সৌদি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মডেল মেঘনার যেভাবে পরিচয়-বাগদান

প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:০৩ , অনলাইন ভার্সন
সৌদি আরবের সদ্য বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলানের সঙ্গে মডেল ও উদ্যোক্তা মেঘনা আলমের পরিচয় হয়েছিল আট মাস আগে। সেই পরিচয়েই ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে সখ্য। মেঘনার পরিবারের দাবি, পরিচয়ের মাত্র চার মাস পর গত বছরের ৪ ডিসেম্বর তাদের মধ্যে গোপনে বাগদান সম্পন্ন হয়। তবে এই দাবির সপক্ষে কোনো কাগজপত্র তারা দেখাতে পারেনি।

পারিবারিক সূত্র বলছে, মেঘনার সঙ্গে রাষ্ট্রদূত ঈসার পরিচয়ের সূত্রপাত হয়েছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম এশিয়া অনুবিভাগের এক কর্মকর্তার মাধ্যমে। গত বছরের আগস্টে ঢাকায় সৌদি দূতাবাস আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে প্রথম দেখা হয় রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান ও মেঘনার। সেখান থেকেই শুরু হয় তাদের বন্ধুত্ব। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। রাষ্ট্রদূত মেঘনার ‘মিস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’ নামের একটি সামাজিক উদ্যোগে সহযোগিতা করতেন। বিভিন্ন সময় একসঙ্গে ঘোরাঘুরি ও অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেখা যেত তাদের।

এ সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়ার চার মাসের মাথায় ডিসেম্বরের এক সকালে মেঘনা পরিবারকে জানান, পরদিন তার বাগদান। পরিবারে তখন বিয়ের প্রস্তুতির আমেজ। কারণ, মেঘনা জানান, বিয়ের পর তারা সৌদি আরবে স্থায়ী হবেন। কিন্তু বাগদানের কিছুদিন পরই এক নাটকীয় মোড় নেয় ঘটনাটি। মেঘনার কাছে খবর আসে, রাষ্ট্রদূতের রয়েছে স্ত্রী ও সন্তান। বিষয়টি জানার পর নিজেকে প্রতারিত মনে করেন মেঘনা।

পরিবারের দাবি, এর পর থেকেই রাষ্ট্রদূত বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করেন। মেঘনার সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেন। একপর্যায়ে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। মেঘনা তখন নিজের ক্ষোভ জানাতে চান। বাবা বদরুল আলমের ভাষায়, তার মেয়ে শুধু রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে দুঃখ প্রকাশ চেয়েছিলেন। সে আশ্বাস না পেয়ে সিদ্ধান্ত নেন, বিষয়টি প্রকাশ্যে আনবেন।

এই শঙ্কা থেকেই রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে অনানুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জানান, একজন নারী তার কাছ থেকে ‘আর্থিক সুবিধা নেওয়ার জন্য’ সম্পর্ককে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন এবং হুমকি দিচ্ছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অবহিত করে। সেখানে বিষয়টি তদারক করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার একজন বিশেষ সহকারী। তার নির্দেশে ডিবি পুলিশকে দেওয়া হয় খোঁজ নেওয়ার দায়িত্ব।

এরই মধ্যে ৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে মেঘনাকে আটক করে ডিবি পুলিশ। আটকের কিছু আগে মেঘনা ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, ‘পুলিশ পরিচয়ে কিছু লোক’ তার বাসার দরজা ভাঙার চেষ্টা করছেন।

পরদিন ১০ এপ্রিল পুলিশের আবেদনের ভিত্তিতে আদালত বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘনাকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দেন। বর্তমানে তিনি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী।

এ ঘটনায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন মেঘনার পরিচিত ব্যবসায়ী মো. দেওয়ান সমীর (৫৮)। তিনি ‘কাউলি গ্রুপ’-এর একজন নির্বাহী ছিলেন। গ্রুপটির রয়েছে একটি ভিসা প্রসেসিং সেন্টার, যার মাধ্যমে জাপানের ভিসা প্রক্রিয়া হয়। মেঘনা এই গ্রুপের অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করতেন। সমীরকে ‘চাঁদাবাজির’ মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

রিমান্ডে নিতে আদালতে দেওয়া প্রতিবেদনে পুলিশ বলেছে, সমীর সুন্দরী মেয়েদের ব্যবহার করে উচ্চশ্রেণির ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলতেন। পরে সুকৌশলে অর্থ আদায় করতেন। সেভাবে তিনি সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসাকেও ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেন। তারা সৌদি রাষ্ট্রদূতের কাছে ৫০ লাখ ডলার দাবি করেছিলেন।

মেঘনার পরিবার বলছে, তারা তিন দশক আগে বরিশাল থেকে ঢাকায় আসেন। বাবা বদরুল আলম বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং একজন রাজনৈতিক গবেষক। তার চার মেয়ের মধ্যে বড় মেঘনা।

মেঘনা ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ করেন। ২০২০ সালে তিনি ‘মিস আর্থ বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন। মডেলিং ছাড়াও উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করছেন। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।

ঠিকানা/এনআই
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078