‘ঐতিহাসিক’ বাণিজ্য চুক্তিতে সম্মত যুক্তরাজ্য-ভারত

প্রকাশ : ০৬ মে ২০২৫, ২৩:৪৩ , অনলাইন ভার্সন
যুক্তরাজ্য ও ভারত এমন একটি বাণিজ্য চুক্তিতে সম্মত হয়েছে, যার ফলে যুক্তরাজ্যের কম্পানিগুলোর জন্য ভারতে হুইস্কি, গাড়ি ও অন্যান্য পণ্য রপ্তানি সহজ হবে এবং ভারতীয় পোশাক ও জুতা রপ্তানির ওপর কর কমবে। তবে ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে, তিন বছর ধরে আলোচনার পর স্বাক্ষরিত এই ‘ঐতিহাসিক’ চুক্তিতে অভিবাসননীতিতে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি, এমনকি যুক্তরাজ্যে অধ্যয়নরত ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও না।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, এই চুক্তি অর্থনীতিকে গতিশীল করবে এবং ‘ব্রিটিশ জনগণ ও ব্যবসার জন্য সুফল বয়ে আনবে’। অন্যদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একে ‘ঐতিহাসিক মাইলফলক’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, এটি ‘উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও পারস্পরিকভাবে লাভজনক’।

তিনি এক্সে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, এই চুক্তি ‘দুই দেশের অর্থনীতিতে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও উদ্ভাবনের গতি বাড়াবে’। গত বছর যুক্তরাজ্য ও ভারতের মধ্যকার মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৪২.৬ বিলিয়ন পাউন্ড এবং পূর্বাভাস অনুযায়ী তা আরো বাড়ছিল। তবে সরকার বলছে, এই চুক্তির ফলে ২০৪০ সালের মধ্যে বছরে অতিরিক্ত ২৫.৫ বিলিয়ন পাউন্ড বাণিজ্য বাড়বে।

এই চুক্তি কার্যকর হতে সর্বোচ্চ এক বছর সময় লাগতে পারে।

একবার চালু হলে, ভারত থেকে যুক্তরাজ্যে যাওয়া পণ্যে শুল্ক কমে যাওয়ার ফলে যুক্তরাজ্যের ভোক্তারা সরাসরি উপকৃত হবেন বলে জানিয়েছে ব্যবসা ও বাণিজ্য বিভাগ। এই করছাড়ের আওতায় পড়বে পোশাক, জুতা হিমায়িত চিংড়িসহ খাদ্যপণ্য, গহনা ও রত্নপাথর।

সরকার জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের কম্পানিগুলোর ভারতে রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করবে এই চুক্তি। যেসব ব্রিটিশ পণ্যের ওপর শুল্ক কমবে সেগুলো হলো জিন ও হুইস্কি, মহাকাশ, বৈদ্যুতিক ও চিকিৎসা যন্ত্রপাতি, প্রসাধন সামগ্রী, ব্রিটিশ খাদ্যপণ্য যেমন মেষের মাংস, স্যামন মাছ, চকলেট ও বিস্কুট।

আগে আলোচনায় অন্যতম বড় প্রতিবন্ধক ছিল জিন ও হুইস্কির শুল্ক। এখন সেগুলোর শুল্ক অর্ধেক হয়ে ৭৫ শতাংশ হবে এবং ভবিষ্যতে আরো কমবে। চুক্তিতে সেবা খাত ও সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত ব্যবস্থাও রয়েছে, যার ফলে ব্রিটিশ কম্পানিগুলো আরো বেশি চুক্তির জন্য প্রতিযোগিতা করতে পারবে।

যুক্তরাজ্যের ব্যবসাবিষয়ক মন্ত্রী জনাথন রেনল্ডস বলেছেন, এই চুক্তির ফলে ব্যবসা ও ভোক্তাদের জন্য সুবিধা ‘বিশাল’ হবে। গত সপ্তাহে তিনি লন্ডনে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে চুক্তির চূড়ান্ত পর্বের আলোচনায় অংশ নেন।

ব্রিটিশ সরকার বলেছে, ২০২০ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের পর যুক্তরাজ্য যেসব দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি করেছে, এর মধ্যে এটিই ‘সবচেয়ে বড় ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ’। চুক্তির আওতায় ভারতীয় ও ব্রিটিশ কিছু কর্মী তিন বছরের জন্য জাতীয় বীমা (ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স) থেকে অব্যাহতি পাবেন। ভারত সরকার একে ‘অভূতপূর্ব সাফল্য’ বলে উল্লেখ করেছে। এই ছাড় ভারতে কর্মরত ব্রিটিশ কম্পানির কর্মী ও যুক্তরাজ্যে সাময়িকভাবে প্রেরিত ভারতীয় কর্মীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। এর ফলে কর্মীরা কেবল নিজ নিজ দেশে সামাজিক সুরক্ষা কর দেবেন, উভয় দেশে নয়।

এদিকে ভারতের অর্থনীতি কয়েক বছরের মধ্যেই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কভিত্তিক নীতি অন্যান্য দেশকে নতুন করে বাণিজ্য চুক্তির গুরুত্ব অনুধাবনে বাধ্য করেছে এবং এই ধরনের চুক্তির জন্য তাগিদ তৈরি করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদির সরকারের জন্য যুক্তরাজ্য একটি উচ্চ অগ্রাধিকারের বাণিজ্য অংশীদার, যার লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতের রপ্তানি এক ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078