ইন্ডিয়ান সাইবার ফোর্সের দাবি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে

প্রকাশ : ২৪ অগাস্ট ২০২৩, ১২:৫৭ , অনলাইন ভার্সন
‘ইন্ডিয়ান সাইবার ফোর্স’র সাইবার হামলা বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। অনেক দিন থেকেই সীমান্তে ভারতীয় রক্ষীদের হামলায় নিরীহ বাংলাদেশিদের মৃত্যুর কথা তেমন একটা শোনা যায় না। মনে হচ্ছিল, ভারত আমাদের প্রকৃত অর্থেই মিত্র হয়ে উঠল। বাংলাদেশের ওপর বিভিন্ন বিষয়ে চাপ দেওয়ার কথাও খুব বেশি শোনা যাচ্ছিল না। এমনকি বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা চীনের যত দৌড়ঝাঁপ, কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে, দেখা যাচ্ছে; ভারতের দিক থেকে অতটা সক্রিয়তা লক্ষ করা যাচ্ছে না।

বেশ স্বস্তিতেই ছিল বাংলাদেশ। কেননা, ভারত হচ্ছে বাংলাদেশের নিকট ও ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী। দুই দেশের মধ্যে যত বেশি ভালো সম্পর্ক থাকবে, বিশেষ করে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা প্রশ্নে, তা উভয় দেশের জন্যই মঙ্গল। অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদল ভারত সফর করে এসেছে। এ নিয়ে খুব একটা কথাবার্তা না হলেও সফরটি যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, সে বিষয়ে কারও কোনো সংশয় নেই। এই সফরে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রেসিডেন্ট জেপি নাড্ডা, ভারতীয় পার্লামেন্টের আপার হাউস রাজ্যসভার লিডার অব দ্য হাউস ও বাণিজ্যমন্ত্রী পিযুষ গয়াল এবং ভারতে জি-২০ সম্মেলনের কো-অর্ডিনেটর ও ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলাসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেকের সঙ্গে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলের আলোচনা হয়েছে।

শ্রী গয়াল আশা প্রকাশ করেছেন, এ অঞ্চলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে বাংলাদেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে যাবেন। সে সময়েও নিশ্চয় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ অনেকের সঙ্গেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হবে। ভারত-বাংলাদেশ উভয়ই মনে করে, আওয়ামী লীগ ও বিজেপির সম্পর্ক এখন সর্বোচ্চ উচ্চতায় রয়েছে। সরকারের সঙ্গেও ভারত সরকারের সম্পর্ক খুব ভালো। এ রকম সময়ে বাংলাদেশে ভারতের ‘ইন্ডিয়ান সাইবার ফোর্স’র হামলা কী বার্তা দেয়, সেটা সাধারণ মানুষের বোধগম্য নয়। তবে সাধারণ মানুষের ধারণা হচ্ছে এ রকম একটি সাইবার হামলা মোটেও সুসম্পর্কের পরিচায়ক নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ের বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করেন, ভারতের কাছে আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আর এ বিষয়ে ভারতকে নিশ্চিত করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। তা সত্ত্বেও ভারতের দিক থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো নাশকতামূলক কাজ মোটেও কাম্য হতে পারে না।

১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসে ইন্ডিয়ান সাইবার ফোর্স একটি পোস্টে স্পর্ধার সঙ্গে লিখেছে, ‘বাংলাদেশ কি ধ্বংসের জন্য প্রস্তুত? বাংলাদেশ ব্যাংকের ৪০ হাজার প্লাস ডাটাবেস আপলোড করা হবে। নিজেকে ভারতীয়দের দ্বারা ধ্বংস করা দেখতে থাকুন।’ এর স্বপক্ষে প্রমাণ হিসেবে গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্যের একটি তালিকাও পোস্টে শেয়ার করেছে তারা। এই প্রমাণ আরও গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য তালিকায় ব্যাংকের ব্রাঞ্চের নাম, অ্যাকাউন্টধারীর নাম, বাবা/স্বামীর নাম, অ্যাকাউন্টধারীর বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং ব্যাংকে গচ্ছিত টাকার পরিমাণও উল্লেখ রয়েছে। এ-ই শেষ নয়, সরকারি বেশ কিছু ওয়েবসাইটে হামলা চালিয়ে তথ্য হাতিয়ে নেওয়ারও দাবি করেছে হ্যাকার গ্রুপ।

আরও কিছু হামলার দাবি করেছে গ্রুপটি। পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার ওয়েবসাইট ডাউন করে রাখার দাবিও করেছে তারা। পোস্ট শেষ করে ‘জয় হিন্দ, জয় ভারত’ বলে।

ইন্ডিয়ান সাইবার ফোর্সের দাবির বিষয়ে র‌্যাবের মুখপাত্র, বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন নির্বাহী পরিচালক, আইসিটি যোগাযোগ বিভাগের সচিবের বক্তব্য পাওয়া গেছে ঠিকানায় প্রকাশিত খবরটিতে। খবরের শিরোনাম ছিল ‘অবশেষে সাইবার হামলা’। প্রকাশিত হয়েছে গত ১৬ আগস্ট সংখ্যার প্রথম পৃষ্ঠায়। সবার বক্তব্যেই ইন্ডিয়ান সাইবার ফোর্সের দাবিকে খুব গুরুত্ব না দিয়ে হালকাভাবেই দেখা হয়েছে বলে মনে হবে। ইতিপূর্বেও কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রায় ১৫ মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নেওয়ার খবর, অর্থ পাচার, ব্যাংকের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে সংশ্লিষ্টরা কোনো পাত্তা না দিয়ে আড়াল করার চেষ্টা করেছেন। সাধারণ মানুষ অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে অবশ্যই মনে করে নিতে পারে, এবারও সে রকম অপচেষ্টা হচ্ছে কি না। তাই ইন্ডিয়ান সাইবার ফোর্সের দাবিকে হালকাভাবে না নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে দেখা জরুরি বলে আমরা মনে করি।

আমরা এখন ডিজিটাল যুগে বাস করছি। বিজ্ঞানের এই চরম উৎকর্ষের ফলে যেমন আশীর্বাদ আছে, তেমনি আছে অভিশাপও। আশীর্বাদবঞ্চিত হয়ে আমরা কি কেবল অভিশাপই বয়ে বেড়াব?
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041