সিএনএনকে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স

ভীতিকর তথ্য পেয়ে মোদিকে যুদ্ধ বন্ধে চাপ দেয় যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশ : ১১ মে ২০২৫, ০৯:৫২ , অনলাইন ভার্সন
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ আলোচনার পর ভারত ও পাকিস্তানের মাঝে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়েছে। দীর্ঘ ৪৮ ঘণ্টা ধরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের প্রচেষ্টায় এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
 
তবে পরমাণু অস্ত্রধারী এই দুই দেশের যুদ্ধবিরতির নিয়ে সামনে এসেছে নতুন তথ্য। মূলত ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ভীতিকর তথা উদ্বেগজনক গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পর ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরুর আহ্বান জানান—এমনটাই জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

সিএনএন জানায়, মার্কিন প্রশাসনের একটি কেন্দ্রীয় দল — ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিও এবং হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ সুজি ওয়াইলস — ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘাত ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের মধ্যেই শুক্রবার সকালে যুক্তরাষ্ট্র এমন কিছু গোয়েন্দা তথ্য পায় যা পরিস্থিতিকে বিপজ্জনক বলে ইঙ্গিত দেয়।

প্রভাবশালী এই মার্কিন সংবাদমাধ্যম বলছে, ওই তথ্যের ভিত্তিতে ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পুরো পরিকল্পনার ব্যাপারে অবহিত করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুরে তিনি (জেডি ভ্যান্স) সরাসরি নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেন।
 
মার্কিন এই ভাইস প্রেমিডেন্ট ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্পষ্ট করে বলেন, হোয়াইট হাউসের মতে, এই সংঘাত আরও মারাত্মক রূপ নিতে পারে এবং সপ্তাহান্তে বড় ধরনের সংঘর্ষ হতে পারে। ভ্যান্স এসময় মোদিকে উৎসাহ দেন যেন ভারত সরাসরি পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং উত্তেজনা কমানোর বিভিন্ন পথ বিবেচনা করে।

ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা ছিল, দুই দেশের মধ্যে কোনও ধরনের কূটনৈতিক আলোচনা চলছে না। তাই তাদের মূল লক্ষ্য ছিল দুই পক্ষকে আবারও আলোচনায় ফিরিয়ে আনা। সূত্র জানায়, ভ্যান্স এসময় মোদিকে এমন একটি শান্তিপূর্ণ বিকল্প পথের কথাও জানান, যেটি পাকিস্তান গ্রহণ করতে পারে বলে আমেরিকার ধারণা ছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই তথ্যের প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো না হলেও, তা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে, এই তিন শীর্ষ কর্মকর্তাকে বিষয়টিতে যুক্তরাষ্ট্রকে আরও সক্রিয় হবার প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে সাহায্য করে।
 সিএনএন বলছে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে আলাপের পরেই মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা— যার মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওও ছিলেন— ভারত ও পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে রাতভর যোগাযোগ চালিয়ে যান।

যদিও মার্কিন প্রশাসন যুদ্ধবিরতির খসড়া তৈরি বা আলোচনায় সরাসরি যুক্ত হয়নি, তবে তারা বিষয়টিকে আলোচনার সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার অংশ হিসেবে দেখেছে। প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেন, মোদির সঙ্গে ভ্যান্সের ফোনালাপ ছিল যুদ্ধবিরতির এই প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়।

সিএনএন বলছে, ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর ফোনালাপ সম্পর্কে জানেন এমন একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা দ্রুত বাড়ছিল, তখন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিষয়টি শান্ত করার জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালানো হচ্ছিল।

ওই কর্মকর্তা বলেন, তখন স্পষ্ট ছিল যে, দুই দেশের মধ্যে কোনও সরাসরি কথা বলা হচ্ছিল না। তাই আমাদের লক্ষ্য ছিল—আমাদের ভারত ও পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তাদের কথা বলায় উৎসাহ দেওয়া এবং যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে উত্তেজনা কমানোর পথ খুঁজে বের করা।
 
তিনি আরও জানান, এই আলোচনার ধারাবাহিকতায় মার্কিন কর্মকর্তারা বুঝতে পারেন, উভয় পক্ষের জন্য উত্তেজনা কমানোর ‘সম্ভাব্য পথ’ কী হতে পারে। এরপর তারা সেই বার্তা দুই পক্ষের মধ্যে পৌঁছে দিতে সাহায্য করেন এবং কিছুটা হলেও যোগাযোগের ঘাটতি দূর করতে সহায়ক হন। এর ফলে ভারত ও পাকিস্তান সরাসরি আলোচনায় বসার সুযোগ পায়, যার ফলাফল এখন দেখা যাচ্ছে।

মার্কিন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধবিরতির কোনও চুক্তি খসড়ায় যুক্ত ছিল না। তাদের ভূমিকা ছিল কেবল দুই পক্ষকে আলোচনায় ফিরিয়ে আনা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের প্রধানমন্ত্রী মোদিকে করা ফোনটি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। প্রশাসনের আরও এক সূত্র জানায়, ভ্যান্স গত মাসে ভারত সফরে গিয়ে মোদির সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করেছিলেন। ট্রাম্প প্রশাসনের বিশ্বাস ছিল, ভ্যান্স ও মোদির ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে ফোনালাপটি আরও কার্যকর হবে।

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078