ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে কি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব

প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২৫, ১৪:৪১ , অনলাইন ভার্সন
ক্ষমতাসীন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে কি আসন্ন নির্বাচন প্রভাবমুক্ত, অবাধ, নিরপেক্ষতার সঙ্গে অনুষ্ঠান সম্ভব? কোনো বিশেষ দলের প্রতি প্রত্যক্ষভাবে না হলেও পরোক্ষে, নানা কৌশলে দুর্বলতা প্রকাশ না করে থাকা কি সম্ভব হবে? এসব প্রশ্ন তুলেছেন খোদ তারাই, যারা ড. ইউনূস ও তার সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছেন।
সরকারের কিছু কিছু কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক মহলসহ অনেক সাধারণ মানুষের মধ্যেও সরকারের দল-নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে সংশয়, প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দলপ্রীতি ও স্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে তাদের পক্ষে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে কি না, সে প্রশ্ন বড় হয়ে উঠেছে। কারণ যারা এই সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছে, তারা নিজেরাই রাজনৈতিক দল গঠন করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার ব্যাপারে গভীরভাবে প্রত্যয়ী।
বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল। তারা, তাদের প্রতিনিধিরাই এখন রাষ্ট্রক্ষমতায়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দুই শিক্ষার্থী নেতা সরকারের প্রভাবশালী উপদেষ্টা। জাতীয়, আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তারাই মুখ্য নীতিনির্ধারণী ভূমিকা পালন করে আসছেন। তারা এখন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নামের এই দল শিক্ষার্থীদের সমন্বয়েই গঠন করা হয়েছে। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাই এই দলের নেতা ও সদস্য। বয়স্ক, প্রবীণ নাগরিকদের দেখা যাচ্ছে না। তারা চেষ্টা করছেন ৩০০ নির্বাচনী আসনে অভিজ্ঞ ও প্রবীণদের প্রার্থী করতে। কিন্তু তেমন সাড়া পাচ্ছেন না। এলাকায় উজ্জ্বল ভাবমূর্তি, ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে এমন তরুণ শিক্ষার্থীদের সন্ধান করা হচ্ছে। সুবিধা করতে পারছেন না। নানাভাবে অনেক সম্ভাবনাময় সুপরিচিত ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে দলে টানার চেষ্টা করা হচ্ছে। আসন্ন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার প্রলোভনও দেখানো হচ্ছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাড়া মিলছে না। বৈষম্যবিরোধীদের ব্যাপারে তারা আগ্রহী নন। সাধারণ মানুষের কাছ থেকেও প্রত্যাশিত সাড়া না পাওয়ায় তাদের অনেকেই ইদানীং হতাশ হয়ে পড়েছেন।
নির্বাচনে তারা উচ্চতর পর্যায় থেকে গোপনে এমনকি প্রকাশ্যেও অনেক ক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত সহায়তা পাবেন এবং তাদের গ্রহণযোগ্য প্রার্থীদের বিজয় সহজতর হবে বলে প্রলুব্ধও করা হচ্ছে। তাই এই সরকারের পক্ষে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে কি না, সেই প্রশ্নই মুখ্য হয়ে আসছে। বরাবরই বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে ছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ড. ইউনূস হঠাৎ করেই আবির্ভূত হয়েছেন, এমন নয়। শিক্ষার্থীদের নেতৃস্থানীয় এবং তাদের যারা সরকার হটাতে রাজপথে নামায়, তাদের সঙ্গে ড. ইউনূসের যোগাযোগ বরাবরই ছিল। পরিকল্পনামাফিকই দেশি-বিদেশি প্রভাবশালীদের ইচ্ছা অনুযায়ী প্রফেসর ইউনূসকে আনা হয়। বিদেশে তিনি সময়ের ডাকের অপেক্ষায়ই ছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা এখন আগের অবস্থানে নেই। তারা দল গঠন করে রাজনৈতিক আসরে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান করে নিয়েছেন। আগামীতে তারা ক্ষমতায় যাওয়ার পরিকল্পনাও করছেন। এই শিক্ষার্থীদেরই সরকার এখন ক্ষমতায় এবং তাদের অধীনেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। স্বভাবতই তারা উচ্ছ্বসিত। তাদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক ও নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে জামায়াতে ইসলামীর। আসন্ন নির্বাচনে জামায়াতের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধীদের জোট বা সমঝোতায় নির্বাচন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক ময়দানের প্রধান পক্ষ বিএনপিকে হটিয়ে রাজনীতিতে তাদের একচ্ছত্র আধিপত্য, কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা এবং নির্বাচনে ক্ষমতাসীন হওয়াই তাদের লক্ষ্য। অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান ড. ইউনূস নিজেই যেখানে বৈষম্যবিরোধী এবং তাদের রাজনৈতিক সংগঠন জাতীয় নাগরিক পার্টির অনানুষ্ঠানিক প্রতিনিধিত্ব করছেন, সেখানে তার নেতৃত্বাধীন সরকারের নিরপেক্ষতা কোথায় থাকে? সরকারের দুজন প্রতিনিধি সরাসরি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা। তারাই-বা দল নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকবেন কীভাবে। এমনই অবস্থায় নামে অন্তর্বর্তী সরকার হলেও তারা দল নিরপেক্ষ নন। তাদের কাছ থেকে কি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, প্রভাবমুক্ত নির্বাচন আশা করা যায়!
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078