খুচরায় পাইকারি সর্বনাশের শঙ্কা

প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০১ , অনলাইন ভার্সন
অবিরাম ইজি কাজে বিজি করে দেওয়া হচ্ছে সরকারকে। একটার কিনারা করতে না করতেই ভর হচ্ছে আরেকটা। মডেল মেঘনা বা ক্রিম আপা থেকে ছোট সাজ্জাদ বা তার বউ কাহিনি, যেন এসবেই একটি বাংলাদেশ। নোবেল লরিয়েট প্রফেসর ড. ইউনূসের সরকার ও তার উপদেষ্টারা থাকছেন এসব নিয়েই। এসব ফালতু কাণ্ডে ঢেকে যাচ্ছে সরকারের একেকটি বড় বড় কাজ। এর মাঝেই মেঘনাকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া সঠিক হয়নি স্বীকার করে ফ্যাসাদে পড়ে গেছেন আইন উপদেষ্টা। গণমাধ্যম তা লুফে নিয়েছে আচ্ছাভাবে। সোশ্যাল মিডিয়া আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে এ নিয়ে চরম লাগামছাড়া। চট্টগ্রামের সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ কিছুদিন আগে গ্রেফতার হলে তার স্ত্রী তামান্না ভিডিওকলে টাকা দিয়ে আদালত ও জামিন কিনে নেওয়ার কথা বলেছিলেন। সেই তামান্নার জামিন হয়েছে হাইকোর্টে। এ ধরনের খুচরা ঘটনা নিয়ে সমানে চলছে কন্টেন্ট ব্যবসা।
বাস্তবতার তোড়ে সোশ্যাল মিডিয়াকে একেবারে অগ্রাহ্য করার অবস্থাও নেই। অগ্রাহ্য বা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন দেশের প্রধান দল বিএনপির শীর্ষ কয়েক নেতাও। তারা গোটা দলকেও প্যাঁচিয়ে ফেলেছেন। অবস্থা কিছুটা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে এক-দেড় বছর ধরে চলা পাপিয়া, পরীমণি, মাহি, সাবরিনা, শাহেদ, এশা, বেনজীর, হারুন, সম্রাট, খালেদ, জিকে শামীম ইত্যাদি ইস্যুর মতো। শেখ হাসিনা শত চেষ্টা করেও আর পারছিলেন না তা নিয়ন্ত্রণে নিতে। একটাতে অ্যাটেনশন দিলে আরেকটা সামনে চলে এসেছে।
এখন একদিকে সরকারের গুম কমিশন, আরেকদিকে বিভিন্ন জায়গায় বিনা ওয়ারেন্টে দরজা ভেঙে যাকে তাকে দুর্ধর্ষ আসামির মতো ধরে নিয়ে গুম স্টাইলে আটকে রাখা। পরে মনগড়া মামলা দিয়ে জেলে ঢোকানোর কিছু ঘটনা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়ে চলছে। বেশির ভাগ মামলাতেই অভিযুক্তকে ফ্যাসিস্টের সহযোগী, সরকার উৎখাতের অপচেষ্টা, সাইবার ক্রাইম, নানান গ্রুপে যুক্ত হয়ে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র পাকানোর মতো ভয়ানক অপরাধী সাজানো হচ্ছে। ঠিকভাবে ফেসবুক চালাতে জানে না, রাজনীতির ধারেকাছেও নেইÑএমন ব্যক্তিকেও বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে দুর্ধর্ষ সাইবার ক্রিমিনাল। পুলিশ, রাজনীতিক, মামলাবাজ মিলিয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন শহর এমনকি গ্রাম পর্যায়েও ভয়ংকর একটা কীট সম্প্রদায় গজিয়েছে।
এ ধরনের অপকর্মের ট্রেডিং করতে গিয়ে আবার শুরু হয়েছে কুখ্যাত সেই বিশেষ ক্ষমতার কালো আইন। যে আইনের কথা মানুষ ভুলেও গিয়েছিল। সব ধরনের ‘কালো আইন’ বাতিলের কথা বলে এলেও অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে রহস্যজনক টোকা পড়েছে বিতর্কিত ‘বিশেষ ক্ষমতা’ আইন প্রয়োগে। মিস আর্থ বাংলাদেশ-২০২০ বিজয়ী মডেল মেঘনা আলমকে বাসা থেকে জোরপূর্বক তুলে নেওয়ার পর বিষয়টি সামনে এলেও মূলত এর প্রয়োগ হয়েছে এর আগেও। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আটকাদেশের ক্ষেত্রেও ‘নীরবে’ প্রয়োগ হচ্ছে আইনটি। দমনমূলক আইনটি অস্পষ্ট ও অতিরিক্ত বিস্তৃত বিধানের মাধ্যমে অতীতে দীর্ঘ সময় ধরে বিচার ছাড়াই এবং কোনো আদালতের নজরদারি ছাড়াই মানুষকে স্বেচ্ছাচারভাবে আটক করতে ব্যবহৃত হয়েছে। মূলত, পাকিস্তানের নিরাপত্তা আইন ১৯৫২, জননিরাপত্তা অর্ডিন্যান্স ১৯৫৮ এবং ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ তফসিলি অপরাধ (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশকে প্রতিস্থাপনের জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি এই আইনটি পাস করা হয়। বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪ বা ডিটেনশন আইন প্রয়োগ করে সরকার কোনো ব্যক্তিকে আদালতের আনুষ্ঠানিক বিচার ছাড়াই জননিরাপত্তা, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে সন্দেহভাজন হিসেবে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আটক বা বন্দী করতে পারে। এ আইনের নতুন করে অপব্যবহার দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক দুনিয়ার বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের কাছেও চলে গেছে। সরকারের পক্ষে তা অস্বীকারের অবস্থা নেই। আবার স্বীকার করেও যন্ত্রণা। নানান জনকে কারাভোগসহ অপদস্থ ও হয়রানি করে লাভবান গ্রুপটি চলে যাচ্ছে সাইডলাইনে।
সব মিলিয়ে পরিস্থিতিটা সরকারের জন্য বিব্রতকর। আবার প্রধান দল বিএনপিও স্বস্তিতে নেই। তাদের আন্দোলনের স্বীকৃতি দিচ্ছে না ছাত্রদের গড়া নতুন সংগঠন এনসিপি। উপদেষ্টাদের কারও কারও মধ্যেও বিএনপিকে সাইডলাইনে ফেলার প্রবণতা। এমনকি নির্বাচন নিয়ে বাহানায়ও কেউ কেউ যুক্ত হয়ে গেছেন। একজন উপদেষ্টা ফরিদা দাবি করেছেন, তারা নির্বাচিত। তার স্বামী ফরহাদ মযহার বলেছেন, ভোটের মাধ্যমে প্রকৃত গণতন্ত্র আসে না। আসে একধরনের লুটপাটতন্ত্র। এর কাছাকাছি কথা তিনি আগে থেকেই বলে আসছেন। এবার বললেন লাউডে, হাই ভলিউমে। বিএনপির জন্য গোটা বিষয়টি অস্বস্তিকর। জুলাই-আগস্টে বিপ্লব বা অভ্যুত্থান কোনোটাই হয়নি বলে দাবি করছে তারা। তাহলে কী হয়েছে, তাও বলছে না। বাড়তি হিসেবে যোগ হয়েছে চারুকলায় আগুন। আনন্দ শোভাযাত্রার আগেই পুড়ে গেল ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’। খেলতে কেউ কম করছে না। এর আগে ঢাকার মার্চ ফর গাজা কর্মসূচির মাধ্যমে এক ঢিলে কয়েক পাখি মেরেছে আরেক গ্রুপ। নববর্ষের দুদিন আগে সোহরাওয়ার্দীতে মার্চ ফর গাজা উপলক্ষে লাখ লাখ মানুষের ইসরায়েল-বিরোধী স্লোগান প্যালেস্টাইনের মুক্তিকামী জনতাকে উজ্জীবিত করেছে। এক‌ই সঙ্গে ইসরায়েল এবং ইসরায়েলের মতো সকল আগ্রাসী শক্তিগুলোর প্রতি বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনতা সুস্পষ্ট বার্তা দিয়েছে। সেখানে এক কাতারে দাঁড়াতে হয়েছে বিএনপি, জামায়াত, হেফাজত, এনসিপিসহ বিভিন্ন দলের নেতাদের। বলতে হয়েছে, নিজেদের মধ্যে চিন্তাগত মতপার্থক্য থাকলেও ফিলিস্তিনিদের পক্ষে এক কাতারে দাঁড়িয়েছেন।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078