ফিলিস্তিনিদের কপালে কি আদৌ স্বাধীনতা লেখা আছে?

প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৫৮ , অনলাইন ভার্সন
ফিলিস্তিনিরা আজ যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে, তাতে প্রশ্নটা খুবই স্বাভাবিক, তারা আদৌ স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র দেখতে পারবে তো? আজ এমনই অস্তিত্ব সংকটের মুখে তারা, স্বাধীনতা অর্জন তো দূরাগত স্বপ্ন, কেউ একজনও বেঁচে থাকতে পারবে কি নাÑসে প্রশ্নই বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। সেই ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বুক চিরে বিষফোড়ার মতো জন্ম নেয় ইসরায়েল রাষ্ট্র। ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্মের পর থেকেই ফিলিস্তিনিরা তাদের অস্তিত্ব জ্বালায় জ্বলছে। কেননা সেদিন থেকেই তাদের স্বাধীনতা বিপন্ন। এত দিন তারা লড়াই করে করে শক্তি ক্ষয় করে এসেছে। এখন তাদের শক্তি নেই বললেই চলে।
শক্তি কেমন করে থাকে, প্রতিদিন ইসরায়েলি বিমান হামলায় যেমন গাজার বাসিন্দারা প্রাণ দিচ্ছে, তেমনি বাড়িঘরসহ বড় বড় স্থাপনা ধ্বংস হচ্ছে। বর্তমানের গাজা দেখলে মনে হবে প্রেতপুরী। জনমানবশূন্য। ইসরায়েলি বিমানের নিশানা থেকে শুধু জনপদ নয়; রিফিউজি ক্যাম্প, হাসপাতাল, শিশু হাসপাতাল, বিভিন্ন সেবাকেন্দ্র, ডাক্তার, সাংবাদিক কিছুই বাদ যাচ্ছে না। কিছুদিনের মধ্যেই গাজায় আর কোনো জনবসতির সন্ধান মিলবে বলে বিশ্বাস করা যাবে না, যদি ধ্বংসযজ্ঞ এই মাত্রাতেই চলতে থাকে, যদি বন্ধ না হয়। মানুষ না থাকলে একটি দেশকে দেশ বলা যাবে না। দেশের সংজ্ঞায় অত্যাবশ্যকীয় শর্ত : ভূখণ্ড, জনসংখ্যা, মানচিত্র, একটি জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় সংগীত। এর মধ্যে যদি অন্যতম শর্ত জনসংখ্যাই না থাকে, তবে ফিলিস্তিনের দেশ হিসেবেই অস্তিত্ব থাকে না। তাই ৯ এপ্রিল ঠিকানার প্রথম পৃষ্ঠায় ‘স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কি আর সম্ভব?’ বলে যে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে, তার প্রাসঙ্গিকতাই তো আর থাকে না।
খবরটিতে যে সত্য তুলে ধরা হয়েছে, তা থেকে জানা যায়, জন্মের পর থেকে ফিলিস্তিনকে যে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে বাধ্য হয়, সে যুদ্ধই এখনো চালিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনিরা। একসময় আরব দেশগুলোর সঙ্গে যুদ্ধ থেকে বের হয়ে এলে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ায় ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিনের যুদ্ধ আর শেষ হয় না এবং ২০২৫ সালে এসে ইসরায়েল যেন ফিলিস্তিনিদের সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়ে যুদ্ধ শেষ করতে চাচ্ছে। সে কারণে ইসরায়েলকে এই যুদ্ধের জন্য দায়ী করে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় বয়ে গেলেও ইসরায়েল যুদ্ধ থেকে ফিরে আসার কথা মোটেও ভাবছে না। যুক্তরাষ্ট্র এমনকি তেলআবিবের নিন্দা ও প্রতিবাদকে বিন্দুমাত্র গুরুত্ব দিচ্ছে না ইসরায়েল। ইসরায়েল এবার শেষ খেলায় মেতেছে। একদিকে ট্রাম্প ও পুতিনের যুদ্ধবিরতির মকারি চলছে, অন্যদিকে গাজায় তার চেয়েও ভয়ংকরভাবে চলছে ইসরায়েলি বিমানের বোমাবর্ষণ। আবার নেই পানি, বিদ্যুৎ, নেই কিছুই। জাতিসংঘ নীরব। সভ্যতার বিরুদ্ধে, মানবতার বিরুদ্ধে চরম অবহেলা। বিশ্ববিবেকের ঘরে তালা মারা। সবাই নীরব দর্শক। সবাই চেয়ে চেয়ে দেখছে শিশু, নারী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাসহ ফিলিস্তিনিদের মৃত্যু, হাহাকার, আর্তনাদ।
ইসরায়েল মনে করছে, বিশেষ করে, ইসরায়েলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মনে করেন, দ্বিরাষ্ট্র ভাবনা মুছে দিতে এই যুদ্ধে গাজা জনশূন্য করে ইসরায়েলিদের দিয়ে সম্পূর্ণ গাজাকে পুনর্বাসন করা গেলে তাদের আর ভবিষ্যতে কোনো যুদ্ধের প্রয়োজন হবে না। তবে অনেকে মনে করেন, এখনো সে সুযোগ একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। ইসরায়েল যদিও আর দ্বিরাষ্ট্রের মধ্যে কোনো সমাধান খোঁজে না। তেলআবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেইর লিটভ্যাস্ক ইসরায়েলের সরকারি দৃষ্টিভঙ্গির সমালোচনা করে বলেছেন, ইসরায়েলের কাছে সমাধান হচ্ছে, পরিস্থিতি যেভাবে আছে সেভাবেই থাক। তারা চায় পশ্চিম তীরের নিয়ন্ত্রণ থাকবে তাদের হাতে। আবার ফিলিস্তিনের একটা কর্তৃপক্ষ থাকলেও সেটা হবে খুবই দুর্বল এবং ইসরায়েলের ওপর থাকবে সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। কিন্তু সেটা তো অবাস্তব একটা ভাবনা। এটা তো ভুল ভাবনা।
শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ হচ্ছে যুদ্ধের পথ থেকে তেলআবিবের সরে আসা এবং পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে মেনে নিয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান গ্রহণ করা। কে জানে, কবে ইসরায়েলি যুদ্ধবাজদের বিবেক জাগ্রত হবে।
 
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: +880  1338-950041