বাংলাদেশে অর্থ পাচার খুব সাধারণ আলোচনা। এর মধ্যে কোনো অসাধারণত্ব নেই, চমক নেই। যারা জীবনে অঢেল অর্থ চোখে দেখেনি, তাদের কাছে অঢেল টাকা কতো টাকা, কিছু মনে হবে না। একসঙ্গে অনেক টাকা দেখা মানুষের সংখ্যা খুব বেশি আছে বলে মনে হয় না। যাদের অঢেল আছে, তারা যেমন জানে না তাদের কত আছে; যারা নিঃস্ব, তারা জানে না, টাকা দেখতে কেমন? বাংলাদেশের মানুষের শুধু টাকা নেই, তা ছাড়া টাকার ক্ষমতা, বিদেশে টাকা পাচার হয়ে যাওয়া, বেগমপাড়া, দুবাই, সিঙ্গাপুর, আমেরিকা-কার কোথায় বাড়ি, কত টাকা পাচার করেছে, সবাই সবকিছু জানে। ব্যাংকের টাকা কারা লোপাট করে, কারা ঋণখেলাপি-তাও সবার জানা।
সংবাদপত্র, সোশ্যাল মিডিয়া, টিভি-সব মাধ্যমেই প্রায় প্রতিদিনই টাকা পাচার নিয়ে নিউজ প্রকাশিত হয় বাংলাদেশে। সকাল-বিকাল-সন্ধ্যায় চায়ের আড্ডায়, শহর থেকে গ্রামে, এসব নিয়ে এখন আলোচনা চলে। সে কারণে এসব বিষয় এখন দেশের সব মানুষই কমবেশি জানে। শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও বাংলাদেশের এসব কথা সবারই জানা। বাংলাদেশের দুর্নীতির মধ্যে রাজনীতির দুর্নীতিকেও ছাড়িয়ে গেছে আর্থিক দুর্নীতি। এর মধ্যে ব্যাংক দুর্নীতি, অর্থ পাচার অন্যতম। নানা প্রক্রিয়ায়, নানা পথে এই পাচার হয়ে থাকে।
গত সপ্তাহেই, অর্থাৎ ১৬ আগস্ট সংখ্যা, ঠিকানার প্রথম পৃষ্ঠায় টাকা পাচারের যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, সেই সংবাদটির শিরোনাম ছিল ‘বাণিজ্যের আড়ালে অর্থ পাচার চলছেই’। সংবাদটিতে বলা হয়েছে, অর্থ পাচারের অন্যতম বড় উৎস বৈদেশিক বাণিজ্য। তথ্য জানাচ্ছে, বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে দেশ থেকে প্রতিনিয়ত বিপুল পরিমাণ অর্থের পাচার চলছেই, কিছুতেই থামছে না। প্রতিবছর যে পরিমাণ অর্থ পাচার হচ্ছে, তার প্রায় ৭০-৮০ শতাংশই হচ্ছে বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে। ওভার ইনভয়েসিং বা আমদানিতে মূল্য বেশি দেখানো এবং মূল্য আন্ডার ইনভয়েসিং বা রপ্তানিতে মূল্য কম দেখানোর মাধ্যমে এসব অর্থ পাচার হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষণও বলছে, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সম্পাদনকালে এখনো আন্ডার ইনভয়েসিং এবং ওভার ইনভয়েসিংয়ের দৃষ্টান্ত লক্ষ করা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণ রয়েছে, আমদানি-রপ্তানি পণ্যের বাণিজ্য সম্পাদনকালে এসব অনিয়ম বা দুর্নীতি চলছে। প্রশ্ন জাগে খুব স্বাভাবিকভাবে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারি সত্ত্বেও যখন অর্থ পাচারের মতো ঘটনা দেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দিতে পারে, এমন ঘটনা ঘটতে পারে কীভাবে? তা ছাড়া ২০১৮ সালে যে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়, সেই নীতিমালায় দেশের অথরাইজড ডিলার ব্যাংকগুলোর দায়িত্ব হচ্ছে আমদানি পণ্যের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ কি না, অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের সঠিকতা নির্ধারণ করার বাধ্যবাধকতার কথা। সে দায়িত্ব সঠিকভাবে পালিত হলে তো এমনটা ঘটা কিছুতেই সম্ভব হতে পারে না। তবে কি মিলেমিশে করি কাজ? নাকি ওইসব দুষ্কৃতকারী এতটাই ক্ষমতাশালী যে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাও তাদের স্পর্শ করতে পারে না?
প্রতিবছর পাচারের অর্থের পরিমাণ বাড়ছে। বাংলাদেশে দুর্নীতির মাত্রাও বাড়ছে। কারণ বাদ দিয়ে যদি কেবল কার্য নিয়ে কথা বলা হয়, তবে কখনো দুর্নীতি দূর হবে না, অর্থ পাচারও বন্ধ হবে না। শুধু মাফিয়া, গডফাদারদের কথা বললে কিংবা তাদের জেলে পুরলেই সংকটের সমাধান হবে না। মাফিয়া-গডফাদার তৈরির যে বীজক্ষেত্র, সেই বীজক্ষেত্র ধ্বংস করতে না পারলে শত রোদনে, চোখে আগুন ঝরালেও কাজের কাজ কিছুই হবে না। দুর্নীতি বন্ধ হবে না। আমরা লিখেই যাব, অর্থ পাচারের পরিমাণ এবং দুর্নীতি হাত ধরাধরি করে বাড়তেই থাকবে।
সংবাদপত্র, সোশ্যাল মিডিয়া, টিভি-সব মাধ্যমেই প্রায় প্রতিদিনই টাকা পাচার নিয়ে নিউজ প্রকাশিত হয় বাংলাদেশে। সকাল-বিকাল-সন্ধ্যায় চায়ের আড্ডায়, শহর থেকে গ্রামে, এসব নিয়ে এখন আলোচনা চলে। সে কারণে এসব বিষয় এখন দেশের সব মানুষই কমবেশি জানে। শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও বাংলাদেশের এসব কথা সবারই জানা। বাংলাদেশের দুর্নীতির মধ্যে রাজনীতির দুর্নীতিকেও ছাড়িয়ে গেছে আর্থিক দুর্নীতি। এর মধ্যে ব্যাংক দুর্নীতি, অর্থ পাচার অন্যতম। নানা প্রক্রিয়ায়, নানা পথে এই পাচার হয়ে থাকে।
গত সপ্তাহেই, অর্থাৎ ১৬ আগস্ট সংখ্যা, ঠিকানার প্রথম পৃষ্ঠায় টাকা পাচারের যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, সেই সংবাদটির শিরোনাম ছিল ‘বাণিজ্যের আড়ালে অর্থ পাচার চলছেই’। সংবাদটিতে বলা হয়েছে, অর্থ পাচারের অন্যতম বড় উৎস বৈদেশিক বাণিজ্য। তথ্য জানাচ্ছে, বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে দেশ থেকে প্রতিনিয়ত বিপুল পরিমাণ অর্থের পাচার চলছেই, কিছুতেই থামছে না। প্রতিবছর যে পরিমাণ অর্থ পাচার হচ্ছে, তার প্রায় ৭০-৮০ শতাংশই হচ্ছে বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে। ওভার ইনভয়েসিং বা আমদানিতে মূল্য বেশি দেখানো এবং মূল্য আন্ডার ইনভয়েসিং বা রপ্তানিতে মূল্য কম দেখানোর মাধ্যমে এসব অর্থ পাচার হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষণও বলছে, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সম্পাদনকালে এখনো আন্ডার ইনভয়েসিং এবং ওভার ইনভয়েসিংয়ের দৃষ্টান্ত লক্ষ করা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণ রয়েছে, আমদানি-রপ্তানি পণ্যের বাণিজ্য সম্পাদনকালে এসব অনিয়ম বা দুর্নীতি চলছে। প্রশ্ন জাগে খুব স্বাভাবিকভাবে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারি সত্ত্বেও যখন অর্থ পাচারের মতো ঘটনা দেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দিতে পারে, এমন ঘটনা ঘটতে পারে কীভাবে? তা ছাড়া ২০১৮ সালে যে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়, সেই নীতিমালায় দেশের অথরাইজড ডিলার ব্যাংকগুলোর দায়িত্ব হচ্ছে আমদানি পণ্যের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ কি না, অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের সঠিকতা নির্ধারণ করার বাধ্যবাধকতার কথা। সে দায়িত্ব সঠিকভাবে পালিত হলে তো এমনটা ঘটা কিছুতেই সম্ভব হতে পারে না। তবে কি মিলেমিশে করি কাজ? নাকি ওইসব দুষ্কৃতকারী এতটাই ক্ষমতাশালী যে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাও তাদের স্পর্শ করতে পারে না?
প্রতিবছর পাচারের অর্থের পরিমাণ বাড়ছে। বাংলাদেশে দুর্নীতির মাত্রাও বাড়ছে। কারণ বাদ দিয়ে যদি কেবল কার্য নিয়ে কথা বলা হয়, তবে কখনো দুর্নীতি দূর হবে না, অর্থ পাচারও বন্ধ হবে না। শুধু মাফিয়া, গডফাদারদের কথা বললে কিংবা তাদের জেলে পুরলেই সংকটের সমাধান হবে না। মাফিয়া-গডফাদার তৈরির যে বীজক্ষেত্র, সেই বীজক্ষেত্র ধ্বংস করতে না পারলে শত রোদনে, চোখে আগুন ঝরালেও কাজের কাজ কিছুই হবে না। দুর্নীতি বন্ধ হবে না। আমরা লিখেই যাব, অর্থ পাচারের পরিমাণ এবং দুর্নীতি হাত ধরাধরি করে বাড়তেই থাকবে।