৩৬শে জুলাই ২০২৪ : একটি সৃজনশীল গণঅভ্যুত্থান-৬

প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২৫, ১১:১৫ , অনলাইন ভার্সন
জনরোষ ও প্রতিবাদ প্রকাশের আরেকটি শক্তিশালী মাধ্যম ছিল কার্টুন, যা একাধারে ব্যঙ্গচিত্র (satire) ও রম্যচিত্র (humour)। ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালীন রাজপথে বিক্ষোভ, মিছিল, সমাবেশের পাশাপাশি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা বিষয় নিয়ে প্রতিবাদী ও ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশ করা হয়েছে। কার্টুন একটি বৈশ্বিক শিল্প বা আর্ট। বেশির ভাগ কার্টুন ব্যক্তিকেদ্রিক, নৈসর্গিক প্রকৃতিও কার্টুনবন্দী হয়, যেমন ‘দ্য গ্রেট ওয়াভ’। কারও রোষানল এড়ানোর জন্য প্রতীকধর্মী কার্টুনও অঙ্কিত হয়। ব্যক্তি-বস্তুকে বিকৃত করে কার্টুন আঁকা হয়; এর কোনো নান্দনিক আবেদন নেই, কিন্তু তীব্র তীক্ষè অর্থদ্যোতনা আছে, যে কারণে এটি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় শিল্পমাধ্যম রূপে গণ্য হয়। এর অন্তর্নিহিত বার্তা খুবই শক্তিশালী। একেকটা কার্টুন নীরব থেকেও হাজার কথা বলার সমান কাজ করে। যতই বিকৃত করে আঁকা হোক না কেন, মূল ব্যক্তি-বস্তুকে শনাক্ত করতে অসুবিধা হয় না। একে শিল্পীর এক অসাধারণ কৃতিত্ব বলে মনে করি। একজন কার্টুনিস্ট শুধু শিল্পী নন, বড় মাপের একজন ‘ক্রিটিক’ও। ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন দর্শকের জন্য যতই উপভোগ্য হোক না কেন, যাকে নিয়ে আঁকা হয়, তার অন্তর পুড়ে, মর্মদাহ হয়। এ জন্য ক্ষমতাবানেরা কার্টুনকে ভয় পান; তাদের রোষানলে কার্টুনিস্টদের ওপর খড়্গ নেমে আসে।
কার্টুন নিয়ে প্রকাশিত কোনো পুস্তক আমার চোখে পড়েনি; তবে একটি প্রদর্শনীর কথা জানা যায়। ১৬-১৮ আগস্ট ২০২৪ তিন দিনব্যাপী ‘কার্টুনে বিদ্রোহ’ নামে ‘দৃকপাঠ ভবনে’র গ্যালারিতে কার্টুন নিয়ে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন হয়। আয়োজন করে বাংলাদেশ কার্টুনিস্ট নেটওয়ার্ক, দৃক ও ইআরকি। ‘ইয়ারকি’ (Earki) একটি ব্যঙ্গাত্মক অনলাইন সাময়িকী। ফারসি ‘এয়ার’ (বন্ধু, সখা) শব্দজাত বাংলায় ইয়ার্কি শব্দের প্রচলন আছে, যার অর্থ রসিকতা। দৃক অপর একটি সংগঠন; এর অর্থ চোখ, দৃষ্টি, জ্ঞান। প্রদর্শনীতে ১৭৫টি, মতান্তরে ৩০০টি কার্টুন প্রদর্শিত হয়। গ্যালারিতে মেহেদী হক, আহসান হাবীব, নাসরীন সুলতানা মিতুসহ নবীন-প্রবীণ ৮২ জন কার্টুনিস্টের ছবি স্থান পেয়েছে। প্রদর্শনী সম্পর্কে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কার্টুনিস্ট ও বিশেষজ্ঞের যেসব মতামত প্রকাশিত হয়, আমরা প্রথমে সে বিষয়ে আলোকপাত করতে চাই।
অন্যান্য কার্টুনের মধ্যে ‘মুক্তিযুদ্ধ’ ও ‘অধিকার’ নামক কার্টুন দুটি দর্শকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। প্রদর্শনীতে দেবাশিষ চক্রবর্তীর পোস্টারও স্থান পেয়েছে। তার আঁকা ‘হুকুমের আসামি’ এরূপ একটি উল্লেখযোগ্য পোস্টার। হাসান মাহমুদ সানি ‘দ্য গ্রেট ওয়েভ ২৪’ নামে যে কার্টুনটি অঙ্কন করেন, তা জাপানের শিল্পী হোকুসাইয়ের একই নামের প্রখ্যাত শিল্পকর্ম অবলম্বনে অঙ্কিত। মূলে একটা বিশালাকৃতির সামুদ্রিক ঢেউ বক্রাকারে মাথা তুলে রয়েছে, ঢেউয়ের পেটে তিনটি দোদুল্যমান নৌকা, পেছনে দূরে তুষারাবৃত ফুজি পর্বত। সানির আঁকা ‘মহাঢেউ’ আসলে একটা দানবীয় ঢেউÑএর মুখে পোরা তিনজন ছাত্র আর পেটে তিনটি নৌকা, পেছনে অদূরে রয়েছে শহীদ মিনার। রক্তঝরা আন্দোলনের প্রতীক লাল রঙে এটি অঙ্কিত। মূল মহাঢেউয়ের রংটি ছিল গভীর সমুদ্রজলের নীল রং। ‘কাউন্টডাউন’ কার্টুনটি আঁকেন আহসান হাবিব। এতে শেখ হাসিনার পতনের ইঙ্গিত রয়েছে।
এই প্রদর্শনী সম্পর্কে কার্টুনিস্ট মেহেদী হক বলেন, ‘একটা সময় আমাদের দেশে কার্টুনের খরা যাচ্ছিল, মানুষ আঁকতে ভয় পেত। তবে এবার তরুণেরা যেমন সেই ভয় থেকে বের হয়ে এসেছে, অন্যদেরও বের হয়ে আসতে সাহায্য করেছে। এটা ইতিহাসের একটা বড় মোড় পরিবর্তন। ... তরুণেরা এবার বুঝিয়ে দিয়েছে, সাহস করে আঁকলে কিছু হয় না। কজনকে গুলি করে মারবে। সাহসিকতার এ বিষয়টি কার্টুনেও উঠে এসেছে। এটা প্রতিবাদের একটা অনন্য মাধ্যম, এর মধ্যেও একধরনের প্রতিবাদের ভাষা তৈরি হবে।’
‘ইআরকি’ নামক একটি সংগঠনের সম্পাদক সিমু নাসের বলেন, ‘পুরো আন্দোলনের বড় অংশেই ছিল স্লোগান, গ্রাফিতি, কার্টুন, র‌্যাপ গান। চারদিকে একটা দারুণ জিনিস হয়ে গেছে। তরুণদের পথ রুদ্ধ করে দিলে তারা যে সব ভেঙেচুরে এই কাজগুলো করতে পারে, এই কার্টুনগুলো তার প্রমাণ।’ (ডেইলি স্টার বাংলা, অনলাইন রিপোর্ট, ১৮ আগস্ট ২০২৪)
‘কারফিউর দিনগুলিতে কার্টুন’ শিরোনামে একটি স্মৃতিচারণামূলক কথিকায় মেহেদী হক বলেন, ‘রাজনৈতিক কার্টুন শেষ হয়ে গেল কি না, এমন আলোচনা যখন চলছিল এবং নিউ এজসহ হাতে গোনা দু-একটা পত্রিকা ছাড়া যখন রাজনৈতিক কার্টুন নেই বললেই চলে, তখন জুলাইয়ের অগ্নিঝরা সময় যেন কার্টুন, আর্ট ও গ্রাফিতির শত ফুলকি ছড়িয়ে উদয় হলো। জুলাই অভ্যুত্থানের অব্যবহিত পর জুলাই কার্টুনের সংকলনের কাজে থাকার সুবাদে বলতে পারি, এই এক মাসে কম সময়ে শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই তরুণেরা এঁকেছেন ছয় শতাধিক কার্টুন। এই সময় আমি নিজেও বিস্তর কার্টুন এঁকে আন্দোলনে শামিল হতে চেয়েছি। ... আমরা যারা রাজনৈতিক কার্টুন আঁকি, তারা জানে ন্যায়ের লড়াইটি কী; আমাদের লড়াইটা আসলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে, সেটা যেই-ই করুক।’ (প্রথম আলো, ৪-১১-২৪)। ‘রাজনৈতিক কার্টুনে ফিরে আসা’ শীর্ষক নিবন্ধে মাহফুজ রহমান বলেন, ‘এবার ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান জোরালো করতে কার্টুন যে কতটা প্রভাব ফেলেছে, তার একটা ধারণা মেলে এ সময়ে আঁকা কার্টুনের সংখ্যা দেখে। ... কার্টুনিস্টরা যখন আঁকতে পারছিলেন না, তখন অবধারিতভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল একাধিক দৈনিক পত্রিকার রম্য ক্রোড়পত্র। সরকারি চাপ, বিতর্কিত ডিজিটাল আইন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখরাঙানি আরও অনেক ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছিল। কার্টুনের প্রতি সরকারের অসহিষ্ণুতা সংক্রমিত হয়েছিল বিভিন্ন পেশাজীবী মহলেও। ফলে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যঙ্গ ও রম্যের অন্যতম ভাষা কার্টুন হয়ে পড়েছিল কোণঠাসা। গণঅভ্যুত্থানের সময় শাসক যত জোরে আঘাত করেছেন, তত তীব্র বেগে আগুনের স্ফুলিঙ্গের মতো বেরিয়ে এসেছে শত শত কার্টুন। এসব কার্টুন মানুষের বুকে সাহসের আগুন জ্বালিয়েছে। রাজনৈতিক কার্টুন কেবল মানুষকে হাসায় না, মানুষকে সাহসও দেয়। ... ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান কল্পনার সব কটা দরজা-জানালা হাট করে খুলে দিয়েছে। ওই দরজা-জানালা যেন আর বন্ধ না হয়।’ (প্রথম আলো, ২২-৭-২৪)। ‘দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড’ পত্রিকার বাংলা প্রকাশন ‘ইজেল’ সংখ্যায় (২১-৮-২৪) জুনায়েত রাসেল রচিত ‘শহরে কার্টুনে বিদ্রোহ’ শিরোনামে একটি ‘ফিচার’ প্রকাশিত হয়। তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে জেগে ওঠে পুরো দেশ। এই আন্দোলনের শুরুর দিনগুলো থেকেই কার্টুনিস্টরা তাদের হাতে তুলে নেন রংপেন্সিল ও তুলি। আঁকেন একের পর এক জ্বালাময়ী কার্টুন। তখন সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা জুগিয়েছিল তাদের আঁকা এসব ব্যঙ্গচিত্র।’ আয়োজনের কিউরেটর এএসএম রেজাউর রহমান বলেন, ‘পুরো আয়োজনটাই তারুণ্যনির্ভর। কার্টুনগুলো এঁকেছেন তরুণেরা। সেগুলো গণমানুষকে উজ্জীবিত করেছে। ... কার্টুন মাধ্যমটা মানুষের দারুণ আগ্রহের জায়গা। গণমানুষের সঙ্গে এর যোগাযোগ খুব দ্রুত হয়।’ তরুণ কার্টুনিস্ট মাহতাব রশীদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার একজন শিক্ষার্থী, তার দশের অধিক কার্টুন প্রদর্শিত হচ্ছে। তার অভিমত : ‘গত বছরগুলোতে অনেকেই কার্টুন এঁকেছেন, তবে ভয় ছিল। সেলফ সেন্সরশিপ নিয়ে আঁকতে হয়েছে। যখন একটা ক্রান্তিকাল এল, দেয়ালে যখন পিঠ ঠেকে গেল মানুষের, দেখলেন রাস্তায় মানুষ মারা যাচ্ছে, তখন আর এই সেন্সরশিপ কাজ করেনি। কেউ আর আঁকতে ভয় পায়নি।’ 

‘যুগান্তর পত্রিকা’র (১৮-৮-২৪) প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় ছিলেন কার্টুনিস্টরা। প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে ব্যঙ্গাত্মক কার্টুনকে ব্যবহার করেছেন তারা। বিপ্লবের স্মরণীয় মুহূর্তগুলো তাদের তুলির আঁচড়ে অমরত্ব পেয়েছে।’

লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক তাবাসসুম ইসলাম এক প্রতিবেদনে বলেন, ‘এই প্রদর্শনীর কার্টুনগুলো ইতিহাসের দলিল লিখতে নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। ... প্রদর্শনী দেখতে দেখতে আমরা সদ্য অতীত হয়ে যাওয়া বিদ্রোহী দিনগুলোকে হৃদয়ে ধারণ ও চারণ করি। কে না জানে, ইতিহাসকে ধারণ করতে চাইলে তা কত জরুরি।’ (ইন্টারনেট)
ক্ষমতার শীর্ষে ছিলেন শেখ হাসিনা। রাজনৈতিক আন্দোলনের মতো সাংস্কৃতিক আন্দোলনের প্রধান ‘টার্গেট’ ছিলেন তিনি। তাকে নিয়ে সর্বাধিক কার্টুন রচিত হয়েছে। যেমন :
১. মেহেদী হকের আঁকা উড়ন্ত প্লেনে শেখ হাসিনার পলায়নের কার্টুনটি দর্শকের সহজেই নজরে পড়ে। প্লেন তিনি নিজেই চালাচ্ছেন, বাম হাতে স্টিয়ারিং ধরে আছেন, ডান হাত কপালে, মুখ বিকৃত। ‘হায়! কপালে এই ছিল!’Ñভাবখানা যেন এরূপ। পেছনে শেখ রেহানা উঁকি দিয়ে দেখছেন। নিচে বিজয়োৎফুল্ল জনতার উদ্যত উত্থিত হাত। কার্টুনটি ৬ আগস্ট ‘দ্য নিউ এজ’ পত্রিকায় প্রথম ছাপা হয়।
২. প্লেনে পলায়নরত শেখ হাসিনার অপর একটি কার্টুন আছে। তিনি খোলা প্লেনে মুখ বেজার করে একাই বসে আছেন; পরনে নীল রঙের শাড়ি, কাঁধে জড়ানো আঁচল বাতাসে উড়ছে। এর ডান পাশে লেখা : ‘হাসিনা নাকি পালায় না!’ কিন্তু বাস্তবতা এই, তিনি পালিয়েছেন, পালাতে বাধ্য হয়েছেন।
৩. অন্য একটি কার্টুনে শেখ হাসিনা কাঁদছেন, বাম হাতে টিস্যু পেপার দিয়ে নাক মুছছেন, আর ডান হাতের দুই আঙুলে বিজয়সূচক ‘ভি’ দেখাচ্ছেন। মাথার ওপরে লেখা রয়েছে : ‘নাটক কম করো পিও!’ এটি মায়াকান্নার কার্টুন, এঁকেছেন আরিফুর রহমান। ১৮ জুলাই আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে আওয়ামী লীগ ‘শোক দিবস’ পালন করে। কার্টুনটি এরই প্রেক্ষাপটে আঁকা হয়।
৪. আরেকটি কার্টুনে শেখ হাসিনাকে ডাইনির আঙ্গিকে আঁকা হয়েছে। তিনি বাংলার মানচিত্রের ওপর দাঁড়িয়ে আছেন, নিচে একটা শ্বেতপাখির বুকে দু’হাতে একটা লাঠি দিয়ে খোঁচা মারছেন, পাখির বুক দিয়ে রক্ত ঝরছে। সামনে লাল কালিতে লেখা আছে : ‘আর কত রক্ত খাবি।’ লেখাটি ঘিরে তিনটি তালু হাতের ছাপচিত্র রয়েছে। অনুরূপ ছাপ পেছনেও আছে।
৫. অন্য কার্টুনিস্ট রাকিব হাসান অপু এঁকেছেন গদিতে আসীন শেখ হাসিনা, পেছন থেকে মুখের আদল দিয়ে আঁকা গদি বলছে : ‘এলা ছাইড়া দেন’।
৬. একটি কার্টুনে আঁকা হয়েছে তোতা পাখির আঙ্গিকে শেখ হাসিনার মুখাবয়ব। চোখে চশমা আঁটা, টিয়া রঙের গাত্র বর্ণ, লাল রঙের ঠোঁট। পাশে লেখা আছে : ‘তুই রাজাকার’। কার্টুনিস্টের নাম নেই, অজ্ঞাত।
৭. ‘আজকের চাটা ভালো ছিল।’ শীর্ষক কার্টুনে এক ব্যক্তি জিহ্বা বের করে পা চাটছে; পা যে শেখ হাসিনার, তা আকার-ইঙ্গিতে বোঝা যায়।
৮. শেখ হাসিনার স্ট্যাচুধর্মী একটি কার্টুন আছে; গোলাকৃতির বিশাল দেহ; ডান হাত অভয়দান ভঙ্গিতে সামনের দিকে প্রসারিত; বাম হাত পেছন দিকে আড়াল করা। এই হাত বরাবর এক ব্যক্তি উঁকি মেরে দেখছেন, তার এক হাতে একটি প্ল্যাকার্ড, এতে একটি শব্দ লেখা আছে; শব্দটি পড়া যায় না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক-সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে দুটি কার্টুন এবং ডিবিপ্রধান হারুন আর-রশীদকে নিয়ে একটি কার্টুন আঁকা হয়েছে। ক্ষমতাবলয়ের বিচারে আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় ব্যক্তি ওবায়দুল কাদের। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে প্রায় প্রতিদিন তার কিছু না কিছু বক্তব্য থাকে। তার বাচনভঙ্গি ও রেটোরিক ভাষা প্রচারমাধ্যমে মানুষ লক্ষ করে আসছেন।
৯. ‘She has made us fly.’/ ‘কাউয়া কাদের।’ চিত্র-উভয় লেখার মাঝখানে একটা কাক ও কাদেরের ছবি। ইংরেজি ভাষার উক্তিটি যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের, তাতে সন্দেহ নেই। ‘ঝযব’ বলতে শেখ হাসিনাকে বোঝানো হয়েছে। এখানে ‘কাউয়া’র (<কাক) সঙ্গে তুলনা করে ওবায়দুল কাদেরকে হেয়জ্ঞান করা হয়েছে।
১০. She ie ready to fly. (উপরে লাল কালিতে লেখা)/ ‘দেশে আনো বিচার করো।’ (নিচে সাদা কালিতে লেখা)। কার্টুন-বাম দিকে ওবায়দুল কাদের দাঁড়িয়ে আছেন; বাম হাতের তর্জনী দিয়ে লেখাটি দেখাচ্ছেন। ডান দিকে নিচে ছোট আকারে একজন নারীর চিত্র, খুব সম্ভবত তিনি শেখ হাসিনা হবেন।
১১. ‘HUNGRY?/ MAGIC RECIPE. কার্টুন-ডিবির মহাপরিচালক হারুন অর-রশিদের ব্যঙ্গচিত্র, মুখাবয়ব ঈষৎ বিকৃত। উপরে তার ডান কানের পাশে প্রথম লেখাটি রয়েছে। তিনি সামনে দুই হাতে একটি পাত্র ধরে আছেন, পাত্রের গায়ে দ্বিতীয় শব্দ দুটি লেখা। কার্টুনটি ছয় সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয়ে আটক রেখে এক টেবিলে বসে খাওয়ার দৃশ্যের প্রেক্ষাপটে অঙ্কিত হয়েছে। তারিখ : ৩০ জুলাই ২০২৪।
১২. ‘মাইরা ফেলছি, এখন কী করবা।’ কার্টুনÑএকজন পুলিশ কর্মকর্তা দাঁড়িয়ে আছেন।
১৩. ‘দড়ি ধরে মারো টান, স্বৈরাচার হবে খান খান।’ সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘হীরক রাজার দেশে’ নামক চলচ্চিত্রের একটি সংলাপ ছিল : ‘দড়ি ধরে মারো টান। রাজা হবে খান খান।’ এখানে রাজার স্থলে স্বৈরাচার শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। শিল্পী : হোসনে আরা রাখি। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
এরূপ কার্টুন অনেক আছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান শিল্পীসমাজকে মাতিয়ে তুলেছিল; শিল্পীরাও আপন তাগিদে সাড়া দিয়ে আন্দোলনকে বেগবান, গতিশীল, সফল, সার্থক করে তুলেছেন। [চলবে]
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078