বাংলাদেশিদের অবিশ্বাস্য কম খরচে গোল্ডেন ভিসা চালু করলো আমিরাত

প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২৫, ২০:১৭ , অনলাইন ভার্সন
পেশাজীবীদের জন্য নিজেদের আবাসন কর্মসূচির শর্ত শিথিল করে নতুন ধরনের গোল্ডেন ভিসা চালুর ঘোষণা দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। পাইলট প্রকল্প হিসেবে বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিকদের জন্য মনোনয়নের ভিত্তিতে নতুন এই গোল্ডেন ভিসা চালু করেছে দেশটির সরকার। তবে নতুন এই গোল্ডেন ভিসা পাওয়ার জন্য কিছু শর্তও জুড়ে দিয়েছে দেশটি। এর আগে দেশটিতে গোল্ডেন ভিসা পেতে সাধারণত সম্পদ কিংবা ব্যবসায় বিপুল বিনিয়োগের প্রয়োজন হতো।

নতুন করে চালু করা এই গোল্ডেন ভিসা কর্মসূচিতে নার্স, শিক্ষক এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে আগে কেবল উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী, মেধাবী শিক্ষার্থী এবং বিশেষজ্ঞদের জন্য গোল্ডেন ভিসার সীমিত সুযোগ থাকলেও বর্তমানে তা আরও বিস্তৃত পরিসরে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আমিরাত। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির কর সুবিধা, বিশ্বমানের অবকাঠামো এবং স্থিতিশীল পরিবেশের কারণে অনেকেই সেখানে বসবাস করতে আগ্রহী।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সম্পদশালী ব্যক্তিদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে ২০১৯ সালে গোল্ডেন ভিসা কর্মসূচি চালু করে আমিরাতের সরকার। ওই সময় দেশটির রিয়েল এস্টেট খাতে বিপুল বিনিয়োগকারীরা গোল্ডেন ভিসা পেতেন। পরে ২০২২ সালে দেশটির ১০ বছরের ভিসার জন্য বিনিয়োগের ন্যূনতম সীমা কমিয়ে ২০ লাখ আমিরাতি দিরহাম (বাংলাদেশি প্রায় ৬৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা) নির্ধারণ করা হয়। যা আরও বড় পরিসরে বিনিয়োগকারীদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে। দেশটিতে অভিবাসীরাও বিপুল বিনিয়োগের মাধ্যমে দুবাইয়ের গোল্ডেন ভিসা পেতে পারেন।

শর্ত শিথিল করায় আমিরাতের এই গোল্ডেন ভিসা এখন বিনিয়োগকারী, উদ্যোক্তা, মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিজ্ঞানী, কর্পোরেট নির্বাহী, ফ্রন্টলাইন কর্মী, স্কুলশিক্ষক, অধ্যক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ১৫ বছরের অভিজ্ঞ নার্সরাও পাবেন। এছাড়া ইউটিউবার, পডকাস্টার, ডিজিটাল কনটেন্ট নির্মাতা, ২৫ বছরের বেশি বয়সী ই-স্পোর্টস পেশাজীবী, বিলাসবহুল ইয়টের মালিক ও মেরিটাইম নির্বাহীদেরও এই কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, আমিরাতের নতুন ‌‘মনোনয়ন-ভিত্তিক ভিসা নীতিমালার’ আওতায় ভারতীয় ও বাংলাদেশি নাগরিকরা এখন থেকে আজীবনের জন্য গোল্ডেন ভিসা পাওয়ার সুযোগ পাবেন। এই ভিসার জন্য ফি ১ লাখ দিরহাম (বাংলাদেশি প্রায় ৩৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা) নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে ৫ হাজারের বেশি ভারতীয় এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পরীক্ষামূলক তালিকায় বাংলাদেশ-ভারত

নতুন এই গোল্ডেন ভিসা প্রথম ধাপে বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিকদের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। মনোনয়ন-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসার প্রথম ধাপের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে আমিরাতের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান রায়াদ গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রায়াদ কামাল আইয়ুব বলেছেন, আমিরাতের নতুন এই গোল্ডেন ভিসা কর্মসূচি বাংলাদেশ ও ভারতীয়দের জন্য সুবর্ণ সুযোগ।

বাছাইয়ের প্রক্রিয়া কী?

রায়াদ কামাল আইয়ুব পিটিআইকে বলেন, আমিরাতের গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদন করা হলে প্রথমে আবেদনকারীর ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই করা হবে। এতে অর্থপাচার, অপরাধমূলক রেকর্ডের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টও যাচাই করে দেখা হবে।

এছাড়া, আবেদনকারী সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাজার ও ব্যবসায়িক পরিবেশে কীভাবে অবদান রাখতে পারেন, তা যাচাইয়ের জন্য সংস্কৃতি, অর্থ, বাণিজ্য, বিজ্ঞান, স্টার্ট-আপসহ পেশাগত সেবার মতো বিভিন্ন দিকও বিবেচনা করা হবে। এরপর আমিরাতের সরকারের কাছে গোল্ডেন ভিসার আবেদনটি পাঠিয়ে দেবে রায়াদ গ্রুপ। সবকিছু যাচাই-বাছাইয়ের পর মনোনয়ন-ভিত্তিক এই গোল্ডেন ভিসার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দেশটির সরকার বলে জানিয়েছে রায়াদ কামাল আইয়ুব।

মনোনয়ন-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদনকারীকে নিজ দেশের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রাথমিক অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনুমোদন মিললে আবেদনকারীকে দুবাইয়ে যাওয়ার দরকার হবে না। রায়াদ কামাল আইয়ুব বলেন, ‘‘ভারত ও বাংলাদেশে ওয়ান ভাস্কো সেন্টারের মাধ্যমে মনোনয়ন-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে। এছাড়াও আমাদের নিবন্ধিত অফিস, অনলাইন পোর্টাল কিংবা কল সেন্টারের মাধ্যমেও আবেদন করা যাবে।’’

গোল্ডেন ভিসার এই মনোনয়ন প্রক্রিয়া মূলত সংযুক্ত আরব আমিরাতের কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ চুক্তিতে (সিইপিএ) স্বাক্ষরকারী-অংশীদার দেশগুলোর একটি সমঝোতা। ভারত ও বাংলাদেশ দিয়ে শুরু হওয়া এই পাইলট প্রকল্পে ভবিষ্যতে চীনসহ অন্যান্য দেশও যুক্ত হবে।

নতুন গোল্ডেন ভিসার সুবিধা

গোল্ডেন ভিসা পাওয়ার পর পরিবারের সদস্যদের দুবাইয়ে নিতে পারবেন মনোনীতরা। রায়াদ কামাল আইয়ুব বলেন, ‘‘এই ভিসার ভিত্তিতে আপনি গৃহকর্মী ও চালকও রাখতে পারবেন। এছাড়া যেকোনও ধরনের ব্যবসা কিংবা পেশাগত কাজও করতে পারবেন।

তিনি বলেন, সম্পত্তি বিক্রি অথবা ভাগাভাগির ফলে সম্পত্তি-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসা বাতিল হলেও মনোনয়ন-ভিত্তিক ভিসা স্থায়ী থাকবে। সূত্র: পিটিআই, এনডিটিভি।

ঠিকানা/এএস 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078