পারিবারিক সহিংসতা জীবনে বড় ক্ষতি বয়ে আনতে পারে

প্রকাশ : ১৫ মে ২০২৫, ১৩:৫২ , অনলাইন ভার্সন
প্রতিটি সংসারে কারও না কারও সঙ্গে মতের অমিল থাকতে পারে। কেউ কারও মনের মতো না চলা ও কাজ না করা বা কথা না শোনা অথবা বিভিন্ন কারণে মতের অমিল থেকে বিরোধও হতে পারে। যদি এ ধরনের বিরোধ তৈরি হয়, তাহলে তা মেটানো সম্ভব না হলে একপর্যায়ে পারিবারিক সহিংসতায় রূপ নেয়। আর পারিবারিক সহিংসতার কারণে কারও কারও জীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। কেউ কেউ বিষাক্ত জীবন থেকে নিস্তার পেতে চান। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধের জের হিসেবে কেউ কেউ পরকীয়ায় আসক্ত হন। কেউবা সংসার ভেঙে দেন। কেউ আলাদা থাকেন। অনেকে আবার একই বাড়ির ছাদের নিচে থেকেও সেপারেশনে থাকেন। ঘটনা যা-ই হোক, নানা কারণেই এক সদস্যের সঙ্গে আরেক সদস্যের পারিবারিক বিরোধ হতে পারে। আর একবার সহিংসতার ঘটনা ঘটলে পরে তা দিনে দিনে বাড়তে থাকে। এসব যারা সহ্য করতে পারেন না, তারা নিরুপায় হয়ে বিরোধ সৃষ্টিকারী ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পুলিশে কল করেন। পুলিশ এসে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাকে ধরে নিয়ে যায়। কিন্তু পরিবারের সদস্যকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়ার পর যিনি পুলিশে কল করেছিলেন, তখন তিনি বুঝতে পারেন তার ভুল হয়েছে। কিন্তু ততক্ষণে ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে পারিবারিক সহিংসতা অনেক বড় অপরাধ। তাই এসব ছোটখাটো ঘটনা যাতে বিরোধের দিকে না যায় বা ভয়াবহতায় রূপ না নেয়, সে জন্য বিশেষজ্ঞরা পরিবারের সব সদস্যকেই সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
সূত্র জানায়, পারিবারিক সহিংসতার কারণে পরিবারের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। পরে অভিযুক্ত ব্যক্তি জামিনে বেরিয়ে আসেন। সমস্যা হলো ওই ব্যক্তির জীবনে অন্ধকার নেমে আসতে পারে। কোনো স্বামী কিংবা স্ত্রী যদি একে অপরের সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত থাকেন, তখন তার পরিবারের শান্তি নষ্ট হয়।
এ বিষয়ে একজন অ্যাটর্নি বলেন, নানা কারণেই স্বামী-স্ত্রী বা পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতি হলে দুই পক্ষেরই সমঝোতা করে নেওয়া উচিত। তা না করে পুলিশে ধরিয়ে দিলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হবে। মামলায় ওই ব্যক্তি অপরাধ স্বীকার করলে তার জেল হবে। এতে ওই পরিবারের ওপর অনেক ধরনের প্রভাব পড়তে পারে। যদি গ্রেপ্তারকৃত স্বামীর গ্রিনকার্ড না হয়ে থাকে, তাহলে তার গ্রিনকার্ড পেতে সমস্যা হবে। কেউ গ্রিনকার্ডধারী হলে সিটিজেনশিপ আবেদন করলে সেখানেও সমস্যা হতে পারে। তিনি বৈধ স্ট্যাটাস পাওয়ার জন্য আবেদন করে থাকলে পারিবারিক সহিংসতার কারণে তার স্ট্যাটাস পাওয়ার পথও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ যারা ইমিগ্রেশন-সংক্রান্ত আবেদন করেছেন, তাদের উচিত এ ধরনের বিরোধ থেকে দূরে থাকা।
ডা. আল আমীন রাসেল বলেন, দিন যত যাচ্ছে নিউইয়র্ক সিটিতে অনেক পরিবারের মধ্যে সমস্যা বাড়ছে। পারিবারিক সমস্যার কারণে অনেক মানুষ মানসিক অশান্তিতে আছেন। এখান থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য কেউ কেউ আলাদা থাকেন, কেউবা বিচ্ছেদ ঘটান। আবার কেউ সংসার রেখেই পরকীয়া করছেন। পরকীয়া করছেন এমন পরিবারের বাচ্চারা অনেক কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে সময় পার করছে। কারণ বাবা-মায়ের বিবাদ তাদের সন্তানদের ওপর প্রভাব ফেলছে। এ অবস্থায় সন্তানেরাও পরিবারের কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়ার উপায় খুঁজতে থাকে। যারা একটু বড়, তারা পরিবার ছেড়ে যেতে পারলেও ছোট সন্তানগুলো তা পারে না। আমরা এমন অনেক কেস দেখেছি। তিনি বলেন, পারিবারিক সহিংসতার আশ্রয় নিয়ে নিজের ও পুরো পরিবারের সবার জীবন বিষিয়ে তুলবেন না। বরং সমস্যা থাকলে আমরা যারা কমিউনিটির মধ্যে এসব সমস্যার সমাধানে কাজ করছি, আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন অথবা নিজেরাই কাউন্সিলরের কাছে যেতে পারেন। সেখানে গেলে সমাধানের উপায় বের করতে পারবেন।
আরেকজন অ্যাটর্নি বলেন, অনেক স্বামী তার স্ত্রীকে অথবা অনেক স্ত্রী তার স্বামীকে বিপদে ফেলতে এবং তিনি যাতে গ্রিনকার্ড বা সিটিজেনশিপ না পান, সেই শিক্ষা দিতে পুলিশে অভিযোগ দেন। অভিযোগ দেওয়ার পর মামলা-মোকদ্দমা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তি হয়। ফলে পরিবারটির সমস্যা আরও বাড়ে। একপর্যায়ে ওই স্বামী বা স্ত্রী আর স্ট্যাটাস পান না। এ কারণেই বলব, পারিবারিক বিরোধে কেউ কাউকে শিক্ষা দিতে গিয়ে নিজের ক্ষতি ডেকে আনবেন না। আর এখন যে অবস্থা চলছে, তাতে কেউ অভিযোগ করলে তার বিরুদ্ধে মামলা ও শাস্তি হলে তিনি স্ট্যাটাস পাওয়া তো দূরের কথা, ডিপোর্টও হতে পারেন।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078