বিএনপি-ভারত আস্থাশীল সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ

প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২৫, ১৮:০৫ , অনলাইন ভার্সন
ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশাল পরিবর্তন হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করেছে, তারা প্রচণ্ড ভারতবিরোধী। প্রকাশ্যেই তাদের শীর্ষস্থানীয় নেতারা অন্যন্ত আক্রমণাত্মক ভাষায় ভারতের সমালোচনা করে আসছেন। সেই অন্তর্বর্তী সরকারই এখন ভারতের বিরাগ প্রশমনে, সম্পর্কোন্নয়নে নানাভাবে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে মধ্যস্থতা করছে। আংশিকভাবে সফলও হয়েছেন তারা। কূটনৈতিক মহল মনে করেন, পরম বিশ্বস্ত শেখ হাসিনার পতনের পরও ভারত বাংলাদেশে তার স্বার্থরক্ষায় বিশ্বস্ত সম্পর্ক রক্ষা করতে আগ্রহী। তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক শক্তির সঙ্গে আস্থাশীল, উন্নত সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে চায়। বিএনপি তাদের প্রথম অগ্রাধিকার।
শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক পরম মধুর ছিল। এরশাদ ও বেগম খালেদা জিয়ার সময়েও বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উন্নত না হলেও বৈরী ছিল না। তবে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক পরিচয়, নেপথ্যে থেকে কারা তাদের পরিচালনা করছে, কী তাদের আদর্শিক লক্ষ্য-উদ্দেশ্য প্রভৃতি ভারতকে চিন্তিতই নয়, বিচলিত রাখে। জামায়াতের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী ও তাদেরই রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ঘনিষ্ঠতা ভারত আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেনি। যে কারণে ভারত বাংলাদেশে বিএনপিকে বেছে নিয়েছে। বিএনপি ভারতবিরোধী দল হিসেবে গোড়ায় নিজেকে প্রতিষ্ঠা করলেও ক্রমে স্পষ্ট হয়েছে, জাতীয়তাবাদী, স্বীয় স্বার্থরক্ষাকারী মধ্যপন্থী হিসেবে তারা ভারতের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা পালনকারী দল।
বিএনপিতে ভারতের সঙ্গে আন্তরিক, আস্থাশীল সম্পর্ক রক্ষাকারী কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা রয়েছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরামর্শ অনুযায়ীই তারা ভারতের সঙ্গে উন্নত সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ব্যক্তিগত পর্যায়ে নয়, দলগতভাবেই এই সম্পর্ক গড়ার পরিকল্পিত প্রয়াস নেওয়া হয়। শেখ হাসিনার শাসনামলেই লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে ভারতীয় প্রতিনিধির একাধিকবার সাক্ষাৎ ও বৈঠক হয় বলে বিএনপি সূত্রেই জানা যায়। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও ব্যবসায়ী নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু এবং স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য মঈন খানের বাসায় ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনারসহ অপরাপর কূটনীতিকদের একাধিকবার বৈঠক হয়, মধ্যাহ্নভোজে আপ্যায়িত করা হয়। ভারতীয় হাইকমিশনারের নিমন্ত্রণে স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খানসহ বিএনপির আরও তিনজন নেতা অংশ নেন। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও ভারতীয় হাইকমিশনারের অত্যন্ত মধুর সম্পর্ক। বিএনপির মহাসচিব ভারতীয় কূটনীতিকদের একাধিকতার আপ্যায়িত করেছেন।
বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের অত্যন্ত বিশ্বস্ত বলে পরিচিত সালাহউদ্দিন আহমেদ। এই সম্পর্কের সুবাদে অপেক্ষাকৃত তরুণ এই নেতাকে স্বল্প সময়ের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য করা হয়। ২০১৫ সালের ১০ মার্চ ঢাকা থেকে নিখোঁজ হন সালাহউদ্দিন। ওই বছরের ১১ মে ভারতে অনুপ্রবেশের দায়ে সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করে শিলংয়ের পুলিশ। ২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা থেকে সালাহউদ্দিনকে খালাস দেন ভারতের একটি আদালত। সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষে দীর্ঘ ৯ বছর পর গত বছরের ১১ আগস্ট ভারত থেকে দেশে ফেরেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। ভারতে অবস্থানকালে তাকে সপরিবারে সেখানে প্রায় এক বছর বিশেষ ব্যবস্থায় অবস্থানের সুযোগও করে দেওয়া হয়। শারীরিক কারণে মির্জা ফখরুলের পক্ষে মহাসচিবের দায়িত্ব পালন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশে ফেরার কিছুদিন পরই সালাহউদ্দিনকে মহাসচিবের দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তাব ছিল। সে ক্ষেত্রে বিএনপি ভারতপন্থী বলে চিহ্নিত হবে এবং বৃহত্তর স্বার্থে দলকে মহল বিশেষ রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে প্রয়াসী হবে, এই আশঙ্কায়ই সালাহউদ্দিনকে আপাতত সরিয়ে রাখা হয়েছে। তবে রাজনৈতিক, কূটনৈতিক, সাংগঠনিক দায়িত্বে তাকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে রাখা হয়।
শেখ হাসিনার অভাবিত পতনের পর ভারত বাংলাদেশে তার স্বার্থ সংরক্ষণ, উন্নত সম্পর্ক অব্যাহত রাখতে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্কের বাঁধন সুদৃঢ় করতে সচেষ্ট হয়েছে। তারেক রহমানও দল ও দেশের স্বার্থে নিকটতম প্রতিবেশীর সঙ্গে আস্থাশীল উন্নত সম্পর্ক গড়ে তোলার নীতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন।
M M Shahin, Chairman Board of Editors, Thikana

Corporate Headquarter :

THIKANA : 7409 37th Ave suite 403

Jackson Heights, NY 11372

Phone : 718-472-0700/2428, 718-729-6000
Fax: + 1(866) 805-8806



Bangladesh Bureau : THIKANA : 70/B, Green Road, (Panthapath),
5th Floor, Dhaka- 1205, Bangladesh.
Mobile: 01711238078