এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন : প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৫, ১৯:৪৯ , অনলাইন ভার্সন
আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একটি দিনে অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, এই ঘোষণার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন উপযুক্ত সময়ে বিস্তারিত রোডম্যাপ দেবে।

শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দেন। তার ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, নির্বাচনকালীন সময়ে একটি গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি বলেন, নির্বাচন হবে ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একটি দিনে। এই ঘোষণার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনের বিস্তারিত রোডম্যাপ প্রকাশ করবে।

ভাষণে ড. ইউনূস বলেন, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটগুলোর মূল কারণ ছিল ত্রুটিপূর্ণ ও প্রহসনের নির্বাচন। এ ধরনের নির্বাচনের মাধ্যমে একদলীয় শাসন কায়েম করে একটি রাজনৈতিক শক্তি ফ্যাসিবাদী রূপ নেয়। ফলে এমন নির্বাচন আয়োজনকারীরা যেমন ইতিহাসে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হন, তেমনি সে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দলও জনগণের ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়।

তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি নির্বাচন চাই; যা হবে পরিচ্ছন্ন, উৎসবমুখর, শান্তিপূর্ণ এবং সর্বোচ্চ ভোটার ও রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে সম্পন্ন। এই নির্বাচন হবে নতুন সংকট এড়ানোর মাইলফলক এবং নতুন বাংলাদেশ গঠনের যাত্রা শুরু।’

অন্তর্বর্তী সরকার তিনটি মূল ম্যান্ডেট—সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন—নিয়ে দায়িত্ব নিয়েছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আগামী রোজার ঈদের মধ্যেই আমরা সংস্কার ও বিচারের ক্ষেত্রে একটি গ্রহণযোগ্য অবস্থানে পৌঁছাতে পারব। বিশেষ করে, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার, যা জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি জাতির দায়, সে ক্ষেত্রে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে বলে আমরা আশা করি।’

ড. ইউনূস ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, এবারের নির্বাচন কেবল একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নয়, বরং এটি একটি আদর্শ রাষ্ট্র নির্মাণের প্রক্রিয়ার অংশ। তিনি বলেন, ‘ভোটারদের বুঝে নিতে হবে কে কোন প্রতীকের পেছনে দাঁড়িয়ে, কারা সত্যিকারের পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে এবং কারা শুধুই পুরোনো সংস্কৃতির ধারক। আমরা চাই, এই নির্বাচন দেখে অভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মা শান্তি পাক।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেড় দশক পর দেশে একটি সত্যিকারের জনপ্রতিনিধিত্বশীল সংসদ গঠিত হবে। বিপুলসংখ্যক তরুণ প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। এটা ঐতিহাসিক একটি সুযোগ এবং দায়িত্ব।’

তিনি জনগণকে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি আদায়ে সচেষ্ট হতে বলেন, যাতে আগামী সংসদের প্রথম অধিবেশনেই সংস্কারমূলক আইনসমূহ পাস হয় এবং ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে জবাবদিহি প্রতিষ্ঠিত হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পতিত ফ্যাসিবাদ এবং তাদের দেশি-বিদেশি দোসররা নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রচেষ্টাকে বারবার বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। আমরা এখনো যুদ্ধাবস্থায় রয়েছি। তাই সকল দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধের প্রাচীর গড়ে তুলতে হবে।’

তিনি দেশবাসীকে সতর্ক করে বলেন, ‘তারা (পরাজিত শক্তি) ওত পেতে আছে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে রুখে দেওয়ার জন্য। কিন্তু আমরা তাদের কোনোভাবেই এই সুযোগ দেব না। আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী নতুন প্রজন্মের সহায়তায় আমরা বিজয়ী হব।’

ভাষণের শেষ অংশে অধ্যাপক ড. ইউনূস বলেন, ‘এই নির্বাচন শুধু একটি দিন নয়; এটি একটি গৌরবময় দায়িত্ব ও ঐতিহাসিক সুযোগ। আমাদের সুচিন্তিত ও দায়িত্বশীল ভোটই নির্মাণ করবে নতুন বাংলাদেশ। শহীদদের রক্তদান সার্থক হবে। তাই এখন থেকেই আপনার ভোটের গুরুত্ব অনুধাবন করুন, মতবিনিময় করুন, সিদ্ধান্ত নিন।’

ভাষণের শেষ মুহূর্তে তিনি সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান এবং দেশবাসীর শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে বক্তব্য শেষ করেন।

ঠিকানা/এনআই
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078