কাস্টমসে কর্মবিরতি

কনটেইনার জটের কবলে চট্টগ্রাম বন্দর

প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৫, ১৬:৫০ , অনলাইন ভার্সন
একের পর এক সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের কর্মসূচির কারণে ব্যাহত হচ্ছে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রক চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রম। জাহাজ থেকে কনটেইনার খালাস হচ্ছে। কিন্তু বিপরীতে বন্দর থেকে খালাস নিতে পারছেন না আমদানিকারকরা।
কারণ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির প্রতিবাদে কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোনো কাজ করছেন না। এতে শুল্কায়ন ও পরীক্ষাসহ কাস্টমসের বিভিন্ন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে বন্দরের কনটেইনার রাখার জায়গা একেবারেই ফুরিয়ে যাবে এবং বন্ধ করতে হবে জাহাজ থেকে কনটেইনার খালাস।

বন্দর কর্মকর্তারা জানান, বন্দর ইয়ার্ডে মোট ৫৩ হাজার টিইইউস (২০ ফুট দৈর্ঘ্যের একক) কনটেইনার রাখার সক্ষমতা রয়েছে। তবে অপারেশনাল কার্যক্রমে সুষ্ঠুভাবে করার জন্য কিছু জায়গা খালি রাখতে হয়। মোট ৪৫ হাজার টিইইউসের বেশি বন্দরে কনটেইনার রাখার সুযোগ নেই। বন্দরে বর্তমানে প্রায় ৪১ হাজার টিইইউস কনটেইনারের স্তূপ জমেছে। আবার দৈনিক গড়ে জাহাজ থেকে প্রায় এক হাজার টিইইউস কনটেইনার খালাস হচ্ছে। কিন্তু এ পরিমাণ কনটেইনার এখন বন্দর থেকে খালাস করছেন না আমদানিকারকরা। ফলশ্রুতিতে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি চলতে থাকলে কয়েকদিনের মধ্যেই বন্দরে জাহাজ থেকে কনটেইনার খালাস বন্ধ করে দিতে হবে।

বন্দরে স্বাভাবিক সময়ে ৩০ থেকে ৩৩ হাজার কনটেইনার থাকে। গত ৩ মাসে কনটেইনারবাহী গাড়িচালক-শ্রমিকেরা কয়েক দফা কর্মসূচি পালন করেছেন। সর্বশেষ ১৫ মে কর্মসূচি পালন করেছেন। তাদের কর্মসূচির কারণে বন্দর থেকে যথাসময়ে কনটেইনার বের করতে পারেননি আমদানিকারকরা। এতে করে বন্দর ইয়ার্ডে কনটেইনার সংখ্যা ৩৬ হাজার টিইইউস ছাড়িয়ে যায়। আবার গত ১৪ মে থেকে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কর্মসূচির কারণে এটির সংখ্যা ৪১ হাজার ছাড়িয়ে যায়।
 
সংশ্লিষ্টরা জানান, বন্দর দিয়ে যত কনটেইনার আমদানি হয় তার ৩০ শতাংশই পোশাক শিল্পের কাঁচামাল। এক্ষেত্রে কনটেইনার খালাসে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এই খাত। পাশাপাশি বন্দরে জমে থাকার কারণে স্টোর রেন্ট, ডেমারেজ এবং ডিটেনশন চার্জ বাবদ সংশ্লিষ্টদের বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে।

বিজিএমইএর সাবেক সহ-সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব বলেন, শ্রমিকদের কর্মসূচি না থাকলেও এনবিআরের কর্মবিরতির প্রভাব পড়ছে। ট্রাম্পের শুল্ক স্থগিতাদেশের মধ্যে রপ্তানি করতে হলে এখনই কাঁচামাল হাতে পাওয়া জরুরি। কিন্তু পণ্য হাতে পেতে দেরি হওয়ায় তা অনিশ্চয়তায় পড়েছে।

সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের ফাল্গুনী ট্রেডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসমাইল খান বলেন, আজকেও (রোববার) কোনো শুল্কায়ন হয়নি। কয়েকদিনে কনটেইনার ভেদে চারগুণ পর্যন্ত মাশুল দিতে হচ্ছে।

বন্দরের এক কর্মকর্তা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে দিয়ে যত আমদানি-রপ্তানি হয় তার ৯৫ শতাংশই শুল্কায়ন হয় চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে। এ স্টেশনের কার্যক্রম একেবারে বন্ধ রয়েছে। ফলে বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকলে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কারণে বড় ধরনের জট তৈরি হয়েছে।

বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, প্রতি ঘণ্টায় কনটেইনার নামছে, সেই হারে খালাস না হওয়ায় জট তৈরি হচ্ছে। শুল্কায়ন বন্ধ থাকায় ডেলিভারির গতি কমে গেছে। কয়েকদিন এমন চললে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমসের কোনো কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

জানা যায়, এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি বিভাগ করে ১২ মে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এর পর থেকে এর প্রতিবাদ করে আসছেন রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গত ১৩ মে আগারগাঁও এনবিআরের সামনে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কলম বিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন। সে অনুসারে ১৪, ১৫, ১৭, ১৮ ও ১৯ মে কলম বিরতি কর্মসূচি পালিত হয়। আলোচনার আশ্বাসে ২০ মে আন্দোলন স্থগিত রেখে ২১ মে থেকে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা আসে।

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041