পানিকে মারণাস্ত্র ও যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ভারত - রংপুরে মির্জা আব্বাস

প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৫, ২১:৪৫ , অনলাইন ভার্সন
পানি কখনও মারণাস্ত্র হতে পারে না। পানি কখনও যুদ্ধের অস্ত্র হতে পারে না। একমাত্র ভারত বিশ্বে দেখিয়ে দিলো, পানি তারা যুদ্ধের ও মারণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। ৪ মে (রবিবার) বিকেলে তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে গণপদযাত্রার পূর্বে নগরীর শাপলা চত্বরে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা ভারতের কাছে পানি ছাড়া অন্য কিছু চাই না। আমরা বকশিস চাই না, ভিক্ষা চাই না। আমরা হিসাবের পাওনা চাই। আমাদের হিসেবের পাওনা দিতে হবে। আজকে না হলে কালকে। শুধু সরকারের অপেক্ষায় আছি। কিছুদিন আগে যে সরকার ছিলো, তারা সরকারে থাকার ইচ্ছে থেকে ভারতের সাথে এসব হিসেব করেন নাই।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে ভারতের অনেক কিছু আছে। আমাদের কাছে ভারতের অনেক পোর্ট আছে। মংলা পোর্ট আছে, চট্রগ্রামে আছে। আমরা এগুলো হিসেব করবো। হিসেব করার সময় এসেছে। আমাদের তিস্তার পানি দিতে হবে। ফারাক্কার পানি চাই। দিতে হবে। যেখানে যেখানে পানি দরকার সেখানে সেখানে পানি দিতে হবে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা অনেক আগেই পানির ন্যায্য হিস্যা পেতাম। যদি হাসিনার মতো একটা সন্ত্রাস সরকার না আসতো। এই পানি তারা ভারতের কাছে কিছু বলতে পারে নাই। এসময় তিনি আসাদুল হাবীব দুলুকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, ‘দুলু উত্তরবঙ্গের একজন প্রতিবাদী মুখ। একজন কৃতি সন্তান। তাই দুলু তুমি সাবধানে থাকবে। কেননা ভারত কখনও এই ধরণের প্রতিবাদী মুখ সহ্য করতে পারে না। ইতোপূর্বে শুধু সুরমা নদীর বাধের জন্য আমাদের ইলিয়াছ আলীকে গুম করা হয়েছে। 

মির্জা আব্বাস এসময় তিস্তা নদী নিয়ে আন্দোলনের আয়োজনের প্রশংসা করেন এবং তিস্তা আন্দোলন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তিনি এই আন্দোলনের সাথে থাকার অঙ্গিকার করেন। 

গণপদযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন  বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, রংপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক সামসুজ্জামান সামু, জেলা বিএনপির আহবায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু, বিএনপি নেতা এমদাদুল হক ভরসাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

এদিকে এই গণপদযাত্রাকে কেন্দ্র করে দুপুর থেকেই তিস্তা নদী পাড়ের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে লোকজন আসতে শুরু করে। সময় যত বাড়ে লোকজনের উপস্থিতিও বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে রংপুর নগরীর শাপলা চত্বর এলাকা। সব শ্রেণিপেশার মানুষের যেন জনশ্রোত। এসময় বন্ধ হয়ে যায় সকল সড়কে যানবাহন। নগরীর প্রধান সড়কে তিস্তা বাচাই আন্দোলন গণপদযাত্রায় অংশ নেওয়া মানুষ। তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন আয়োজিত এ গণপদযাত্রা রংপুর নগরীর শাপলা চত্বর থেকে শুরু হয়ে রংপুর জিলা স্কুল মাঠ পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায়। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কৃষক সংগঠন, শ্রমজীবী মানুষ, পরিবেশবাদী সংগঠন এবং সাধারণ নাগরিকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ পদযাত্রাটিকে এক গণআন্দোলনে রূপ দেয়। এই গণপদযাত্রায় তিস্তা বাঁচাও আন্দোলনের বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্লাকার্ড ও ব্যানার হাতে অংশ নেন নদীপারের মানুষসহ প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।

এর আগে ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় এবং অবিলম্বে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে তিস্তাপারের মানুষজন ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি দু’দিনব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে আয়োজিত কর্মসূচিতে পাঁচ জেলার ১১ পয়েন্টে তাঁবু খাটিয়ে একই সময়ে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে সংহতি প্রকাশ করে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সমাপনী অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে সবগুলো পয়েন্টে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ব্যতিক্রমধর্মী এই কর্মসূচিতে পাঁচ জেলার লক্ষাধিক মানুষ অংশ নেন। এরপরেও বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখন পর্যন্ত বিষয়টি আমলে নেয়নি।

ঠিকানা/এএস 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078