ইরানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

প্রকাশ : ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫৩ , অনলাইন ভার্সন
পরমাণু ইস্যুতে ইরানের সঙ্গে ফের উত্তেজনা চলছে যুক্তরাষ্ট্রের। এমনকি পরমাণু চুক্তি না করলে ইরানে সরাসরি হামলার হুমকিও দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। 
অন্যদিকে পরমাণু ইস্যুতে সরাসরি কোনও ধরনের আলোচনায় বসতেও অস্বীকার করেছিল তেহরান। তবে এখন উভয় দেশের মধ্যে উত্তাপ কিছুটা হলেও কমার লক্ষণ পাওয়া যাচ্ছে। ইরানের সঙ্গে সরাসরি পারমাণবিক আলোচনায় বসতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র। ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই এই তথ্য জানিয়েছেন। এছাড়া ইরানের পক্ষ থেকেও বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। আজ ৮ এপ্রিল (মঙ্গলবার) এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। 
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, শনিবার সম্ভাব্য পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান “সরাসরি আলোচনা” করবে বলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও এই বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এবং এটিকে “একটি সুযোগের পাশাপাশি একটি পরীক্ষা” বলে অভিহিত করেছেন।

সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে আলোচনা “খুব উচ্চ পর্যায়ে” হবে। এছাড়া তিনি সতর্ক করে দেন, আলোচনার মাধ্যমে যদি কোনও চুক্তিতে পৌঁছানো না যায় তবে এটি “ইরানের জন্য খুব খারাপ দিন” হবে।
 
গত মাসে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব প্রকাশ্যে প্রত্যাখ্যান করার পর ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের সম্ভাবনা উত্থাপন করেছিলেন।

বিবিসি বলছে, সোমবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সাথে হোয়াইট হাউসের বৈঠকের পর ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে সম্ভাব্য এই আলোচনার কথা প্রকাশ করেন। মূলত নেতানিয়াহুও এর আগে ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখতে আক্রমণ করার সম্ভাবনা উত্থাপন করেছিলেন।

ওভাল অফিসে বক্তৃতাকালে ট্রাম্প বলেন: “শনিবার (ইরানের সাথে) আমাদের খুব বড় বৈঠক আছে এবং আমরা তাদের সাথে সরাসরি কাজ করছি... এবং সম্ভবত একটি চুক্তি হতে চলেছে, (তেমনটি হলে) এটি হবে দুর্দান্ত।”

ট্রাম্প বলেন, আলোচনা সফল না হলে ইরান “বড় বিপদে” পড়বে। তিনি আরও বলেন: “ইরানের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র থাকতে পারে না এবং যদি আলোচনা সফল না হয়, তবে আমি আসলে মনে করি সেটা ইরানের জন্য খুব খারাপ দিন হবে।”

মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট আলোচনার বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য দেননি। এছাড়া আলোচনা কতটা এগিয়েছে বা কোন কর্মকর্তারা এতে জড়িত সেসবও কিছু বলেননি।

অন্যদিকে ইরানের পক্ষ থেকেও বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন, ওয়াশিংটন এবং তেহরান আগামী ১২ এপ্রিল ওমানে বৈঠক করবে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে আব্বাস আরাকচি লিখেছেন: “এটি একটি সুযোগের মতোই একটি পরীক্ষা। বল আমেরিকার কোর্টে।”

এর আগে গত মার্চ মাসে ট্রাম্প সংযুক্ত আরব আমিরাতের একজন মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে ইরানের নেতার কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে পরমাণু ইস্যুতে আলোচনার জন্য তার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। ইরান সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল। যদিও ইরানের নেতৃত্ব তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে আমেরিকার সাথে সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে পরোক্ষ আলোচনা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল।
 
মূলত ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ক্ষমতা হ্রাস করা গত কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈদেশিক নীতি লক্ষ্য হিসেবে জারি রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার জন্য ইরানের সঙ্গে জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্লান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামে পরিচিত পরমাণু চুক্তিতে পৌঁছায় যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ছয় শক্তিধর দেশ। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ইরানের সঙ্গে চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী বাকি দেশগুলো হচ্ছে ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানি, চীন ও রাশিয়া।

কিন্তু ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ত্রুটিপূর্ণ’, ‘একপেশে’, ‘এর কোনো ভবিষ্যৎ নেই’ অভিযোগ তুলে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে যান। যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার পর চুক্তির শর্তগুলো মেনে চলার ব্যাপারে ইরানও উদাসীন হয়ে পড়ে।
এরপর তেহরানের ওপর আবারও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। মূলত ওয়াশিংটনকে চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর ঐতিহাসিক এই চুক্তিটি ভেঙে পড়ে। এমনকি চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ইরানকে অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু করতে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন ট্রাম্প।

তারপর থেকে ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের ক্ষেত্রে চুক্তির সীমা অতিক্রম করে উচ্চ স্তরের বিশুদ্ধতা মজুদ তৈরি করেছে, যা পশ্চিমা শক্তিধর দেশগুলো বেসামরিক জ্বালানি কর্মসূচির জন্য যতটা ন্যায্য বলে মনে করে তার চেয়ে অনেক বেশি এবং পারমাণবিক ওয়ারহেডের জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণের কাছাকাছি।

ঠিকানা/এসআর
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078