জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন সম্মান

প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৫, ২২:১৯ , অনলাইন ভার্সন
মানুষের জীবনে শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তির মধ্যে অন্যতম হলো সম্মান, যা কেবল স্রষ্টা প্রদত্ত। তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে সম্মানিত করেন আর যাকে ইচ্ছা তাকে অসম্মানিত করেন। এটি একটি অপার্থিব এবং অমূল্য উপহার, যার তুলনা কারও সঙ্গে করা চলে না। তবে ইচ্ছা, চেষ্টা এবং নীতি-নৈতিকতার ভিত্তিতে তা প্রদান করে থাকেন। যে মানুষ সম্মানিত হয়ে থাকে, সে-ই প্রকৃত সফল ও সুখী ব্যক্তি। আজকের আলোচনায় নিচে উল্লেখিত হলো একগুচ্ছ মনকাড়া সম্মানভিত্তিক পর্যালোচনা।

যেখানে সম্মান নেই সেখানে সাফল্য অর্থহীন।
মানুষকে সম্মান দিতে শেখা উচিত, কাউকে সম্মান দিলে নিজেরও সম্মান প্রাপ্তি হয়।
ছলনার আশ্রয় নিয়ে কোনো কিছু জেতা অপেক্ষা সম্মানের সঙ্গে হেরে যাওয়া অধিকতর শ্রেয়।
যে বিশৃঙ্খলভাবে জীবনযাপন করে, সে কোনো সম্মান ছাড়াই মৃত্যুবরণ করে। মানুষ তখনই সঠিকভাবে জীবিত থাকতে পারে, যখন তাকে তার প্রাপ্য যথাযথ সম্মান দেওয়া হয়ে থাকে।

মানুষের সম্মান তার মানবিকতা বোধের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে, যা সঠিক সময়ে বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
মানবজাতির সবচেয়ে বড় ক্ষতি হলো নিজের আত্মসম্মানে আঘাত হানা। তার কাছে এর থেকে বড় ক্ষতি আর কিছু নেই।
দেশের একজন নাগরিকের কাছে সবচেয়ে বড় ও সম্মানের বিষয়টি হলো তার নিজের দেশের জন্য সার্থক কিছু কাজ করা। নিজের অবদান রেখে যাওয়া। সম্মান ছাড়া মানবজীবন অসম্পূর্ণ থাকে এবং সম্মান এমনই একটি জিনিস, যা মানুষকে নিজের যোগ্যতার মাধ্যমে অর্জন করতে হয়। একজন মানুষ যদি তার উপর স্তরের ব্যক্তিদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে, তাহলে তার নিম্ন স্তরের মানুষেরাও সেই ব্যক্তিকে সম্মান করবে।
যে ব্যক্তি তার পিতামাতাকে পূর্ণ সম্মান দিতে জানে, তার কখনো মৃত্যু হয় না। প্রত্যেক মানুষের জীবনের মুখ্য উদ্দেশ্য হওয়া উচিত নিজের কৃতকর্মের বলে সম্মান অর্জন করা, যা ভবিষ্যতে তার বাকি উদ্দেশ্যগুলোকেও পূরণ করতে সক্ষম করবে। যদি কোনো ব্যক্তি সারা জীবন ধরে তার সম্মানকে সঠিকরূপে বজায় রাখতে পারে এবং নিজের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যদি সেই সম্মান সে ধরে রাখতে পারে, তবেই তার জন্ম সার্থক।
সম্মান বা মর্যাদা অর্জন করতে হলে একজন মানুষকে আলাদা করে কিছু করতে হয় না; তিনি যদি শুধু তার নিজের কর্তব্য ও দায়িত্বগুলো সঠিকভাবে পালন করেন, তাহলেই যথেষ্ট। মানবজীবনের সবচেয়ে বড় অর্জনের অন্যতম প্রাপ্তির নাম হলো সম্মান। কারণ অন্য সব বড় বড় গুণাবলি অর্জনের মাধ্যমেই এটি অর্জিত হয়ে থাকে। মানবজীবন অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত এবং সীমিত পরিসরের হয়ে থাকে। তাই আমাদের উচিত এই ছোট্ট জীবনকে তার প্রকৃত মর্যাদা এবং সম্মান দেওয়া আর তা একমাত্র সম্ভব আমদের ইতিবাচক কার্যাবলির মাধ্যমে। অন্যের সম্মানহানি করে নিজের কখনো সম্মানপ্রাপ্তি হয় না।

যে মানুষ অন্যের সম্মান করতে জানে না, সে বস্তুত কিছুই জানে না ও শেখেনি। সম্মান জিনিসটি শর্তসাপেক্ষ নয়; ব্যক্তি যদি তার নিজের ভূমিকা সঠিকরূপে পালন করে, সেখানেই নিহিত রয়েছে তার প্রকৃত সম্মান।
বড়দের সম্মান করো, ছোটরাও তাহলে তোমাকে সম্মান করবে। পৃথিবীতে যে মানুষটির কোনো সম্মানজনক স্থান নেই, সেই ব্যক্তি সবচেয়ে ভাগ্যহীন ব্যক্তি বলে পরিগণিত হয়।

দেশমাতৃকার সম্মানার্থে যে বীর শহীদগণ নিজেদের প্রাণ তুচ্ছ করে দেশের জন্য আত্মত্যাগ করেছেন, তারা সর্বোচ্চ সম্মানের অধিকারী। একটি রাজ্যে প্রজাদের যতটা প্রাপ্তি হয়, ততটাই তারা তাদের রাজ্যের রাজাকে সম্মান দেবে। যে মানুষ না জেনে অজ্ঞতার বশে সম্মান দেখায়, সেই সম্মান প্রদর্শনে গর্ববোধ করার মতো কিছু নেই। অসৎ ব্যক্তিকে সম্মান প্রদর্শন করা অথবা সম্মানিত ব্যক্তিকে অপমান করা একই রকম দোষের।
যে ব্যক্তি কারও কদর, সম্মান ও মূল্য দিতে জানে না, সেই ব্যক্তির ওপর সময় নষ্ট করা অর্থহীন।
যে মানুষ সবাইকে সম্মান করতে জানে সেটি হলো তার ব্যক্তিত্বের সর্ববৃহৎ একটি গুণ। দেশের সুনাগরিক হিসেবে দেশের আইনকে শ্রদ্ধা করা উচিত এবং তাকে যথাযথভাবে মর্যাদা প্রদর্শন করা উচিত। উঁচু-নীচু ভেদাভেদে সম্মান প্রত্যেক মানুষেরই প্রাপ্য; সে একটি সাধারণ কেরানি হোক অথবা উচ্চপদস্থ কোনো আইসিএস অফিসার।
যে ব্যক্তি জানে না দিতে পিতামাতাকে সম্মান,
জানবে তার সমাজেও নেই কোনো মান।
মানুষ যেই ব্যক্তিদের বেশি সম্মান করে তার দ্বারাই প্রতিবার সে আহত হয়ে থাকে।
যে মানুষটি গোলাপ পছন্দ করে তাকে অবশ্যই গোলাপের কাঁটাকেও সম্মান করতে হবে।
কিছু চরিত্রহীন পুরুষ সৌন্দর্যকে সম্মান দিতে জানে না, জানে শুধু তাকে ব্যবহার করতে।
যারা প্রকৃত জ্ঞানী ব্যক্তি, তারা অন্যকে সম্মান দিয়ে নিজেকে আরও সমৃদ্ধ করে তোলেন।
মানুষ যখন তার বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে, তখন তার সম্মানও বিনষ্ট হয়; এবং তখনই তার মৃত্যু হয়।
কর্মক্ষেত্রে নিজের অধীন ব্যক্তিকে সামান্য মনে না করে তাকে সম্মান প্রদর্শন করলে আপনিও তার কাছ থেকে উচ্চতর সম্মানের অধিকারী হবেন। মানুষের জীবন সংক্ষিপ্ত; তাই জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে সম্মান করা উচিত। যে পুরুষ নারীর মর্যাদা দিতে পারে না, সে পুরুষ নামের কলঙ্ক।
নারী জাতিকে সম্মান জানানো মানে সৃষ্টিকে সমাদরে স্বীকৃতি দেওয়া। পারস্পরিক সম্মান হলো প্রকৃত সম্প্রীতির ভিত্তি। ভয়ের ওপর ভিত্তি করে যে সম্মান তৈরি হয়, তার থেকে তুচ্ছ আর কিছু হয় না। ভালোবাসা হলো সম্মান প্রদর্শনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বহিঃপ্রকাশ। সম্মান হলো একটি দ্বিমুখী রাস্তা। যদি তুমি সম্মান পেতে চাও, তবে তোমাকে সম্মান দিতেও হবে। মানুষের জনপ্রিয়তার থেকেও তার সম্মান অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
কোনো ব্যক্তিকে কেবল তার ধন-সম্পদের জন্য সম্মান করা উচিত নয়, বরং তার জনহিতকর কাজের জন্য আমাদের তাকে সম্মান প্রদর্শন করা উচিত। ঠিক যেমন আমরা সূর্যের উচ্চতার জন্য তাকে গুরুত্ব দিই না, তার কার্যকারিতার জন্য গুরুত্ব দিয়ে থাকি আর আমরা তাকে সম্মান জানাই। যদি মানুষের প্রতি আপনার মনে কিছুটা শ্রদ্ধা-ভক্তি থাকে, তবে আপনি তাদের আরও উন্নত হতে সাহায্য করুন। তাদেরকে আপনি আরও কার্যকর করতে সাহায্য করতে পারেন। অন্য মানুষের অনুভূতির সম্মান করুন, এটি আপনার কাছে অর্থহীন হতে পারে, তবে এটি তাদের কাছে অনেক মূল্যবোধ রাখে।

শ্রদ্ধার সবচেয়ে আন্তরিক রূপগুলোর মধ্যে অন্যতমটি হলো অন্যের কথা মন দিয়ে শোনা।
আমাকে আপনার পছন্দ বা অপছন্দ নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন নই। আমাকে কেবল আপনি মানুষ হিসেবে শ্রদ্ধা করুন, সেটাই যথেষ্ট। আপনি অন্যের কাছ থেকে যেরকম ব্যবহার আশা করেন, সেভাবেই অন্যদের সঙ্গে আচরণ করুন। আপনি যেভাবে কথা শুনতে চান, অন্য মানুষের সঙ্গেও সেভাবেই কথা বলুন। তাতে শ্রদ্ধা অর্জিত হবে। আর সেই শ্রদ্ধা একসময় সম্মানে রূপান্তর হবে।
যে অন্যকে ভালোবাসে, সে সর্বদা তাদের দ্বারা ভালোবাসা লাভ করে। যে অন্যকে সম্মান করে, সে প্রতিনিয়ত তাদের দ্বারা সম্মানিত হয়। কাউকে সম্মান করা আপনার ব্যক্তিত্বের গুণকে নির্দেশ করে। মানুষ বিনীত বা বিনম্র না হলে অন্য কাউকে সম্মান প্রদর্শন করতে পারে না। আপনি যেভাবে পর্যবেক্ষণ করে অন্যকে মূল্যায়ন করবেন আর ভক্তি-শ্রদ্ধা করবেন কিংবা সম্মান করবেন, অন্যরাও ঠিক তদ্রƒপ আপনাকে মূল্যায়ন, শ্রদ্ধা ও সম্মান করবে। মনে রাখবেন, মানুষ মানুষের জন্য। তাই মানুষকে ভালোবাসুন, ভক্তি-শ্রদ্ধা করুন, সম্মান করুন, বিনিময়ে আপনিও পাবেন ভক্তি, শ্রদ্ধা আর সম্মান।

বিশ্বের প্রতিটি মানুষই ঈশ্বরের সৃষ্ট প্রাণী, তাই আমাদের অবশ্যই অন্য ব্যক্তিদের যথাযোগ্য সম্মান করতে হবে। তবে সম্মান প্রদর্শন করার অর্থ এই নয় যে আমাদের তাদের পছন্দগুলোর সঙ্গে কিংবা মতামতের সঙ্গে একমত হতে হবে। তবে প্রকৃতপক্ষে আমাদের তাদেরকে মতামতের মূল্যায়ন করতে হবে, গুরুত্ব দিতে হবে, মানুষ হিসেবে সম্মান করতে হবে। তবেই স্রষ্টা আমাদেরকে সম্মানিত করতে পারেন বলে আশা রাখি। আসুন, সবাই সমান করি আর সম্মানিত হওয়ার জোয়ারে ভাসি।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078