যেভাবে সম্ভব হলো ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি

প্রকাশ : ১১ মে ২০২৫, ০০:২৭ , অনলাইন ভার্সন
চার দিনের পাল্টাপাল্টি হামলার পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে উপমহাদেশের দুই পরাশক্তি ভারত ও পাকিস্তান। ভারতের দাবি, পাকিস্তানই প্রথম যুদ্ধবিরতি চেয়েছে এবং তাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করে এই সিদ্ধান্তে এসেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রও পাকিস্তানকে চাপ দিয়েছে, যা এই যুদ্ধবিরতিতে সাহায্য করেছে। শনিবার (১০ মে) এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি।

বিক্রম মিশ্রি জানান, যুদ্ধবিরতির ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করেন পাকিস্তানের একজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা। এরপর বেলা ৩টা ৩৫ মিনিটে উভয় দেশের সামরিক অভিযান পরিচালনাকারী (ডিজিএমও) শীর্ষ কর্মকর্তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলেন। ভারতীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।

এগুলো ভারতের দাবি, তবে পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির বিষয়ে বলেছে ভিন্ন কথা।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতির প্রথম ইঙ্গিত দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি সামাজিকমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করে দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ভারত-পাকিস্তান।

এর পরই পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার নিশ্চিত করেন, পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। একটি পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, এই কূটনীতিতে ‘তিন ডজনের বেশি দেশ’ জড়িত ছিল। এর মধ্যে ছিল তুরস্ক, সৌদি আরব ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।

ইসহাক দারের ঘোষণার পর পাকিস্তান সব বিমানের জন্য তাদের আকাশপথ খুলে দেয়।

এদিকে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও টিভিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশই পরস্পরের মধ্যে ‘সরাসরি যোগাযোগ’ করেছে এবং ‘ফলস্বরূপ যুদ্ধবিরতির যৌথ চুক্তিতে পৌঁছেছে’।

ইসহাক দার আরও বলেন, অন্যান্য দেশও এই যুদ্ধের সমাধানে জড়িত ছিল, ‘বিশেষ করে যুক্তরাজ্য’। তিনি বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ায় যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।’

পাকিস্তান ও ভারত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে এই খবর প্রকাশের পর যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রসচিব ডেভিড ল্যামি সোশ্যাল মিডিয়ার একটি পোস্টে বলেছেন, যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ায় ‘উভয় দেশকে স্বাগত’। তিনি আরও বলেন, ‘আমি উভয় পক্ষকে এটি বজায় রাখার অনুরোধ করছি। সবার স্বার্থে উত্তেজনা কমানো জরুরি।’

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসহাক দারের ঘোষণার পরই ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি নিশ্চিত করেন, ‘স্থল, আকাশ ও সমুদ্রে চলমান সব সামরিক অভিযান বন্ধ করতে’ সম্মত হয়েছে তাদের দেশ। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধবিরতি ভারতীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে কার্যকর হয়েছে।

প্রসঙ্গত, কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে দীর্ঘদিনের অস্থিরতা গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। ওই হামলায় ২৫ পর্যটক ও একজন স্থানীয় গাইড নিহত হন। একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করলেও পরে তারা অস্বীকার করে। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে; ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করে।

এর পর থেকে দেশ দুটি একের পর এক পদক্ষেপ নিতে শুরু করে। প্রথমে এটি কূটনৈতিক পর্যায়ে থাকলেও দ্রুত সামরিক সংঘাতের দিকে মোড় নেয়।

গত ৬ মে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর জবাবে ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসৌস’ ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। ফলে ক্রমেই সর্বাত্মক যুদ্ধের দিকে ধাবিত হচ্ছে দুই পরমাণু শক্তিধর দেশ।

শনিবার (১০ মে) ভোরে পাকিস্তান দাবি করেছে, তাদের তিনটি বিমানঘাঁটিতে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর তারা ভারতের একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে পাল্টা আঘাত হেনেছে। এ ঘটনা দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘদিনের চাপা উত্তেজনাকে আরও তীব্র করে তুলেছে।

ঠিকানা/এনআই
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078