ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের তেলেসমাতি

প্রকাশ : ২২ মে ২০২৫, ১১:৩৬ , অনলাইন ভার্সন
তিনটিই তেলসমৃদ্ধ ধনী দেশ। সৌদি আরব, কাতার ও আরব আমিরাত। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম তিনি মধ্যপ্রাচ্যের এই তিনটি দেশ সফরে যান। প্রথমেই তিনি সৌদি আরব যান গত ১৩ মে। পর্যায়ক্রমে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কাতার এবং আরব আমিরাত সফরেও যান। এ সফরে তার লক্ষ্য কোনো সংঘাত বা যুদ্ধ থামানোর জন্য নয়। তার এ সফরের প্রধান লক্ষ্য তিন দেশের সঙ্গেই বাণিজ্যিক চুক্তি করা। সে লক্ষ্য তার প্রত্যাশার চেয়েও অধিক অর্জিত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে এখন পশ্চিম নয়, বাণিজ্য লেনদেনে মধ্যপ্রাচ্যই অধিক আকর্ষণীয়।

মধ্যপ্রাচ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই সফরকে ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন বলে হোয়াইট হাউস মনে করছে এবং সফরের জন্য ট্রাম্পও উদ্্গ্রীব ছিলেন। আধুনিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের বিদেশ সফরের গন্তব্য মেক্সিকো, কানাডা ও যুক্তরাজ্য। অন্য অনেক কিছুর মতো, সে প্রথা ভাঙলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই প্রথাভাঙার পেছনের কারণ তিনি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর যে ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব, তাকে স্বীকার করে নেওয়া। এর বাইরে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত স্বার্থও রয়েছে এর পেছনে। মধ্যপ্রাচ্যে অন্য ধনকুবেরদের ব্যবসার সঙ্গে ট্রাম্পের নিজের ব্যবসার স্বার্থও রয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলেও মূলত তিনি একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসা তার রক্তে। তিনি ভালো বুঝতে পারেন কোথায় ব্যবসা হবে। এ ক্ষেত্রে স্থান ও সময় নির্বাচনের ক্ষমতাও একজন রাজনৈতিক নেতার চেয়ে তিনি ভালো বোঝেন। তাই তার এ সফরের মূল লক্ষ্য মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি করা। এই পরিকল্পনা নিয়েই ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান তিনটি দেশ সফরে বের হন। রিয়াদ, দোহা ও আবুধাবি তিন শহরেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সেভাবেই সংবর্ধনা দেওয়ারও আয়োজন করা হয়।

সৌদি আরব সফরের ফলাফলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প খুব সন্তুষ্ট। তিনি মোহাম্মদ বিন সালমান সম্পর্কে ভীষণ প্রশংসা করে বলেছেন, ‘সৌদি যুবরাজ চমৎকার একজন মানুষ’। সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রে ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে বলে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রত্যাশা, যুবরাজ সালমান ১ অঙ্ক বাড়িয়ে তা ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত করবেন। এই বিনিয়োগের গরিষ্ঠ অংশ ব্যয় করা হবে সামরিক সরঞ্জাম কেনায় এবং সৌদি আরব ভবিষ্যতে আরও সামরিক সরঞ্জাম কিনবে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

এবার সৌদি সরকার যুক্তরাষ্ট্র থেকে অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ও আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ক্রয়ের আশাও করছে, যার মূল্য বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত এফ-৩ যুদ্ধবিমান কেবল ইসরায়েলকে সরবরাহ করেছে। এসব সরঞ্জামের সরবরাহ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকার সময়কালের মধ্যে পেয়ে যাবে-সৌদি আরবের প্রত্যাশা তেমনটাই। যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান অর্থনীতির নিম্নমুখী অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যের এসব বিনিয়োগ যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে হয়তো কিছুটা স্বস্তি আনবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই সাফল্য তার রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেকটাই সহায়ক হবে বলে মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকেরা।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে আরও শক্তিশালী, আরও অপ্রতিরোধ্য, আরও সমৃদ্ধশালী করে গড়ে তুলতে চান। প্রথম টার্মে তিনি সেটা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র সকল দেশের সেরা দশে এখনই আছে। যুক্তরাষ্ট্র শুধু সেরা দশে নয়, তাকে এক নম্বর সেরা দেশ, শাসক এবং সেরা অভিভাবক হতে হবে। সে জন্য তাকে বিশ্বব্যাপী মিত্র বাড়াতে হবে। এবার সেটা শুরুতেই দেখা যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তা করতে পারবেন কি না-সেটা দেখার বিষয়। শেষ ভালো যার, সব ভালো তার।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078