সামরিক খাতে ৯৪৬ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:০৬ , অনলাইন ভার্সন
মধ্যপ্রাচ্য সংকট, ইউক্রেন যুদ্ধ, ইরান-যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার অনিশ্চয়তা এবং এশিয়ায় ক্রমবর্ধমান প্রতিদ্বন্দ্বিতাসহ ২০২৫ সালে বিশ্ব যখন একাধিক ফ্রন্টে উত্তপ্ত, ঠিক তখনই নিজেদের সামরিক খাতে ৯৪৬ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দের ঘোষণা দিল যুক্তরাষ্ট্র।

স্থানীয় সময় ২৪ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) মার্কিন কংগ্রেসনাল বাজেট অফিস (সিবিও) এক ঘোষণায় এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পরবর্তী এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক সামরিক শক্তি রক্ষণাবেক্ষণ ও আধুনিকীকরণের জন্য প্রায় ৯৪৬ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সিবিও’র দ্বিবার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও জ্বালানি বিভাগের বাজেট পরিকল্পনার ওপর ভিত্তি করেই মূলত এই বাজেট দেওয়া হয়েছে। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৫ থেকে ২০৩৪ সালের মধ্যে প্রতি বছর গড়ে ৯৫ বিলিয়ন ডলার করে ব্যয় হবে। যার মধ্যে ৩৫৭ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ থাকবে বিদ্যমান পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার রক্ষণাবেক্ষণে।

মূল ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে-
  • অস্ত্র ব্যবস্থাপনার জন্য ৩০৯ বিলিয়ন ডলার;
  • নির্দেশনা, নিয়ন্ত্রণ, যোগাযোগ ও আগাম সতর্কীকরণ ব্যবস্থার জন্য ৭৯ বিলিয়ন ডলার;
  • পরীক্ষাগার ও গবেষণার জন্য ৭২ বিলিয়ন ডলার;
  • সম্ভাব্য অতিরিক্ত ব্যয়ের জন্য সংরক্ষিত ১২৯ বিলিয়ন ডলার;
যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক শক্তির মধ্যে বর্তমানে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:
  • পারমাণবিক চালিত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বহনকারী সাবমেরিন,
  • ভূমি থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) এবং
  • দীর্ঘ ও স্বল্পপাল্লার বোমারু বিমান এবং পারমাণবিক ওয়ারহেড। 
অনলাইন তথ্যভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম স্ট্যাটিস্টা’র ২০২৪ সালের জানুয়ারির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বের মোট ১২,১২১টি পারমাণবিক ওয়ারহেডের মধ্যে ৫,০৪৪টি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দখলে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী?
  • যুক্তরাষ্ট্রের মোট ব্যয়: ৯৪৬ বিলিয়ন ডলার (২০২৫–২০৩৪)
  • বার্ষিক গড় ব্যয়: ৯৫ বিলিয়ন ডলার
  • অস্ত্র ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন: ৩০৯ বিলিয়ন ডলার
  • নিয়ন্ত্রণ ও সতর্কতা ব্যবস্থা: ৭৯ বিলিয়ন ডলার
  • পরীক্ষাগার ও গবেষণা: ৭২ বিলিয়ন ডলার
  • অতিরিক্ত সম্ভাব্য ব্যয়: ১২৯ বিলিয়ন ডলার
কেন এত বড় বিনিয়োগ?

চীন ও রাশিয়ার পারমাণবিক আধুনিকীকরণ: রাশিয়া ইতোমধ্যেই হাইপারসনিক অস্ত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে। চীনও দ্রুত তাদের পারমাণবিক অস্ত্রাগার দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে কাজ করছে।

‘নিউক্লিয়ার ত্রয়ী’ পুনর্গঠন: আমেরিকার ভূমি (আইসিবিএম), আকাশ (বি-২১ বোমার) ও জলের (কলাম্বিয়া-ক্লাস সাবমেরিন) মাধ্যমে তিনমুখী পারমাণবিক শক্তি বর্তমানে প্রযুক্তিগতভাবে পরিণতিতে পৌঁছেছে। ফলে আপগ্রেড অপরিহার্য।

শীতল যুদ্ধের উত্তরাধিকার: যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ পারমাণবিক অস্ত্র শীতল যুদ্ধের সময়কার। এই অস্ত্রাবলির প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা ও ব্যয়বহুল রক্ষণাবেক্ষণ আজকের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

অস্ত্রের খেলায় কে কোথায় দাঁড়িয়ে?

মোট বিশ্ব পারমাণবিক ওয়ারহেড (২০২৪): ১২,১২১
  • যুক্তরাষ্ট্র: ৫,০৪৪
  • রাশিয়া: আনুমানিক ৫,৮০০
  • চীন: ৫০০+ এবং দ্রুত বাড়ছে।
বিতর্ক: আত্মরক্ষা, নাকি আতঙ্ক?

বিশেষজ্ঞদের মতে, এত বিপুল ব্যয় প্রশ্ন তুলছে—এই বাজেট কি সত্যিই প্রতিরক্ষা নাকি কৌশলগত? নাকি দাপট দেখানোর অস্ত্র?

এই অর্থ দিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জলবায়ু খাতে আমূল পরিবর্তন আনা যেত—এটাই শান্তিকামী মহলের আপত্তি।

পারমাণবিক ছায়ার রাজনীতি

যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত শুধু প্রতিরক্ষা নয়, একটি ভূ-রাজনৈতিক বার্তা—বিশ্বযুদ্ধ নয়, কিন্তু প্রস্তুতি সর্বদা।

মূলত আমরা দাঁড়িয়ে আছি এমন এক বিশ্বে, যেখানে পারমাণবিক অস্ত্র নেই মানেই দুর্বলতা নয়। কিন্তু পারমাণবিক অস্ত্র থাকলেই নিরাপত্তা—এ ধারণা আবারও জোরদার হচ্ছে। সূত্র: আনাদোলু

ঠিকানা/এএস 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041