জনে।

সমঝোতা ও যুদ্ধবিরতি আলোচনায় গতি আনার চেষ্টা
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে “অত্যন্ত সংবেদনশীল আলোচনা” করতে ইউরোপে যাচ্ছেন।

যুক্তরাষ্ট্র বলছে, কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় ৬০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে, যেখানে গাজায় বন্দি থাকা ৫০ জনের মতো জিম্মিকে মুক্ত করার বিষয়টিও রয়েছে।
হামাস ইতোমধ্যে মধ্যস্থতাকারীদের কাছে প্রস্তাবে তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দিয়েছে বলে এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তবে বিস্তারিত কিছু বলেননি।

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041