যুক্তরাষ্ট্রের মহান স্বাধীনতা দিবস ৪ জুলাই

প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৪ , অনলাইন ভার্সন
৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের মহান স্বাধীনতা দিবস। ঋতুচক্রের ঘূর্ণাবর্তে নির্দিষ্ট কিছু দিবস প্রতিবছরই ঘুরে ঘুরে আসে। আর এসব দিবসের মধ্যে অন্যতম স্বাধীনতা দিবস। প্রতিটি স্বাধীন দেশের জন্যই দিবসটি গৌরব, অহংকার ও আত্মমর্যাদার। বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম দেশ, যাকে সবদিক বিবেচনায় শ্রেষ্ঠ গণ্য করা হয়ে থাকে, সে দেশটি যুক্তরাষ্ট্র। স্বাধীনতাকে সবচেয়ে গৌরব ও মর্যাদার ধন বলা হয় এ কারণে যে, মহামূল্যবান, মহাকাক্সিক্ষত এ দিনটি প্রায় সব দেশকেই অর্জন করতে হয় শত সংগ্রাম ও লড়াই করে। অসংখ্য, অগণিত মানুষকে জীবন উৎসর্গ করতে হয় স্বাধীনতাসংগ্রামের বেদিমূলে। যে দেশের মানুষ পরাধীন, তারা শৃঙ্খলবদ্ধ হয়ে অত্যন্ত অমর্যাদা ও আত্মগ্লানিতে জীবন কাটায়। তা থেকে মুক্তি পেতে দানবশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে তারা এ বিশ্বাস নিয়ে জীবন দেয় যে, ‘স্বর্গের চেয়ে প্রিয় স্বাধীন স্বদেশভূমি।’

স্বাধীনতাহীনতায় কেউ বাঁচতে চায় না। ইংরেজ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল ১৭৭৬ সালে, আজ থেকে প্রায় আড়াই শ’ বছর আগে। যারা সাধারণভাবে বছরের পর বছর স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাদের ক’জনের নাম আর ইতিহাসে লেখা আছে। নেতৃত্বদানকারীরা এখনো উজ্জ্বল করে আছেন ইতিহাসের পাতা। যার অন্যতম জর্জ ওয়াশিংটন, থমাস জেফারসন, জন অ্যাডামস, বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন, আলেকজান্ডার হ্যামিল্টন, জেমস ম্যাডিসনসহ আরও অনেক মহৎপ্রাণ ব্যক্তি।

স্বাধীনতা মানুষের কেবল আবেগের বিষয় নয়। যাদের স্বাধীনতা নেই, ধনে-জ্ঞানে-মানে যদি তারা অনেক বড়ও হয়, তারা কখনো সুখী হতে পারে না। আবার দখলদার বাহিনী যত শক্তিশালীই হোক, তারা কখনো স্বাধীনতাকামী মানুষকে সবসময়ের জন্য বন্দি করে রাখতে পারে না। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতাপ্রিয় মানুষদেরকেও একসময় রেড ইন্ডিয়ান, ফরাসি, ব্রিটিশ, হিস্পানিকদের শাসন-শোষণে থাকতে হয়েছে। তবে আমরা জানি, আমেরিকাকে প্রথম আবিষ্কার করেন ক্রিস্টোফার কলম্বাস।

স্বাধীনতার পথযাত্রায় প্রথমে ১৩টি রাজ্য মিলে ইউনিয়ন ঘোষিত হয়। পরে আরও ১৩টি রাজ্য ইউনিয়নের সঙ্গে মিলিত হয়। এরপর আরও স্টেট মিলিত হওয়ায় মোট ৫০টি স্টেটে পরিণত হয়ে যুক্তরাষ্ট্র পূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত হয়। দেশের জাতীয় পতাকায় এ জন্য প্রথম ১৩টি রাজ্য ইউনিয়নের সাদা লম্বা দাগ বোঝানো হয়েছে। অন্য ৩৭টি রাজ্যকে তারকা চিহ্নের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষায় শুধু উন্নতমানের প্রশিক্ষিত সৈন্য এবং বিশ্বের সর্বাধিক উন্নত মারণাস্ত্র কাজ করে না। দুটি মহাযুদ্ধে আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগর ছিল যুক্তরাষ্ট্রের খুব বড় রক্ষাকবচ। সে কারণে দুটি বিশ্বযুদ্ধেই, বলতে গেলে, যুক্তরাষ্ট্রের তেমন কোনো ক্ষতিই সাধিত হয়নি।

প্রতি চার বছর অন্তর ইউনিয়ন অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এবং প্রতিটি স্টেটের গভর্নর নির্বাচিত হন। প্রতিটি স্টেট এতটাই স্বশাসিত যে তাদের আলাদা আলাদা সংবিধান ও বাজেট প্রণয়ন এবং আইন তৈরি ও প্রয়োগের ক্ষমতাও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির মূলশক্তি অস্ত্র বাণিজ্য। সব দিক থেকেই আমেরিকাকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর রাষ্ট্র মনে করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধে তেল আবিবের পক্ষে সরাসরি জড়িয়ে পড়েছিল। শেষ পর্যন্ত তারই মধ্যস্থতায় আবার যুদ্ধবিরতি হয়। ট্রাম্পকে যুদ্ধবিরোধী মনে করা হলেও মধ্যপ্রাচ্যসহ ইসরায়েল-ফিলিস্তিন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘ দিন ধরে চলছে। ফিলিস্তিনের গাজা প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

বিশ্ববাসী এখনো প্রত্যাশা করে যুক্তরাষ্ট্র তার অভিভাবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বিশ্বকে যুদ্ধমুক্ত একটি সুন্দর বাসযোগ্য মানবিক বিশ্ব গড়ে তুলতে অবদান রাখবে। যেখানে সত্যি সত্যি কোনো যুদ্ধ, রক্তপাত, প্রাণহানি থাকবে না। যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৯তম স্বাধীনতা বর্ষে মানুষের এই নির্মল প্রার্থনা বাস্তবে রূপ নিক। যুক্তরাষ্ট্রে স্বাধীনতা দিবস সরকারি ছুটির দিন। এদিন ব্যাপক আতশবাজি পোড়ানো হয়। মানুষজনÑনারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধ সবাই আনন্দে মেতে ওঠে। সারা দেশেই বয়ে চলে আনন্দের বন্যা। এ দিনটি হোক পৃথিবী বদলানোর নতুন দিন। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস সার্থক হোক। এ দিনের আনন্দ মানুষের সমগ্র জীবনে প্রবাহিত হোক। ঠিকানার পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রবাসী ও বিশ্ববাসীকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078