সীমান্তে ভারতের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ‘পুশ ইন’  সুপরিকল্পিত ও ন্যক্কারজনক : বিজিবি ডিজি

প্রকাশ : ১৩ মে ২০২৫, ১০:০০ , অনলাইন ভার্সন
ভারত তাদের দেশের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়াকে (পুশ ইন) মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল বলে দাবি করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।
১২ মে (সোমবার) সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে বিজিবি মহাপরিচালক এ কথা বলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্তে ভারতের পুশ-ইনের ঘটনা সুপরিকল্পিত ও ন্যক্কারজনক বলেও মন্তব্য করেন বিজিবি ডিজি।

আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ‘গত ৭ ও ৮ মে দুই দিনে আমরা ২০২ জনকে পেয়েছি। তাদের বিএসএফ বিভিন্নভাবে জনবসতি নেই—এমন সব জায়গায় পুশ-ইন করেছে। আপনারা জানেন, সীমান্তের প্রতিটি জায়গা শারীরিকভাবে দখলে রাখা যায় না। যেসব জায়গায় কেউ ছিল না, সেখানেই পুশ-ইন করেছে।’

তাদের নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানতে চাইলে ডিজি বলেন, ‘আমরা পুলিশ ভেরিফিকেশনে যাদের বাংলাদেশি পেয়েছি, তারা গত ২ থেকে ৩ বছর মধ্যে এমনকি অনেকে ২০ থেকে ২৫ বছর আগে নানান কাজে ভারতে গিয়েছিল। তাদের মধ্যে অনেকেরই সন্তান আছে। তাদের মধ্যে অনেকেই ভারতের আধারকার্ডসহ অন্যান্য ডকুমেন্টস ছিল। ভারতের পুলিশ বা বিএসএফ সেগুলো রেখে দিয়ে তাদের বাংলাদেশে পুশ-ইন করেছে।’
পুশ-ইনের পর বাংলাদেশি নাগরিকদের নিজ নিজ এলাকায় ফেরত পাঠানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে বলেও জানান বিজিবির মহাপরিচালক।

আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ‘সীমান্তে আটকদের মধ্যে ৩৯ জন রোহিঙ্গা পাওয়া গেছে। তারা আমাদের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। তাদের আমরা ক্যাম্পে ফেরত পাঠিয়েছি। এরমধ্যে একটি উদ্বেগজনক বিষয় হলো কিছু রোহিঙ্গা পাওয়া গেছে—যারা ভারতের ইউএনএইচসিআর (জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক কমিশন) এর তালিকাভুক্ত শরণার্থী। তাদের আইডি কার্ডও আমাদের কাছে আছে।’

এ সময় তিনি সাংবাদিকদের সামনে ইউএনএইচসিআর-এর পরিচয়পত্রগুলো তুলে ধরেন।
আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সকলকে জানাতে চাই, এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। যে দেশের শরণার্থী সেখানেই তাদের রাখার দরকার ছিল। আমরা এমন পাঁচজন শরণার্থী পেয়েছি।’

বিএসএফ বরাবরের মতো এ অভিযোগ অস্বীকার করছে জানিয়ে ডিজি বলেন, ‘তারা (বিএসএফ) বলছেন, এ বিষয়ে তারা জানেন না। হয়তো তারা নিজেই চলে গিয়েছিল ভারতে, হয়তো তারা নিজেরাই ফেরত আসছে–এ ধরনের কথা বলছে। এটা আমরা মানছি না। আমরা পতাকা বৈঠক করে প্রতিবাদলিপি দিয়েছি। একই সঙ্গে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা বলেছি৷ তারা যদি বাংলাদেশি হয়—তাহলে আমরা তাদের গ্রহণ করব। তবে সেটি এমন লুকোচুরির মাধ্যমে না হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবেই করা হবে।’

আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী আরও বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি খাগড়াছড়ির দিকে আরও ২০০ থেকে ৩০০ জনের মতো শরণার্থী ওপারে আছে। যাদেরকে বিএসএফ পুশ-ইন করার চেষ্টা করেছিল। আমাদের টহল বাড়ানোয় ও সীমান্তে সজাগ দৃষ্টি থাকায় গত দুই দিন ধরে তারা চেষ্টা করেও পারছে না। স্থলপথ দিয়ে পুশ-ইন দিতে না পেরে বিএসএফ সুন্দরবনের দুর্গম মান্দারবাড়িয়া চরে ভারতীয় একটি জাহাজে করে ৭৮ জনকে ফেলে গেছে।’
বাংলাদেশ কোস্টগার্ড তাদের উদ্ধার করেছে। তাদের নিজ নিজ এলাকায় পাঠানোর প্রক্রিয়ায় আছে। আমরা সজাগ দৃষ্টি রাখছি, একই সঙ্গে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

বিজিবির ডিজি আরও বলেন, ‘মূলত খাগড়াছড়ির বানছগি, জামিনিপাড়া, খেদাছড়া সীমান্ত ও কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারির চর অঞ্চল ও সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া দিয়ে পুশ-ইনের ঘটনা ঘটেছে। বিএসএফ যেসব এলাকায় জনবসতি নাই বা টহল যেতে সময় লাগে সেসব এলাকা টার্গেট করে পুশ-ইনের চেষ্টা করছে।’

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078