নসিবে যা-ই থাক, গণভবন না ছাড়ার পাকা সিদ্ধান্তে অটল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন ছাড়ার চেয়ে ঝুঁকি নিয়ে হলেও ক্ষমতায় থাকাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন দল ও সরকারের দেশি-বিদেশি হিতাকাক্সক্ষীরা। সেই আলোকেই ইংরেজিতে জানানো হয়েছে, নো কেয়ারটেকার, নো রেজিগনেশন। এর বঙ্গানুবাদে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক হবে না। প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগও করবেন না। সরকার পদত্যাগ করবে না। পার্লামেন্ট বিলুপ্ত হবে না। পছন্দ হলে বিএনপি নির্বাচনে আসুক, না হয় যা ইচ্ছে করুক। বার্তাটি মূলত নিরপেক্ষ নির্বাচনের তাগিদ দেওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি।
যুক্তরাষ্ট্র যা বোঝার বুঝে নিয়েছে। তাদের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের আপাতদৃষ্টিতে পিছু হটার জো নেই। ঢাকায় সদ্য নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকও বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আকাক্সক্ষার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। সাদামাটা ভাষায় ভারতও চায় সুষ্ঠু নির্বাচন। তবে তত্ত্বাবধায়ক প্রশ্নে তাদের মতিগতি সরকারেরই অনুকূলে। শেষ পর্যন্ত সুষ্ঠু-অবাধ নির্বাচনের ড্রাইভিং সিটে কে থাকবে, এ নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের দুই কংগ্রেসম্যানের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন পক্ষের বৈঠকে প্রাধান্য পেয়েছে আসন্ন নির্বাচন। বিএনপিসহ সুশীল সমাজের কয়েক সদস্য তাদের বোঝাতে পেরেছেন, এ সরকার বা শেখ হাসিনার অধীনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে না। আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে নির্বাচন নিয়ে সমঝোতা সম্ভব কি না, তা-ও স্পষ্ট করে জানতে চেয়েছেন দুই কংগ্রেসম্যান ম্যাককরমিক এবং এড কেস। আওয়ামী লীগ এবং তাদের গড়া ১৪ দল বাদে প্রায় সব বিরোধী দল অবাধ, সুষ্ঠু ও অহিংস নির্বাচন চায় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে।
মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের সঙ্গে বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বিরোধীরা তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ও সরকারের পদত্যাগের দাবিতে অটল থাকলে সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই। বিরোধী দলের কাছে নির্বাচন নয়, সরকারের পতন গুরুত্বপূর্ণ-এমন মূল্যায়নও তার। কংগ্রেসম্যানদের সঙ্গে সুশীল সমাজের আলোচনার মধ্যে উপাদান অনেক। ‘এ দেশে নির্বাচন হয়নি, অনির্বাচিত সরকার রয়েছে’-এমন অভিমত দিয়েছেন তাদের কয়েকজন। বৈঠক প্রসঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বলেছেন, তারা বাংলাদেশের হিরোদের ডেকেছিলেন। সাকল্য ফলাফলে এক অনিশ্চিত কিন্তু অনিবার্য পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দুই দলের কথার বোমাও তীব্র পর্যায়ে চলমান। সরকারবিরোধী আন্দোলন সফল না হলে দেশ ৫০ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনে পড়বে বলে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আর বিপরীত থেকে তথ্যমন্ত্রীর থ্রোয়িং, সামনের নির্বাচনে না এলে ৫০ বছর পিছিয়ে যাবে বিএনপি। আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে থাকা রাষ্ট্রযন্ত্র এবং বিএনপির পক্ষে বিরোধী দল ও জনমতের সাম্প্রতিক উত্থান দেশকে অচলাবস্থার দিকে নিয়ে যাওয়ার শঙ্কা ভর করেছে অনেকের মধ্যে।
বিএনপির ক্ষোভ-বিক্ষোভ সামনের দিনগুলোতে শান্তিপূর্ণ থাকার নিশ্চয়তা নেই। সরকারের রাজনৈতিক দুর্গের অসহিষ্ণুতাও বাড়বাড়ন্ত। সংঘর্ষ, গণগ্রেপ্তার এবং কূটনৈতিক চাপ বাড়াতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অবিরাম তাগিদ ডিঙিয়ে কোন পর্যায়ে চলে যায়, সেই নিশ্চয়তাও নেই। তা রুখতে সরকার বিএনপির বিরুদ্ধে ডাবল ডাউন করে বসতে পারে। দেশকে আরেকটি বিতর্কিত নির্বাচনের দিকে নিয়ে যেতে সরকারের সামনে আইনি বা সাংবিধানিক কোনো বাধা নেই। যা নতুন এক রেইন বোতে আওয়ামী লীগ-বিরোধীদের সহিংস করে তোলার শঙ্কা আছে। ঝুঁকি তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ তখন অনিবার্যও হয়ে উঠতে পারে। প্রথম স্নায়ুযুদ্ধের সময় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ ১৯৬৯, ১৯৭১ এবং ১৯৭৫ দেখেছিল। এবারের স্নায়ুযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা এখন দেখার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি দ্বন্দ্বে জড়িয়ে আওয়ামী লীগ শুভ বা অশুভ নতুন কোন পরিস্থিতি ডেকে আনে, এ প্রশ্নও ঘুরছে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পৃথিবীর কোনো দেশেই ওয়াশিংটন হস্তক্ষেপ করতে পারে না। শুধু বাংলাদেশেই পান থেকে চুন খসলেই নিষেধাজ্ঞা-ভিসানীতির হুমকি-ধমকি দেয়। এ বছর ৩৩টি দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও কাউকে নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই, মাথাব্যথা কেবল বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে-এমন মন্তব্যও করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের থিঙ্কট্যাঙ্কের বার্তাই পুনরুচ্চারণ করেছেন ওবায়দুল কাদের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগেই বলে দিয়েছেন, মার্কিন ভিসা এবং নিষেধাজ্ঞার মতো বিষয়গুলো নিয়ে তিনি চিন্তা করতে চান না। তার ভাষায়, কে ভিসা দেবে না, কে স্যাংশন দেবে, ও নিয়ে মাথাব্যথা করে কোনো লাভ নেই। ‘বিশ ঘণ্টা প্লেন জার্নি করে আটলান্টিক পার হয়ে, ওই আমেরিকায় না গেলে কিচ্ছু আসে যায় না’ উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্র তাকে আর ক্ষমতায় চায় না-এমন সাফকথা ও ভয় না করার মেসেজও তিনি দিয়েছেন। এরপর আর কোনো কথা চলে না। যা ঘটার ঘটুক, সেই ঝুঁকি নেওয়াই আছে সরকারের, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর।
যুক্তরাষ্ট্র যা বোঝার বুঝে নিয়েছে। তাদের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের আপাতদৃষ্টিতে পিছু হটার জো নেই। ঢাকায় সদ্য নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকও বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আকাক্সক্ষার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। সাদামাটা ভাষায় ভারতও চায় সুষ্ঠু নির্বাচন। তবে তত্ত্বাবধায়ক প্রশ্নে তাদের মতিগতি সরকারেরই অনুকূলে। শেষ পর্যন্ত সুষ্ঠু-অবাধ নির্বাচনের ড্রাইভিং সিটে কে থাকবে, এ নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের দুই কংগ্রেসম্যানের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন পক্ষের বৈঠকে প্রাধান্য পেয়েছে আসন্ন নির্বাচন। বিএনপিসহ সুশীল সমাজের কয়েক সদস্য তাদের বোঝাতে পেরেছেন, এ সরকার বা শেখ হাসিনার অধীনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে না। আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে নির্বাচন নিয়ে সমঝোতা সম্ভব কি না, তা-ও স্পষ্ট করে জানতে চেয়েছেন দুই কংগ্রেসম্যান ম্যাককরমিক এবং এড কেস। আওয়ামী লীগ এবং তাদের গড়া ১৪ দল বাদে প্রায় সব বিরোধী দল অবাধ, সুষ্ঠু ও অহিংস নির্বাচন চায় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে।
মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের সঙ্গে বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বিরোধীরা তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ও সরকারের পদত্যাগের দাবিতে অটল থাকলে সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই। বিরোধী দলের কাছে নির্বাচন নয়, সরকারের পতন গুরুত্বপূর্ণ-এমন মূল্যায়নও তার। কংগ্রেসম্যানদের সঙ্গে সুশীল সমাজের আলোচনার মধ্যে উপাদান অনেক। ‘এ দেশে নির্বাচন হয়নি, অনির্বাচিত সরকার রয়েছে’-এমন অভিমত দিয়েছেন তাদের কয়েকজন। বৈঠক প্রসঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বলেছেন, তারা বাংলাদেশের হিরোদের ডেকেছিলেন। সাকল্য ফলাফলে এক অনিশ্চিত কিন্তু অনিবার্য পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দুই দলের কথার বোমাও তীব্র পর্যায়ে চলমান। সরকারবিরোধী আন্দোলন সফল না হলে দেশ ৫০ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনে পড়বে বলে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আর বিপরীত থেকে তথ্যমন্ত্রীর থ্রোয়িং, সামনের নির্বাচনে না এলে ৫০ বছর পিছিয়ে যাবে বিএনপি। আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে থাকা রাষ্ট্রযন্ত্র এবং বিএনপির পক্ষে বিরোধী দল ও জনমতের সাম্প্রতিক উত্থান দেশকে অচলাবস্থার দিকে নিয়ে যাওয়ার শঙ্কা ভর করেছে অনেকের মধ্যে।
বিএনপির ক্ষোভ-বিক্ষোভ সামনের দিনগুলোতে শান্তিপূর্ণ থাকার নিশ্চয়তা নেই। সরকারের রাজনৈতিক দুর্গের অসহিষ্ণুতাও বাড়বাড়ন্ত। সংঘর্ষ, গণগ্রেপ্তার এবং কূটনৈতিক চাপ বাড়াতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অবিরাম তাগিদ ডিঙিয়ে কোন পর্যায়ে চলে যায়, সেই নিশ্চয়তাও নেই। তা রুখতে সরকার বিএনপির বিরুদ্ধে ডাবল ডাউন করে বসতে পারে। দেশকে আরেকটি বিতর্কিত নির্বাচনের দিকে নিয়ে যেতে সরকারের সামনে আইনি বা সাংবিধানিক কোনো বাধা নেই। যা নতুন এক রেইন বোতে আওয়ামী লীগ-বিরোধীদের সহিংস করে তোলার শঙ্কা আছে। ঝুঁকি তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ তখন অনিবার্যও হয়ে উঠতে পারে। প্রথম স্নায়ুযুদ্ধের সময় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ ১৯৬৯, ১৯৭১ এবং ১৯৭৫ দেখেছিল। এবারের স্নায়ুযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা এখন দেখার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি দ্বন্দ্বে জড়িয়ে আওয়ামী লীগ শুভ বা অশুভ নতুন কোন পরিস্থিতি ডেকে আনে, এ প্রশ্নও ঘুরছে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পৃথিবীর কোনো দেশেই ওয়াশিংটন হস্তক্ষেপ করতে পারে না। শুধু বাংলাদেশেই পান থেকে চুন খসলেই নিষেধাজ্ঞা-ভিসানীতির হুমকি-ধমকি দেয়। এ বছর ৩৩টি দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও কাউকে নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই, মাথাব্যথা কেবল বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে-এমন মন্তব্যও করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের থিঙ্কট্যাঙ্কের বার্তাই পুনরুচ্চারণ করেছেন ওবায়দুল কাদের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগেই বলে দিয়েছেন, মার্কিন ভিসা এবং নিষেধাজ্ঞার মতো বিষয়গুলো নিয়ে তিনি চিন্তা করতে চান না। তার ভাষায়, কে ভিসা দেবে না, কে স্যাংশন দেবে, ও নিয়ে মাথাব্যথা করে কোনো লাভ নেই। ‘বিশ ঘণ্টা প্লেন জার্নি করে আটলান্টিক পার হয়ে, ওই আমেরিকায় না গেলে কিচ্ছু আসে যায় না’ উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্র তাকে আর ক্ষমতায় চায় না-এমন সাফকথা ও ভয় না করার মেসেজও তিনি দিয়েছেন। এরপর আর কোনো কথা চলে না। যা ঘটার ঘটুক, সেই ঝুঁকি নেওয়াই আছে সরকারের, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর।