রবীন্দ্রমননে বুদ্ধ ও বৌদ্ধধর্ম

প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৫, ১২:০৯ , অনলাইন ভার্সন
ভারতবর্ষের ইতিহাসে মহাকারুণীক তথাগত সম্যক সম্বুদ্ধ এক বিস্ময়কর মহাপুরুষ। আজ থেকে ২৫৬৯ বছর আগে বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে হিমালয়ের পাদদেশে শাক্যরাজ্যের কপিলাবাস্তুতে সিদ্ধার্থ গৌতম জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর পিতা ইক্ষ্বাকু বংশীয় রাজা শুদ্ধোধন, মাতা মহামায়া দেবী। ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’র এই দিনটি বিশ্বের সকল বৌদ্ধের কাছে অতি পবিত্র এবং খুবই তাৎপর্যময় একটি দিন। বৈশাখী পূর্ণিমার পুণ্য তিথিতে সিদ্ধার্থ গৌতমের শুভ আবির্ভাব, বুদ্ধত্ব বা বোধিজ্ঞানপ্রাপ্ত হওয়া এবং মহাপরিনির্বাণ এই ত্রিস্মৃতিবিজড়িত দিনকে স্মরণ করে সমগ্র বিশ্বের সকল বৌদ্ধ-ধর্মাবলম্বীরা গভীর ভক্তি-শ্রদ্ধা এবং ভাবগম্ভীর পরিবেশে এবং নানা বর্ণে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’র পবিত্র দিনটি উদযাপন করে থাকে।

রবীন্দ্রমানসে বুদ্ধের জীবন ও বাণী কবির অন্তরকে গভীরভাবে স্পর্শ ও প্রভাবিত করেছিল। তিনি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করতেন, বুদ্ধ পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানব। এই গভীর আত্মনিবেদনের মধ্য দিয়েই গৌতম বুদ্ধের প্রতি রবীন্দ্রনাথের অপরিসীম শ্রদ্ধা ও ভক্তির পরিচয় সুস্পষ্ট রূপে প্রকাশিত হয়েছে। বৌদ্ধ দর্শনের মানবতাবাদী ভাবধারা রবীন্দ্র মানস-চেতনাকে এতখানি প্রভাবিত করেছিল যে তা তাঁর সাহিত্যকে নতুন ঐশ্বর্য ও অপূর্ব সুন্দর কান্তি দান করে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অতুলনীয় নজির সৃষ্টি করেছে।
রবীন্দ্রনাথ পালি ভাষায় রচিত পবিত্র ত্রিপিটকে বর্ণিত বহু সূত্র এবং বুদ্ধ বচনের বাংলা অনুবাদ করেছেন। বৌদ্ধধর্মের মূলনীতি পঞ্চশীলÑযথা প্রাণী হত্যা, মিথ্যা বাক্য, চৌর্যবৃত্তি, ব্যভিচার এবং মাদকদ্রব্য সেবন থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকা। এই শীলগুলোই হচ্ছে মানুষের কল্যাণ, মঙ্গল এবং মুক্তিলাভের সোপান। ‘ধর্মের অধিকার’ প্রবন্ধেও বুদ্ধ সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথকে গভীর শ্রদ্ধা ব্যক্ত করতে দেখা যায়, ‘বুদ্ধ যখন সত্যকে পাইয়াছি বলিয়া উপলব্ধি করিলেন, তখন তিনি বুঝিলেন আমার ভিতর দিয়া সমস্ত মানুষ এই সত্য পাইবার অধিকারী হইয়াছে।’ এই সত্য সুন্দরের মধ্যে নিহিত আছে মানুষের তথা সর্বজীবের মঙ্গল। ত্রিপিটকে বর্ণিত মহা মঙ্গল সূত্রে মানুষের কল্যাণে আটত্রিশ প্রকার মঙ্গলের কথা ব্যক্ত করতে গিয়ে প্রথমেই বুদ্ধ বলেছেন, ‘জ্ঞানী ব্যক্তির সেবা করবে, অজ্ঞানীর সেবা করবে না। মাতা-পিতার ভরণ-পোষণ করবে। সতত জ্ঞানের চর্চা করবে।’ অপরদিকে করণীয় মেত্তর সূত্রে সমস্ত প্রাণীর প্রতি মৈত্রী, মমতা, করুণা এবং ভালোবাসার উপমা ব্যক্ত করেছেন এইভাবে, ‘মা যেমন একটিমাত্র পুত্রকে নিজের আয়ু দিয়ে রক্ষা করেন, সমস্ত প্রাণীকে সেই প্রকার অপরিমিত মানসে রক্ষা করবে।’ বুদ্ধের অমিয় সুধামিশ্রিত উদ্ধৃতিকে রবীন্দ্রনাথ অপূর্ব শব্দ মাধুর্যে বাংলায় অনুবাদ করেছেন। এতেই বোঝা যায়, রবীন্দ্র মানস-চেতনায় তথাগত বুদ্ধ কতখানি শ্রদ্ধার আসন জুড়ে রয়েছেন। পক্ষান্তরে বৌদ্ধধর্মে মানব সম্পর্ক ও হৃদয়বৃত্তিকেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। মানুষের মধ্যে যে শ্রেয়বোধ কল্যাণশক্তির মহিমা নিহিত আছে, তাকে উদ্বুদ্ধ করাই বৌদ্ধধর্মের প্রধান লক্ষ্য। আর রবীন্দ্রনাথ সেটাই উপলব্ধি করেছেন।
‘বুদ্ধদেব’ গ্রন্থে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘ভারতবর্ষে বুদ্ধদেব মানবকে বড়ো করিয়াছিলেন। তিনি জাতি মানেন নাই, যাগ-যজ্ঞের অবলম্বন থেকে মানুষকে মুক্তি দিয়াছিলেন, দেবতাকে মানুষের লক্ষ্য হইতে অপসৃত করিয়াছিলেন। তিনি মানুষের আত্মশক্তি প্রচার করিয়াছিলেন। দয়া এবং কল্যাণ তিনি স্বর্গ হইতে প্রার্থনা করেন নাই, মানুষের অন্তর হইতে তাহা আহ্বান করিয়াছিলেন। এমনি করিয়া শ্রদ্ধার দ্বারা, ভক্তির দ্বারা, মানুষের অন্তরের জ্ঞানশক্তি ও উদ্যমকে তিনি মহীয়ান করিয়া তুলিলেন। মানুষ যে দীন-দৈবাধীন হীন পদার্থ নহে তাহা তিনি ঘোষণা করিলেন।’

রবীন্দ্রনাথের ধর্মাদর্শের সঙ্গে বৌদ্ধধর্মের যেখানে পার্থক্য, সেটি হলো নির্বাণ তত্ত্ব। বুদ্ধের দর্শন বলে এই সংসার থেকে মুক্তিলাভ করতে গেলে নির্বাণ বা পরম নিবৃত্তি লাভ একান্তই দরকার। মানুষের সকল দুঃখের মূলে আছে অবিদ্যা, তৃষ্ণা ও মায়ার বন্ধন। তৃষ্ণার ফলেই মানুষ জন্ম-জন্মান্তরের আবর্তে ঘুরে বেড়ায়, পুনঃপুন জন্মগ্রহণ করে। সেটা আরও দুঃখজনক। জরা, ব্যাধি, মৃত্যু, প্রিয়জন বিয়োগ ও অপ্রিয় সংযোগ প্রভৃতি দুঃখে পরিপূর্ণ এই জগৎ। এখানে কোথায় আনন্দ বা সুখ? সেই জন্য মহাকারুণীক বুদ্ধ সমস্ত তৃষ্ণার মূলে কুঠারাঘাত করেই নির্বাণ লাভের কথা বলেছেন।
পক্ষান্তরে তথাগত বুদ্ধ যে মুক্তির কথা বলেছেন, সংসার বন্ধন থেকে মুক্তি লাভ করাকে রবীন্দ্রনাথ মুক্তি বলে মনে করেন না। রবীন্দ্রনাথের কণ্ঠে বিপরীত সুর ধ্বনিত হয়েছে।
‘বৈরাগ্য সাধনে মুক্তি সে আমার নয়
অসংখ্য বন্ধন মাঝে মহানন্দময়
লভিব মুক্তির স্বাদ।’
রবীন্দ্রনাথ যে বন্ধনের কথা বলেছেন তা হলো আনন্দের বন্ধন, প্রেমের বন্ধন। এই প্রেমেই আছে মুক্তির আস্বাদ, প্রেমেই পূর্ণতা এবং সত্যতা। কবি এ কথাও বলেছেন, ‘প্রকৃতি তাহার রূপ, রস, বর্ণ, গন্ধ লইয়া, মানুষ তাহার বুদ্ধি মন, তাহার স্নেহ প্রেম লইয়া আমাকে মুগ্ধ করিয়াছে।’ কবির কাছে এই ধরাতল স্বর্গের চাইতেও প্রিয়। তিনি তাই বারবার এই জগৎ সংসারের কান্না-হাসির মধ্যে ফিরে আসতে চান। তথাগত বুদ্ধ দুঃখকে যেমনভাবে দেখেছেন, রবীন্দ্রনাথ কিন্তু দুঃখকে সেইভাবে দেখেননি। জগতে দুঃখ আছে, সে কথা কবি অস্বীকার করেন না। রবীন্দ্রনাথের দৃষ্টিতে এই দুঃখ-সুখের বিপরীত হলেও আনন্দের বিপরীত নয়, বরং বলা যায় আনন্দের পরিপূরক। সেই জন্য মানুষ অনেক সময় দুঃখের মহিমাকে বরণ করে নেয়। বুদ্ধ বলেছেন, ‘জগৎ দুঃখময়।’ রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘জগৎ আনন্দময়।’
‘প্রেমের প্রাণে গানে গন্ধে আলোকে পুলকে
প্লাবিত করিয়া নিখিল দ্যুলোকে ভূলোকে-
তোমার আমল অমৃত পরিছে ঝরিয়া।’
১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ যখন দ্বিতীয়বার বুদ্ধগয়ায় যান, তখন তাঁর সঙ্গী হয়েছিলেন কবির কন্যা মীরা ও জামাতা নগেন্দ্রনাথ। এখানে তিন দিন থাকা অবস্থায় তিনি ‘গীতালি’র অন্তর্গত অন্তত ১০টি গান রচনা করেন, এর মধ্যে দুটি হলো :
‘সন্ধ্যাতারা যে ফুল দিল
তোমার চরণতলে
তারে আমি ধুয়ে দিলাম
আমার নয়ন জলে।’
‘এ দিন আজি কোন ঘরে গো খুলে দিল দ্বার?
আজি প্রাতে সূর্য উঠা সফল হলো কার?’
বুদ্ধের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা ও অনুরাগবশত রবীন্দ্রনাথ দুবার বুদ্ধগয়ায় গিয়েছিলেন। বুদ্ধের মন্দির দর্শনে তিনি শান্তি পেয়েছেন। তাঁর অস্তিত্ব অনুভব করেছেন হৃদয়মনে। ‘বুদ্ধদেব’ নামক গ্রন্থে তিনি আক্ষেপ করে বলেছেন, ‘বুদ্ধের চরণস্পর্শে যেদিন বসুন্ধরার মাটি পবিত্র হয়েছিল সেদিন তা শরীর মন দিয়ে প্রত্যক্ষ করার জন্য তিনি কেন জন্মগ্রহণ করেননি।’ বুদ্ধগয়ায় বুদ্ধের মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে তিনি শ্রদ্ধা ও ভক্তিতে আপ্লুত হয়েছিলেন। বুদ্ধগয়া ছাড়াও শ্যাম, ব্রাহ্মদেশ, জাভা, চীন, জাপান ইত্যাদি জায়গা ভ্রমণের সময়ও বুদ্ধের প্রতি অশেষ শ্রদ্ধা ও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তিনি। যবদ্বীপের বোরোবুদুরের পাষাণ স্তূপের সামনে দাঁড়িয়ে উচ্চারণ করেছেন :
‘পাষাণের মৌনতটে যে বাণী রয়েছে চিরস্থির-
কোলাহল ভেদ করি শত শতাব্দীর
আকাশে উঠিছে অবিরাম
অমেয় প্রেমের মন্ত্র-বুদ্ধের স্মরণ লইলাম।’
তথাগত সম্যক সম্বুদ্ধের পুণ্যময় ত্রিস্মৃতিবিজড়িত প্রধান তিথি বৈশাখী পূর্ণিমা বা বুদ্ধ পূর্ণিমা। করুণাঘন তথাগত সম্যক সম্বুদ্ধের পবিত্র জন্মতিথি। রবীন্দ্র মনন-চেতনায় বুদ্ধের প্রতি কবির অপ্রমেয় শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনে হৃদয় থেকে উৎসারিত হয়েছে :
‘ওই মহামানব আসে,
দিকে দিকে রোমাঞ্চ লাগে
মর্তধূলির ঘাসে ঘাসে
সুরলোকে বেজে ওঠে শঙ্খ
নরলোকে বাজে জয়ডঙ্ক-
এল মহাজন্মের লগ্ন।’

অপরদিকে আজকের হিংসা লোভ রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধের বিভীষিকাময় দিনে শান্তিকামী নিখিল মানবের ক্রন্দনধ্বনিই নিম্নোক্ত গানে ধ্বনিত হয়েছে।
‘হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বি, নিত্য নিঠুর দ্বন্দ্ব,
ঘোর কুটিল পন্থ তার, লোভজটিল বন্ধ।
শান্ত হে, মুক্ত হে, হে অনন্তপুণ্য,
করুণাঘন, ধরণীতল করো কলঙ্কশূন্য।’

বুদ্ধ এখানে শুধু করুণাঘন নন, জগতের হিংসা, দ্বন্দ্ব থেকে তিনি মানুষের ত্রাণকারীও। কবি বিশ্বাস করেন, বুদ্ধের দক্ষিণ হস্তের কল্যাণস্পর্শে ধরণির গ্লানি দূরীভূত হবে। পৃথিবী আবার সূচিশুভ্র হবে। স্মরণযোগ্য যে মহাসংকটের দিনে সকল দুর্গতি ভয় বিনাশকারী তথাগত বুদ্ধের শরণ নিয়েছেন তিনি।
ভারতীয় সংস্কৃতির ইতিহাসে বুদ্ধই একমাত্র মনীষী, যাঁর ত্যাগ-তিতিক্ষা-করুণার আলোকে বিশ্ব মানবতার মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। বৌদ্ধদর্শনের মৌলিক বিষয়গুলোর সঙ্গেও রবীন্দ্রনাথের সবিশেষ পরিচয় ছিল, যেমন প্রতীত্যসমুৎপাদ, ব্রাহ্মবিহার, চতুরার্যসত্য, মধ্যমপন্থা, আর্য্যঅষ্টাঙ্গিক মার্গ ইত্যাদি।
প্রকৃতপক্ষে বৌদ্ধধর্ম হচ্ছে একটি দুঃখবাদের ধর্ম, কারণ বৌদ্ধধর্মের মূলগত ভিত্তি হচ্ছে আমাদের এই জগৎ সর্বগ্রাসী দুঃখের অধীন। মহাজ্ঞানী তথাগত বুদ্ধের সাধনার মূল লক্ষ্যই ছিল এই জাগতিক দুঃখ-কষ্ট থেকে মানবজাতিকে মুক্তির পথের সন্ধান দেওয়া।

গভীর তপস্যার বলে তিনি চারটি সত্য উপলব্ধি করেছিলেন। তাঁর উপলব্ধ এই চারটি মহান সত্যকে বলা হয় ‘চারি আর্য্য সত্য’। যে চারটি আর্য্য সত্যের কথা তিনি বলেছিলেন, তা হলো প্রথমত এই জগৎ দুঃখময়। দ্বিতীয়ত এই দুঃখ-কষ্টেরও কারণ আছে। তৃতীয়ত দুঃখ নিরোধ সম্ভব এবং চতুর্থত দুঃখ-কষ্টের অবসানের জন্য সত্য পথের সন্ধান করতে হবে। বুদ্ধের দর্শনে বলা আছে, দুঃখ নিবৃত্তির নামই হলো নির্বাণ, অর্থাৎ সকল প্রকার দুঃখের অবসান হলো নির্বাণের পথ। তাহলে এই জাগতিক দুঃখের বসান, দুঃখের নিবৃত্তি কীভাবে ঘটবে? তিনি বললেন, প্রবৃত্তির বিনাশে, তৃষ্ণার ক্ষয়ের মাধ্যমে সকল প্রকার দুঃখের অবসান সম্ভব। আর এই কাজটি সহজে করার জন্য তিনি মানুষকে মুক্তি মার্গের সন্ধান দিলেন। তিনি আটটি পথের কথা বললেন, সে আটটি পথ বৌদ্ধদর্শনে আর্য্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ নাম অভিহিত হয়ে আছে। বলা বাহুল্য, এ প্রসঙ্গে তিনি বললেন, তাঁর নির্দেশিত আর্য্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ অনুসরণ করতে গিয়ে ভক্তদের বা বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ঈশ্বরের শরণাপন্ন বা আত্মা পরমাত্মার শরণাপন্ন হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ হিন্দুধর্মে বলা হয়, ঈশ্বরের শরণাপন্ন হলেই তিনি আমাদের সবকিছু থেকে উদ্ধার করবেন। খ্রিষ্টধর্মে বলা হয়, প্রভু যিশুর কৃপা হলে মানুষ যন্ত্রণার হাত থেকে মুক্তি পাবে। বৌদ্ধদর্শন কিন্তু এই তত্ত্ব স্বীকার করে না। সোজা কথায় বৌদ্ধধর্ম ঈশ্বর বা আত্মার অস্তিত্ব স্বীকার করে না। বলা যায়, বৌদ্ধধর্ম নৈরাত্মবাদী বা নিরীশ্বরবাদী ধর্ম। কর্মের জগতে জীবনকে এগিয়ে যেতে হলে ঈশ্বর ধারণার কোনো প্রয়োজন নেই। গৌতম বুদ্ধের জীবন ও বাণী রবীন্দ্রনাথকে কতখানি অনুপ্রাণিত করেছিল, সে কথা তাঁর বিভিন্ন রচনায় প্রকাশ পেয়েছে বারবার। মানুষের আত্মশক্তিকেই বৌদ্ধদর্শনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। কর্মে এবং প্রয়াসে যার ওপর সুবিবেকের নিয়ন্ত্রণ থাকে সেই আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়। যুদ্ধে সহস্র মানুষকে জয় না করে যিনি কেবল নিজেকে জয় করেন, তিনিই শ্রেষ্ঠ সংগ্রামজয়ী। আত্মজয়ের এই মহিমা বৌদ্ধদর্শনের মাধ্যমে রবীন্দ্র মনন-চেতনায় উদ্ভাসিত হয়েছে।

বুদ্ধ পূর্ণিমার এই পুণ্যস্নাত দিনে বিশ্বের সকল মানুষের মঙ্গল কামনায় তথাগতের সমীপে এই প্রার্থনা হোক, জন্ম জরা ব্যাধি ও দুঃখ থেকে মানুষ যেন মুক্ত থাকে। জয় হোক বিশ্ব মানবতার। বিশ্বের সকল প্রাণী সুখী হোক।
-নিউইয়র্ক
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078